somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গেস্টাপো কি

২৫ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(গেস্টাপো কি? আমিও ভাল করে জানতাম না। শুধু ধারনা করতাম, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে জার্মান দেশের একটি আতংক সৃষ্টি কারী একটি বাহিনী। তবে আজকে এই গেস্টাপো সন্মন্ধে লিখতে গিয়ে আমারও অনেক জানা হোল এবং পাঠকদের তা উপহার দেবার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।)

"গেস্টাপো" ১৯৩৩ সালে ছিল জার্মানীর গুপ্ত পুলিশ। সাধারণত এস এস নেতা হাইনরিশ হিমলারকে যুক্ত করা হলেও, এটি আসলে এপ্রিল ১৯৩৩ সালে সালে হারমান গোরিং দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

জার্মানি এর চ্যান্সেলর হওয়ার পর, অ্যাডল্ফ হিটলার গোরিং কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। যার অধীন ছিল রাজধানী বার্লিন, এবং বড় শিল্প কেন্দ্র সহ দেশের দুই-তৃতীয়াংশ, নিয়ন্ত্রিত হোত এবং যার মাঝে প্রুশিয়া, জার্মানি এর বৃহত্তম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। গোরিং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হিসাবে, পুলিশের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।

তিনি সর্বপ্রথম যে জিনিসটি করেছিলেন, তা হোল নিয়মিত ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ কর্তৃক রাস্তায় নাতসি বাদামী পোষাক পরিহিত বাহিনীকে হস্তক্ষেপ কে নিষিদ্ধ করেছিলেন।এতে করে নির্দোষ জার্মান নাগরিকদের তারা (বাদামী পোষাক ওয়ালারা) তাদের নতুন শক্তি দিয়ে মাতাল অবস্থায় জনগনকে হয়রাানি, মারধোর, অপদস্থ করা শুরু করেছিলেন। নিয়মিত পুলিশের শিথিল নিয়ন্ত্রনে এই বাদামী পোষাক ওয়ালারা দোকান লুটপাট সহ ইহুদীদের আতঙ্কের মধ্যে রাখতেন। কেউ যদি ভুল জায়গায় তাদের হাতে পরতো, তাহলে আর রক্ষা ছিল না।
গোপন অস্ত্র বহন করছে এই অজুহাতে, জার্মান নাগরিকদের প্রায়ই সাধারণ পোশাকধারী এবং ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ দ্বারা সার্চ করা হোত।

. নীচে: নং 8 Prinz-আলব্রেশট-Strasse এ অবস্থিত বার্লিনে গুপ্ত পুলিশ সদর, - অনওয়ার্ড 1933 থেকে একটি ভয়ঙ্কর ঠিকানা



নীচে: গুপ্ত পুলিশ দপ্তরে ভিতরে প্রধান হল - একবার একটি আর্ট মিউজিয়ামের ছিল একটি ভবন.



নীচে:গোরিং এপ্রিল 1933 সালে ক্ষমতার পরিবর্তন (ডান) হিমলারঃ গুপ্ত পুলিশ নিয়ন্ত্রণ



নীচে: Reinhard Heydrich হার্ড 1934 সালে কর্মক্ষেত্রে তিনি নাৎসি পুলিশী রাষ্ট্রে পিছনে সুবিশাল প্রতিষ্ঠানের তৈরি করার জন্য প্রতিভা প্রদর্শন।



নীচে: সাংবাদিক কার্ল ভন Ossietzky Heydrich পুলিশ যন্ত্রপাতি বাণিজ্য নিজেকে খুঁজে বের করে। এডিটর-ইন-চিফ মরা Weltbühne (ফোটোস পর্যায়) সংবাদপত্রের হিসাবে Ossietzky সমরবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন. রাইখস্টাগ অগ্নিকাণ্ডের পর দিন তাকে গ্রেপ্তার করা, তিনি ১৯৩৫ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির সত্ত্বেও পাঁচ বছরের জন্য গুপ্ত পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে নেয়। দুর্বল স্বাস্থ্য থাকা সত্যেও, তিনি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের কঠোর পরিচর্যায় থাকতেন এবং পরিশেষে মে ১৯৩৮ সালে যক্ষ্মায় তার মৃত্যু হয়।



এর পরে, গোরিং রাজনৈতিকভাবে অবিশ্বস্ত পুলিশ বার্লিন পুলিশ বিভাগ গোয়েন্দাদের ছাটাই করেন এবং এদের স্থলে বিশেষ পুলিশ সহায়িকা হিসেবে (Hilfspolizei) ৫০,০০০ ঝটিকা ট্রুপার শপথ নিয়ে নিয়োগ দেন। এই ঝটিকা ট্রুপারদের গ্রেফতারের বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয় এবং তারা তা ব্যবহারে বেশ উপযোগী ছিলেন। কারাগারগুলো দ্রুত "প্রতিরক্ষামূলক হেফাজতে" বিবেচনায় নেয়া বন্দীদের আগমনে উপচে পরতে থাকল। বন্দীদের স্থান সংকুলানের জন্যই সৃষ্টি হোল বাইরের কারাগার ক্যাম্প বা "কনসেনট্রেশন ক্যাম্প"।

ইউনিফর্ম পরিহিত বিভাগকে "সাইজ” বা পুরো অকেজো করনের পরে গোরিং পরবর্তী সাধারণ পোশাকধারী পুলিশ দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন।

এপ্রিল ২৬, ১৯৩৩ সালের, একটি ডিক্রি জারি করেন যা গোপন পুলিশ অফিস (Geheime Polizei AMT) তৈরী করে এবং দ্রুত জিপিএ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। কিন্তু এই এই জিপিএ রাশিয়ার রাজনৈতিক পুলিশ দ্বারা ব্যবহৃত নাম জিপিইউ এর খুব অনুরূপ ছিল। সুতরাং, নাম পরিবর্তন করে গোপন রাজ্য পুলিশ (Geheime Staats Polizei) পরিবর্তন করা হোল। এটাই হোল গেস্টাপো। প্রকৃত শব্দটি 'গুপ্ত পুলিশ' কল্পনানুসারে একটি রাবার স্ট্যাম্প উপর মাপসই করার জন্য ডাক বিভাগ সংক্ষিপ্ত করনে সাত অক্ষরের "গেস্টাপো" সীল টি তৈরী করেন, যা এখন ডাক বিভাগের অজান্তে ই কুখ্যাত ইতিহাস।

গোরিং অবিলম্বে তার নিজের ব্যক্তিগত ক্ষমতা উন্নত বার্লিন এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় হিটলারের রাজনৈতিক বিরোধীদের নীরবতা অর্জন করতে গুপ্ত পুলিশ ব্যবহার করেন এবং তিনি আরও আনন্দিত হলেন এই জেনে যে, পুরানো প্রুশিয়ান রাজ্য পুলিশ শহরের সকল নামি দামী জনগনের একটি করে নথি সংরক্ষন করতেন যাতে শীর্ষ নাৎসি ব্যক্তিগত জীবন, অনেক গোপন ফাইল সংরক্ষনেরও ব্যবস্থা ছিল।

গোরিং প্রথম গুপ্ত পুলিশ প্রধান হিসেবে রুডলফ ডিয়েল্স কে নিযুক্ত করেন।
ডিয়েল্স একটি পার্টি সদস্য না হলেও তিনি ১৯৩০ সাল থেকে প্রুশিয়ান মন্ত্রণালয়ের একটি সদস্য ছিলেন এবং পুলিশ একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গোরিং তার থেকে একটি রাজনৈতিক পুলিশ বাহিনী কাজ কিভাবে কাজ করে তার পূর্ণ জ্ঞান আহরনের সুযোগ গ্রহণ করেন।

তিনি ডিয়েলসকে বজায় রেখে তাকে নাৎসি নেতাদের গোপন ফাইল এর তথ্য প্রসারিত করতে উৎসাহিত করা শুরু করলেন। ধূর্ত এবং উচ্চাভিলাষী গোরিং নাৎসি পার্টি মধ্যে তার নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে এই তথ্য ব্যবহার করতে থাকেন।

আরেকটি উচ্চাভিলাষী নাতসি, এস এস- Reichsführer হাইনরিশ হিমলার, শীঘ্রই গুপ্ত পুলিশের কর্তৃত্ব গ্রহনে নজর দিতে থাকেন। এতে করে হিমলার এবং গোরিং মধ্যে একটি উঁচু স্তরে হিংস্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। গুপ্ত পুলিশ কে চালাবে এবং কে হবে হিটলারের প্রিয়ভাজন, এই প্রতিযোগিতায় ২০ শে এপ্রিল ১৯৩৪ সালে, গোরিং হিমলারকে গুপ্ত পুলিশের দায়িত্ব দিতে বাধ্য হন এবং দুই দিন পরে গুপ্ত পুলিশ প্রধান হিসেবে হিমালার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হিমলারের সহযোগী Reinhard Heydrich ও কিছু দায়িত্ব নিয়ে নেন।

সদা উচ্চাভিলাষী গোরিং একজন পুলিশ এর চেয়ে অনেক বড় কিছুর দিকে নজর দিচ্ছিলেন। মর্যাদাপূর্ণ সাবেক প্রথম বিশ্বযুদ্ধের উড়ন্ত টেক্কা এবং Le Mérite পদক প্রাপ্ত সামরিক নেতা হিসেবে নিজেকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি দক্ষ শক্তিশালি জার্মান বিমান বাহিনীর চার্জ নিতে চেয়েছিলেন। বিশাল এক সামরিক তৈরী করনের হিটলারের পরিকল্পনা স্পষ্ট হয়ে ওঠায়, পুলিশ বিষয়গুলি এবং গুপ্ত পুলিশের প্রতি তাঁর আগ্রহ হ্রাস পায়।

কয়েক বছরের মধ্যে, হিমলার এস এস নেতা হিসেবে তার কর্তব্য ছাড়াও জার্মান পুলিশ প্রধান নিযুক্ত হন। Heydrich, হিমলাারের একজন চতুর ও দক্ষ ডেপুটি হিসেবে থেকে তা প্রমাণিত করলেন। তার ইন্টেলিজেন্স সিস্টেমের মাধ্যমে নাতসি পার্টির সকলের নজর রাখা শুরু করেন, গুপ্ত পুলিশের নজরদারী থেকে পার্টির উর্ধতন কাউকে বাদ দিলেন না ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ সালের নাৎসি রাইখস্টাগ 'গুপ্ত পুলিশ আইন' পাস করে। যার একটি অনুচ্ছেদে এ লেখা ছিল যে "গেস্টাপো বিষয়াবলি প্রশাসনিক আদালত দ্বারা পর্যালোচনার জন্য উন্মুক্ত করা যাবে না"। এই অনুচ্ছেদের কারনে গুপ্ত পুলিশ গেস্টাপো আইনের ঊর্ধ্বে চলে যায় এবং কোন আঈনি ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে করা যেত না।

প্রকৃতপক্ষে, গুপ্ত পুলিশ নিজেই প্রতি একটি আইন হয়ে ওঠে। যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদ এবং কোন আঈন ই প্রক্রিয়া ছাড়া নাগরিককে কারারুদ্ধ বা সারসংক্ষেপ সঞ্চালনের জন্য বন্দিশিবিরে গেস্টাপো পাঠাতে পারতেন এবং ক্রমাগত পাঠাতেন।

হিটলারের জার্মানিতে বিচার ছিল অন্য ধরনের। বিচার হোত বিচারকের মর্জির ওপর। ১৯৩৮ সালে হিটলার দ্বারা ঘোষিত হিসাবে আইনি নীতি ছিল: "সমস্ত প্রচলিত আইন এবং প্রিসিডেন্স Fuhrer এর ইচ্ছার ওপরে নির্ভর করবে।"

তবুও আশ্চর্যজনক এই যে, গুপ্ত পুলিশ আসলে একটি খুব বড় প্রতিষ্ঠানের ছিল না। উঁচু পর্যায়ের অফিস কর্মীবৃন্দ এবং সাধারণ পোশাকধারী এজেন্ট সহ মাত্র ৪০,০০০ ব্যক্তি নিযুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিটি গুপ্ত পুলিশ, এজেন্ট, চর এবং সংবাদদাতার একটি বড় অন্তর্জাল হিসেবে পরিচালিত হোত। সাধারন নাগরিক কেউই জাতেন না কে ছিল চর, কে ছিল সংবাদদাতা।
এই গেস্টাপো চর হতে পারতেন আপনার ভৃত্য, আপনার বাড়ির সামনের বৃদ্ধ মহিলাটি, আপনার শান্ত সহকর্মীটি, এমনকি স্কুলের ছাত্রটিও। এর ফলে অদৃশ্য ভয় ও আশংকা নাগরিক জীবনকে শাষন করা শুরু করে। বেশির ভাগ লোকই আত্ম-সেন্সরশিপ গঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা শুরু করে এবং তারা সাধারনতঃ তাদের মুখ বন্ধ রাখতেই সমীচিন মনে করতেন।

যদি কেউ অসাবধানতা বশতঃ নাতসি পার্টির বিরুদ্ধে কিছু বলে বসতেন বা কোন সামান্য ঠাট্টা ও করতেন, তা হলে ঐ লোক বা দলের বাড়িতে রাতে চলে আসত এই গেস্টাপো বাহিনীর লোকজন। অথবা রাস্তা দিয়ে ঐ লোক হেঁটে যাবার সময় কাধে টোকা দিয়ে এই বাহিনীর কর্মী প্রতিনিধি ঐ লোককে নিয়ে যেত তাদের বার্লিন হেড কোয়ার্টারে। যেখান থেকে হেটে যাওয়া লোকজন যন্ত্রনার চিৎকার শুনতে পেতেন বলে শেনা যায়। এই কারনে স্থানটি কুখ্যাত হয়ে ওঠে।

গুপ্ত পুলিশের নির্যাতন-জিজ্ঞাসাবাদের পদ্ধতি মধ্যে ছিলঃ
১। বরফের মতো ঠাণ্ডা পানি ভরা বাথটাবে বন্দীকে চুবানো
২। এই প্রথা পুনরাবৃত্তি করা
৩। হাত, পা, কান এবং যৌনাঙ্গের তারের সংযোজনের দ্বারা ইলেকট্রিক শক দেয়া
৪। একটি বিশেষ ভাইসে পুরুষের অণ্ডকোষ পিষে ফেলা
৫। পিছনে বন্দীর দুই হাতের কব্জি বেঁধে সুরক্ষিতভাবে(যাতে বন্দী নিজে বাঁধন খুলতে না পার) ঝুলিয়ে রাখা এবং
৬। রাবারের লাঠি এবং গাভীর চাীমড়ার চাবুক দিয়ে পেটানো
৭। ম্যাচ বা একটি তাতাল দিয়ে শরীরে ছ্যাক দেয়া বা পোড়ানো।

১৯৩০ সালের শেষ ভগে এস এস প্রতিষ্ঠানের দ্রুত প্রসারিত করতে শুরু করে। অতি উচ্চাভিলাষী Heydrich অপরিমেয় ক্ষমতা ও দায়িত্ব লাভ করেন। তার প্রধান অর্জন ছিল নাতসি পুলিশ রাষ্ট্রের পুনর্গঠন এবং সামগ্রিক আমলাতন্ত্র নিজের সুবিধায় প্রক্রিয়াকরন পদ্ধতি বাস্তবায়ন। সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সালে, মাত্র যুদ্ধের প্রাদুর্ভাব পর, তিনি রাইখ প্রধান নিরাপত্তা অফিস (RSHA) তৈরি করেন। এই নতুন সংগঠনের সাতটি প্রধান শাখা ছিল। গেস্টাপো তথা গুপ্ত পুলিশ চতুর্থ শাখা হিসাবে মনোনীত হয়েছিল। আর এর প্রধান এখন হয়েছিলেন হাইনরিশ মুলার। এখন (গুপ্ত পুলিশ মুলার হিসাবে ডাক নাম করন হয়েছিল) নেতৃত্বে ছিল। ১৯৩১ সালে, মিউনিখ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে, মুলার সফলভাবে হিটলারের ভাইঝি Geli Raubal আত্মহত্যার স্ক্যনডাল টি ধামাচাপা দিতে পেরেছিলেন।. এভাবে তিনি একটি একজন খুব নির্ভরযোগ্য মানুষ হতে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন।

গুপ্ত পুলিশের বিভাগ বি৪ একচেটিয়াভাবে "ইহুদি প্রশ্ন" মোকাবিলা করতেন এবং বিষয়টি অ্যাডল্ফ আইখম্যন স্থায়ী নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এই কর্মঠ এবং দক্ষ সংগঠনটি ইহুদী প্রশ্নের চূড়ান্ত সমাধান সময় পর্যন্ত দখলকৃত পোল্যান্ডে অবস্থিত নাতসি মৃত্যু শিবিরগুলিতে ইউরোপের সব স্থান থেকে সঠিক সময়ে ট্রেন গুলো (কনসান্ট্রেশাান ক্যম্পে প্রতিরক্ষামূলক হেফাজতে নেবার লোকজন, ইহুদী চালান দেবার জন্য )চালু রাখতেন।

গুপ্ত পুলিশ ইউরোপ বিজয়ের সময় প্রত্যেক দেশের মধ্যে হিটলারের সেনাদলকে অনুসরণ করত। প্রতিবেশী বিরুদ্ধে প্রতিবেশী বিবাদ লাগিয়ে গুপ্ত পুলিশের এজেন্টগন আতঙ্কের পরিবেশ সফলভাবে বজায় রাখতেন, যা জার্মানিতে ভালভাবে কাজ করেছে। প্রতিটি দখলকৃত দেশে সন্ত্রাস প্রক্রিয়া একই ধরনের ছিল এবংং প্রতিষ্ঠিত ছিল।

১৯৪২ সালে, গুপ্ত পুলিশ হিটলারের নাইট এবং কুয়াশা ডিকৃর মাধ্যমে বিষয় গুলো আরও একটি ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। কুয়াশাচ্ছন্ন রাতের আঁধারে সন্দেহভাজন বিরোধী নাৎসি ট্রেস ছাড়া বিলুপ্ত করে দেয়া হোত। হিমলার বলতেন "পরিবারকে, জনগনকে এবং অপরাধীর ভাগ্য না জানিয়ে অনিশ্চিত শংকায় রেখে দিন"। এই ধরনের গুম এর শিকার হয়েছিলেন ফ্রান্স, বেলজিয়াম এবং হল্যান্ড এর অধিকৃত অঞ্চলের নাগরিকগন। তাদেরকে সাধারণত মাঝ রাতে গ্রেফতার করা হোত, নির্যাতন-জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দূরের জেলখানায় দ্রুত নিয়ে যাওয়া হোত এবং এই নির্যাতনের পরও যদি বেঁচে থাকলে শেষাব্দি জার্মানির কোন এক বন্দিশিবিরে তাদের স্থান হোত।

হিটলারের শাসন খুব শুরু থেকেই একটি রাজনৈতিক বন্দিশিবির ন্যয় চলছিল, গ্রেফতার এবং অনির্দিষ্ট কারাবাস সদা উপস্থিত হুমকি তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা খর্ব করত জার্মান মানুষকে অপহৃত শংকায় বাধিত করে রাখা হোত। এই " সদা অনুগত" মানসিকতা থেকে জার্মান নাগরিকরা নিজেদেরকে উত্তরন ঘটাতে সক্ষম হন নি।

এমনকি এই " সদা অনুগত " মানসিকতা ও যথেষ্ট ছিল না তদানিন্তন জারমান সরকারের জন্য। নাৎসি মানুষের চিন্তা ধারার পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন সরকার। তাই, তারা তাদের ঘৃণা রাজনীতি দিয়ে ঘৃণিত শত্রুদের নিবারন করার পদ্ধতি জনগনকে শেখানোর চেষ্ট করেন। সরকার "unGerman" বা জার্মান নয় এমন ধারনা ও চিন্তা - চেতনাও দূর করার জন্য একটা ক্যাম্পেইনের শুরু করেন। মে ১৯৩৩ সালে বই পোড়ানোর অভিযান দিয়ে জার্মান জনগনের চিন্তা এবং সংস্কৃতি একমুখি করার প্রচেষ্টা চলছিল।

বাংলাদেশে কি হচ্ছে?
সূত্রঃ গেস্টাপোর ইতিহাস কাল
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:০২
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×