অনেকদিন পর বৃষ্টিতে হাঁটার ইচ্ছে হলো। ছাতা মাথায় দিয়ে পাঁচ মিনিট হেঁটে এলাম। ভোরের বৃষ্টির পানি যেন বরফ গলা জল। পায়ে লাগতেই হিড়হিড়িয়ে কেঁপে উঠলাম। ঠান্ডা বাতাস চামড়া ভেদ করে হাঁড়ে গিয়ে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ মাথায় ভাবনার উদয় হলো। দুর্ভাবনা বলা চলে। ত্রিশের কোঠায় পৌঁছানোর আগেই কি বুড়ো হতে চললাম নাকি! ঠান্ডা এত অসহ্য মনে হচ্ছে কেন! দুর্ভাবনায় অনেকের খাওয়া রোচে না মুখে। আমি কিন্তু আলু ভাজি আর ডিমের অমলেট দিয়ে গরম গরম পাঁচ খানা রুটি সাবাড় করে ফেললাম। খাওয়া শেষে নদীর পাশে দাঁড়ালাম। নদীর বুকে সাপের ফণার মত ঢেউয়েরা মাথা তুলছে।
ডাইনিংয়ের পাশে একটা কাঁঠাল গাছ আছে। কান্ডে কয়েকটা কাঁঠাল ধরেছে। ড্যামা ডুমা সাইজ। ঠিক কাঁঠাল বলে মনে হয় না। নিচের দিকে ডালে ছোট্ট একটা পাখি বসা। প্রথমে চড়ুই ভেবেছিলাম। লক্ষ্য করে দেখলাম টুনটুনি পাখি। অনেক দিন পর টুনটুনি পাখি দেখলাম। মনের মধ্যে শৈশবিক আনন্দ আঁকুপাকু করে উঠলো। মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করার আগেই পাখিটা ফুড়ুৎ করে পাতার আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেলো।
বৃষ্টিভেজা এই মেঘলা দিনে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর মজাই আলাদা। কিন্তু সেটার কি উপায় আছে। ছাত্রজীবন হলে অবলীলায় বলতে পারতাম ধুর আজ ক্লাসে যাবো না। কিন্তু কর্মজীবনে সেই সুযোগ নাই। বিরস মুখে অফিসে এসে বসলাম। থাই গ্লাসের বাইরে সদ্য ঘুম ভাঙা আকাশ আধবোজা চোখ মেলে চেয়ে আছে।