রাঁধে সে দারুণ, কাজেও নিপুণ
পরিপাটি ঘরদোর
যা কিছু হারায়, গিন্নি রটায়-
কাজের বুয়াই চোর
সেদিন গিন্নি কিনিয়া আনিল
বহু দামি এক শাড়ি
শ্যালিকা এসেই সেটা পরে নিয়ে
চলে গেল তার বাড়ি
আরো নিয়ে গেল ক’জোড়া পাদুকা
গিন্নি যেগুলো পরে
দামি প্রসাধনী পার্সে ভরিল
যা যা তার মনে ধরে
পরদিন এক পার্টিতে যেতে
ড্রেসিং টেবিলে বসে
গিন্নি সহসা তেলে ও বেগুনে
জ্বলে ওঠে আক্রোসে-
বামহাতে ধরে চুলের মুঠি সে
ডানহাতে তারে চাবকায়-
‘ম্যাডাম, আমি তো চুরি করি নাই।’
পায়ে লুটায়ে সে মাফ চায়।
ফ্রিজে ছিল কিছু দামি চকোলেট
ফ্রুটকেকও ছিল বেশ
ছোটো ছেলে আর বন্ধুরা মিলে
সব খেয়ে করে শেষ
বড়ো ছেলে নিল মা’র ব্যাগ খুলে
হাজার টাকার নোট
বাকি যা ছিল তা মেয়ে নিয়ে নিল-
চারশত টাকা মোট
সাঁঝের বেলাতে বিরাট বাড়িতে
গিন্নির মহাকলরব-
বুয়া সব খেয়ে সাবাড় করেছে
বুয়াই করেছে চুরি সব।
যা কিছু ঘটুক, গিন্নি রটাবে
করেছে কাজের মেয়ে
এভাবে বুয়ার কাটছে জীবন
মারধোর-ঝাড়ি খেয়ে
গৃহিনী বোঝে না, বুয়ারও রয়েছে
সুখী জীবনের সাধ
গৃহিনী জানে না, বুয়ারাও জানে
অন্যায়ে প্রতিবাদ
দেয়ালে যেদিন পিঠ ঠেকে যাবে
ওরাও সেদিন রুখিয়া দাঁড়াবে
নিজের হাতেই শোধ দিয়ে দেবে
তামাম অত্যাচার
পালাতে চাইবে গৃহিনী, কিন্তু
পথ নেই পালাবার।
৩১ আগস্ট ২০১৮
*ঋণ, পুরাতন ভৃত্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৩৯