somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ ইহা কেবলই একখানা মুরগীর গল্প!:|:|:|:|:|

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুরগীখানা ধরিবার জন্য দুইপক্ষই দিশেহারা হইয়া উঠিয়াছে।
একপক্ষ বলিল-এই মুরগীর যোগ্য দাবিদার আমরাই।ইহাকে আমরা পালিয়া পুষিয়া বড় করিয়াছি।প্রাণ যাইবে তবু উহাকে ছাড়িব না।
আরেক পক্ষ বলিলঃছাড়িবেনা মানে?ইহাতে আমারও দাবি আছে। মুরগী আটকাইয়া রাখিলে হরতাল দিব।তখন মজা বুঝিবে।
প্রথম পক্ষ তখন বলিলঃ যাহা খুশি কর।আমি মুরগী ছাড়িব না।

ইহাদের ঝগড়ার মধ্যে বাঁ হাত ঢুকাইল রাঙ্গা বুড়া ।রাঙ্গা বুড়া কহিলঃ আমায় যদি মুরগীর সিনার গোস্ত না দেয়া হয় আমি সুইসাইড খাইব ।চাইরখানা গুল্লি রেডি রাখিয়াছি।সিনার গোস্ত দিতে দেরী করিলেই আমার মস্তকে গুলি করিয়া সুইসাইড খাইয়া ফেলিব।
তাহাদের তিনপক্ষের ভিতর মুরগী-কাইজ্যা যখন তীব্র হইতে তীব্রতর হইয়া উঠিল তখন দেশের লোকজনের পেটে মুরগীর গোস্ত তো দূরের কথা,ভাতই জুটিতেছে না।ভাতের অভাবে দেশের সাধারণ মানুষ মরিতে শুরু করিয়াছে।তাহাতে ঐ দুইপক্ষের কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই।সকলেই মুরগীর অধিকার লইতে ব্যস্ত।
তাহাদের এই অবস্থা দেখিয়া গায়ে মানে না আপনি মোড়ল আসিয়া উপস্থিত হইল।মোরলের পক্ষে তাহার মহিলা মন্ত্রী আসিয়া চিৎকার করিয়া বলিলঃওহে শিশুরা তোমরা শান্ত হও। নিজেরা শান্ত হইতে না পারিলে আমাকে বল।আমি তোমাদের শান্ত করিয়া দেই।বিনিময়ে আমাকে কেবল মুরগীর এক খানা রান দিলেই হইবে।
তাহাতেও ঝগড়া থামিবার কোনো লক্ষন নাই।এমতাবস্থায় ম্লেচ্ছদেশীয় বড় লাট হাজির হইল।

বড় লাট আসিয়া বলিলেন : ওহে শিশুগণ তোমরা কি লইয়া এত ঝগড়া করিতেছ?

দুইপক্ষ মুরগী খানা দেখাইয়া সমস্বরে বলিলঃহুজুর এই মুরগী খানাকে লইয়া আমাদের বিবাদ হইতেছে।
বড় লাট খুব ভাল করিয়া মুরগী খানা দেখিয়া আতকাইয়া উঠিয়া বলিলেনঃ ওহে তোমরা ইহা কি করিয়াছো?
দুই পক্ষ টাশকি খাইয়া কহিল: কেন হুজুর কি হইয়াছে?
ম্লেচ্ছদেশীয় বড় লাট কাঁদো কাঁদো হইয়া কহিলেন: ইহা তো মুরগী নহে।
দুই পক্ষ আগের থেকেও বেশী টাশকি খাইয়া কহিলঃ তাহা হইলে ইহা কি হুজুর?
বড় লাট কহিলেন : ওহে মূর্খের দল,ইহা তো আমার সেই টার্কিখানা,যাহা আমি থ্যাংক্সগিভিং-এর সময় ছাড়িয়া দিয়াছিলাম। আহারে ইহাকে না খাওয়াইয়া তোমরা এক্কেবারে ক্ষীণস্বাস্থ্য করিয়া দিয়াছ।(ইহা বলিয়াই বড় লাট মুরগী খানাকে বুকে জড়াইয়া উম্মা উম্মা করিয়া চুম্বন করিতে লাগিলেন )
দুইপক্ষ দেখিল অবস্থা বেগতিক। বড় লাট কিনা আবার মুরগী খানা লইয়া না যায়।তাই তাহারা ইনাইয়া বিনাইয়া কহিলঃ হুজুর,উহাতো আপনি ছাড়িয়াই দিয়াছিলেন।ইহাতে আর আপনার কাজ কি? দিন আমাদিগকে।উহাকে খাওয়াইয়া দাওয়াইয়া সুস্থ্য করিয়া তুলি ।
বড় লাট বলিলেন: হ্যা তোমরা ভুল বলনাই।উহা দিয়া আমার কোনো কাজ নাই।তবে ইদানীং কানে একটু খৈল হইয়াছে।উহার পালকগুলা হইলে বেশ কাজ হইত।পালক দিয়া গুতাইয়া গুতাইয়া খৈল পরিষ্কার করিতে পারিতাম আরকি !
দুইপক্ষ বড় লাটের কথা শুনিয়া ভাবিলঃ মুরগীর পালক দিয়া তো তাহাদের কোনো কাজ নাই।তাহাদের লাগিবে সলিড গোস্ত।পালকগুলা দিয়া বড় লাটকে বিদায় করাই ভাল ।
তাহারা নিজেরা জোরে জোরে টানিয়া টানিয়ে পালকগুলা ছিড়িয়া উহা বড় লাটকে দিয়া দিল।এই দেখিয়া গায়েমানে না আপনি মোড়ল আসিয়া চেতিয়া চেতিয়া কহিলেন: ওহে তোমরা আমায় কেন খালি হাতে ফিরাইবে? রান না দেও,আমায় অন্তত মুরগীর এক খানা ঠ্যাং দেও।
দুইপক্ষ ভাবিলঃখালি তো একখানা ঠ্যাং-ই চাহিয়াছে।দিয়া দেওয়াই ভাল।বড় লাট আর গায়ে মানে না আপনি মোড়লকে তাহারা পালকগুলি আর ঠ্যাং খানা দিয়া বিদায় করিয়া দিল।

অতঃপর সব কাজ শেষে তাহারা অবাক হইয়া দেখিল -পালক বিহীল পঙ্গু মুরগীখানা টলটল পায়ে কিছুদূর হাঁটিয়া ধুপ করিয়া পরিয়া গেল।উহা আর চলিতে সমর্থ নয়।এখন ওখানা প্রাণহীন জড়বস্তুতে পরিণত হইয়াছে।

( এটা নিতান্তই লেখকের অনুর্বর মস্তিষ্ক থেকে বের হওয়া গল্প মাত্র।বাস্তবেরসাথে কেউ যদি মিল খুঁজে পান,সেটার জন্য লেখক দায়ী নয়)
(প্রিয় অপর্ণা আপুর প্রতি কৃতজ্ঞতা বানান ঠিক করে দেয়ার জন্য)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫৩
৬৬টি মন্তব্য ৬৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×