somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসময়ে সময়ের কথা

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু কথা বলতেই হবে। জীবন-মৃত্যুর ক্ষণে আর না বলে থাকা যাচ্ছে না। করোনাকালীন সময়ে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে লিখবো না, এমনটা ভেবেছিলাম; এমনিতে অনেকদিন লিখা হয় না। কিন্তু না লিখে পারা যাচ্ছে না। অসময়ে সময় নিয়ে কেউ পড়বে কিনা তাও ভাবনার বিষয়। পরিস্থিতি ভালো না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যা জানান দিচ্ছে তা আর নিতে পারছি না।

এবার আসল কথায় আসি, প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন একজন আপাদমস্তক স্টাইললিস্ট ভদ্রলোক। সেই ভদ্রলোকের নাম ছিলো সাহাফ। আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময়ে তিনি জমিয়ে রাখতেন পুরো দুনিয়াকে। তার ব্রিফিং শুনবার জন্য মানুষ আগ্রহ নিয়ে শুনতো, বিভিন্ন দেশ ভাষান্তর করে পুরো বক্তব্য প্রচার করতো। আমাদের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিন্তু সেই মানের জাঁদরেল নেতা নন, এটা সত্য তিনি নেতা। আমাদের জনপ্রতিনিধি, একটি মহা গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন।

চিন্তা করেছিলাম স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কিছু বলবো না, যেভাবে চালাচ্ছে চালাক; চলতে থাকুক। কিন্তু আর না, অদক্ষতার একটা সীমা থাকে। তিনি পারছেন না। সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে চরম ভাবে, তার কারণে সরকার বিপদে পড়ছে কঠিনতম সময়ে। দীর্ঘকালীন সময়েও জাতিকে আশার বাণী শুনাতে পারেননি তিনি, হুট করে আসেন প্রেস ব্রিফিং করে চলে যান; নির্দেশনা দিতে পারেন না। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাব দেন তো আবার দেন না!

মিডিয়ায় তাকে নিয়ে সমালোচনা ও লিখালিখি হলে ব্রিফিং কমিয়ে দেন, এখন আর তাকে তেমন একটা দেখা যায় না। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা এখন তার কাজটি করে দিচ্ছেন, একজন মন্ত্রী ক্যামেরার সামনে আসবেন,দেখে দেখে পড়বেন এটা মন্ত্রী হিসেবে মানায় না। স্বাস্থ্য বিভাগের ব্রিফিং নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি।

দেশে দেশে যুদ্ধ এমন পরিস্থিতি এখন নয়, এই পরিস্থিতি বড্ড করুণ ও অসহায়ের; কিচ্ছু করার নেই। আশার আলো জাগাতে পারছে না স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা,একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি পুরো দুনিয়া; সবাই স্বপ্ন দেখছে নতুন ভোরের। কে জানে কবে আসবে সে ভোর, দেখা দিবে চিকচিকে নতুন সুন্দর পৃথিবীর;কেটে যাবে সকল চিন্তার ভাজ।

একটা সত্য কথা কি তিনি ভালো বলতে পারেন না, তবে জাতিকে বুঝাতে চেষ্টা করেন সাধ্যমতো। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন মেধাবী অবশ্যই। মাঝে মাঝে বলতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলেন। লড়াইয়ে সব সময় দরকার দক্ষ সৈনিক আর কমান্ডার। যুদ্ধ হবে,আবার সাধারণ মানুষকে আস্থায় রাখতে হবে। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের যুদ্ধ। কঠিন যুদ্ধের সেনাপতিরা হচ্ছেন-চিকিৎসক, নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মী।

ডিসেম্বরে চীনের উহানে দেখা দিলো এই করোনার প্রাদুর্ভাব, আমাদের হুঁশিয়ার করা হলো সতর্ক ও প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য। বিষয়টি গোপন রাখা হলো, মার্চের মাঝামাঝিতে জানানো হলো;তখন সব শেষ! বলা হলো চিন্তার কারণ নেই, আমাদের ব্যপক প্রস্তুতি আছে। আমরা তা প্রতিরোধ করবো,কিন্তু বাস্তবে কী পেলাম?
স্থ্য খাতের ঘাটে ঘাটে এখনো অনেক সিন্ডিকেট। যারা পত্র পত্রিকা সামান্য পড়ার অভ্যাস আছে তারা জানেন। গত দেড় মাসে সঙ্কট,সমস্যা,অভাব,নাই, আসবে,আসছে ইত্যাদি নানা আশ্বাসে অতিবাহিত হয়েছে। আর কতো? এর শেষ কই?
আমার এই কথা সরকারের সমালোচনা নয় শুধু এটাও সত্য যে, আলোচনা সফলভাবে কাজ করে কর্মের ক্ষেত্রে। একটা কথা কি,সত্যি মানুষ দক্ষতা দেখতে চায়। দরকার ছিল সিনিয়র ডাক্তার, সাবেক আমলা, মন্ত্রী, সাবেক সরকারের উপদেষ্টাসহ সবাইকে নিয়ে কাজ করা।

পরামর্শ ভিত্তিক কাজ করলে এতো সংকট তৈরি হতো না। স্বাস্থ্যকর্মীদের চোখে জল থাকতো না। চিকিৎসক আর তাদের অনেকে হাসপাতাল ছেড়ে যেতো না। কাজ করতে সাংগঠনিক দক্ষতা লাগে।
এই দুর্যোগের শুরু থেকেই কোনো উদ্যোগ মানুষকে আশ্বস্ত করতে পারেনি। এই ব্যর্থতা আসলে কার? কোনো এক দেশের মন্ত্রী আত্মহত্যা করেছে এমন পরিস্থিতি দেখে! অনেক মন্ত্রী কেঁদেছে সাহায্য চেয়েছে আকাশের মালিকের কাছে, আর আমরা?

বেসরকারি হাসপাতালের মালিকদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক একজন প্রতিমন্ত্রী। তার সঙ্গেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সমন্বয় নেই। তাহলে মন্ত্রী করছেনটা কী? পর্যাপ্ত ভেনটিলেশন নেই,অবস্থা আরও বেহাল। কোনো সুসংবাদ নেই; সারা দেশ লকডাউন।
বিশ্ব আজ তছনছ। মসজিদের দরজা প্রায় বন্ধ! আজান হয়, নামাজ হয় সীমিত পরিসরে। আমরা আসলেই বড় অসহায়; আল্লাহ তো বলে দিয়েছেন মানুষকে আমি সৃষ্টি করেছি অত্যান্ত দুর্বল করে।

এ সময়টা নিয়ে রাজনীতি কেন হবে? সময়টা মানুষের জন্য কাজ করার। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনার র‍্যাপিড কিট নিয়ে যা হয়ে গেলো এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক খেলা ছাড়া আর কিছু না। দেশের অর্জনকে রাজনৈতিক ভাবে মেরে ফেলার চিন্তা!
সুন্দর আগামীর জন্য অহমিকা ছাড়ুন। রাজনৈতিক বিতর্ক থেকে দূরে থাকুন। মনে রাখুন, একবার আক্রান্ত হলে কেউ পাশে আসবে না।
মানুষ না থাকলে রাষ্ট্র, সরকার, ক্ষমতা সবকিছুই মূল্যহীন। কানাকড়িও দাম নেই। চারদিকে সংকটের শেষ নেই। ত্রাণের গাড়ি লুটের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল! এ নিয়ে নিউজও হয়েছে।

ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ। গার্মেন্টকর্মীরা রাজপথে চাকরি ও বেতনের দাবি নিয়ে। এ পরিস্থিতি কীভাবে আমরা মোকাবিলা করবো?
চাউল চোর ধরছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এমপিকে কেন ছাড়াতে আদালতে যেতে হবে? নষ্ট রাজনীতির পাপের ফসল চাউল চুরি। গন্তব্য আমাদের আর কতো ভয়াবহ চিত্র দেখাবে?

যুব মহিলা লীগে পতিতার সর্দারনী ও জেলা কমিটির দায়িত্ব পায়! কী করে পায়? সবাই বোঝে, সবাই জানে। এক দিনে কোনো কিছু হয়নি।

তিল তিল পাপের বিশাল সাগর তৈরি হয়েছে। সেই সাগরে আছে ভয়ঙ্কর সব কাহিনী।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৪৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×