somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেয়ার কামস দ্য ক্রেজি ওয়ান্স (পর্ব -১)

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেকদিন ধরেই মনে হচ্ছে একটু গ্যাজানো উচিৎ। দুই বছরের বেশী সময় ইনএকটিভ ছিলাম সামহোয়্যারইন ব্লগ থেকে। ওয়েট করছিলাম একটু ভালো সময়ের, কিন্তু সেটা আসার কোন আশা না দেখে আবার মেন্টাল ব্রেকডাউন হবার আগেই গ্যাজানোর ইচ্ছা পোষণ করলাম। এটা হয়তো মেহেদী ভাইয়ের কারনে হয়ে থাকতে পারে৷ আমার ফার্স্ট ইয়ারের ঘুমগুলা বরবাদ হওয়ার পিছে অনেকগুলা কারনের মধ্যে একটা কারন মেহেদী ভাই। ডোন্ট গেট মি রং, ভাইয়ের প্রতি আমার কোন হেইট নাই। ব্ল্যাক নাইটে সব উসুল করসিলাম বলতে গেলে। তো ভাই একদিন কল দিয়ে বললো উনি আকাশবাণী পাইসেন, উনি ভবিষ্যতে নাও বাঁচতে পারেন। প্রথমত, টাইমমেশিনে অতীতে গিয়ে কেউ মরে না এটা আমি ভুলে গেসিলাম। দ্বিতীয়ত, কবি মেহেদী এটাই। যাই হোক, ভাই জানালেন ভবিষ্যতে না ভেসে উনি দুই দিনের ভেতরে নিজের কবিতার বই নিজে বের করবেন। প্রথমে হা করে তাকিয়ে থাকলেও মুখ বন্ধ হবার আগেই বই খুলনা, ঢাকা আর যশোরে সেল হওয়া শুরু হয়ে গেল। হ্যা, দুই দিনের ভেতরেই। আমার আকাশবাণী টা সম্ভবত গতরাতের গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা থেকে আসছে। না বই- ইবুক না। বরং নিজের ব্যাপারে কিছু গার্বেজ শেয়ার করার ইচ্ছা ছিলো৷ এই লেখাগুলো অনেকটা রিজেক্ট হওয়া সিভির মতো। এর মধ্যেই অনেকে স্ক্রল করে সরে পড়েছেন, যারা আছেন তাদের বলবো এটা অনেকটা জার্নাল টাইপ। একটু সেল্ফ এসেসমেন্টও থাকবে। হ্যা, এটা যদি বই হতো তবে টাইটেলটা অবশ্যই, "১০১ একটি হাঁসির জক্স ও অন্যান্য ব্যর্থতার গল্প"। যাই হোক, আজকের মত শুরু করা যাক।
.
নিজের ব্যাপারে বলতে আমি মানুষটা বয়সে বড় না, অনেকের মতে আমার মাথার কয়েকটা তার ছোটবেলা থেকেই ছেঁড়া। মফস্বলে বেড়ে ওঠা এই ছেলেটার বুক পকেটে স্বপ্নের বদলে বাদামের ভাঙ্গা খোসা থাকে। মিডল ক্লাস নয়, বরং পেটি বুর্জোয়া যাদের বলে তাদেরই একজন আমি। টোরেন্ট না, নেটফ্লিক্স থেকে নারকোস স্ট্রিম করি। কিন্তু ল্যাপটপটা পেন্টিয়াম ফোর প্রসেসরের। আমি মানুষটা নিজের প্রতি অনেস্ট না, আমি নিউট্রালিটিতে বিশ্বাস করি। খেলাধুলার শখ থাকলেও, খেলার মাঠে ধুলা খেতেই অভ্যস্ত। রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস না থাকলেও সামনের স্ট্যাটাসগুলোর সাথে এই পোস্টের মার্ভেল লেভেলের ইন্টার ইউনিভার্স রিলেশন থাকতে পারে। বেঁটে-মোটা কিসিমের মানুষটা দেখতে সুদর্শন না হলেও কিভাবে জানি আসেপাশের লোকজনের ফটো-এডিটিং স্কিল বেশ ভালো। টিভি-সিরিজ, ফিল্ম গেলা এই মানুষটা মিউজিকও ভালো পায়৷ পপ, রক, ইডিএম যা ভালো পায় সব খায়। আমি বাচাল, এটা আমাকে যারা চিনে তারা সবাই জানে। আসলে আমি প্রথমে জানতাম না আমি কথা বেশি বলি৷ স্কুলের স্যাররা ক্লাস থেকে বের করে দিলে তখন হালকা ধারনা পেতাম। ভার্সিটির টিচাররাও যখন ক্লাস থেকে বের করে দিতে চাইলো তখন বুঝতে পারলাম ঝামেলাটা কোথায়। সবার কথা জানি না, বাট ভার্সিটিটা আমি ভালো পাই নাই। হিপোক্রেসির স্বর্গ একটা৷ পাস করে বের হই নাই। বের হলে যে মিস ইউ ক্যাম্পাস বলে স্ট্যাটাস দিবো না এটার কোন গ্যারেন্টি নাই। হিপোক্রেসি হেভেনের সারভাইভর বলে কথা।
.
স্কুল লাইফটা আমার বেশ মেমোরেবল ছিলো। একগাদা গাধার পিঠে সাত পিরিয়ডের বই চাপিয়ে রিলে রেস হতো আমার স্কুলে। অপিনিয়ন ছিলো না, বেতের বাড়ি আর মুখের গালি খেয়ে দিব্বি যাচ্ছিলো।
বাসা থেকে পড়ালেখার কোন প্রেশার ছিলো না ছোটবেলায়। না আব্বু-আম্মু, না ভাইয়ামনি। আমি পিচ্চিকাল থেকে আমার বড়ভাইকে এই আল্ট্রা কিউট নামে ডাকি। বলতে ভুলে গেসি, ভাইয়ামনি একজন লেভেল আলটিমা টাইপের জিনিয়াস। মফস্বল লিজেন্ড টাইপ জিনিয়াস। স্কুলে আমার আগে আমার আব্বু আর বড়ভাইয়ের বিশাল লিগেসি ছিলো। এর মধ্যে আমার স্কুলের এডমিশন টেস্টও ছিলো ভয়াবহ, সেকেন্ড লাস্ট হিসেবে স্কুলে ভর্তি হলাম। বাসায় তো বলতে গেলে আগে থেকেই জানতো আমি কতটা ইউজলেস পড়ালেখা নিয়ে। স্কুলের স্যাররা জানতো না, জানানোর দায়িত্ব স্বরুপ স্কুল লাইফের প্রথম মডেল টেস্টে ম্যাথে ফেল করলাম। ক্লাস ফাইভে লোকাল লিজেন্ডের ছোট ভাই ফেল করাতে পুরা ক্লাসের যে ইগো হার্ট হয় জানতাম না। ওই দিন দেখসিলাম। লাইফে ফার্স্ট টাইম ফেল করসিলাম। তাও ক্লাস ফাইভে। শক হজম করার আগেই চারপাশ থেকে ভার্বাল বুলিইং শুরু হয়ে গিয়েছিলো।

বলতে ভুলে গেসি, ফ্যামিলি লিগেসি থেকে পাওয়া আমার একমাত্র জিনিস হচ্ছে শর্ট টেম্পার্ড আউটরেজ। রাগ,ব্যর্থতা আর ক্ষোভের জ্বলন্ত আগুনে কেরোসিন দেওয়ায় যা হবার তাইই হলো। জীবনে প্রথমবারের মতো আমি মেন্টাল ব্রেকডাউনের সাথে পরিচিত হলাম। টেস্টের খাতা ছিড়েখুঁড়ে অর্ধেক ব্যাচমেট বাকিটা বেঞ্চের নিচে ফেলে দিলাম। আমার এই অবস্থা দেখে ইভেন ক্লাসটিচারও ঘাবড়ে গেলো। যেখানে আমি শক্তপিটুনি ডিজার্ভ করি সেখানে আমাকে কিছু না বলে উনি ক্লাস শেষ করে চলে গেলেন কেন সেটা আমি আজও জানি না। হ্যা, আম্মুকে বলসিলেন যে এইবারের মতো ছেড়েদিলেন। সামনে আর বরদাস্ত করবেন না। আমিও আর ওই টাইপের আউটরেজ নিয়মিত না প্রদর্শন করার সিদ্ধান্ত নিলাম। নেক্সট টাইম করলে হস্পিটালাইজড হব না, এটার গ্যারেন্টি কে দিবে?!

তখন তো অন্ধকার যুগ ছিলো, স্কুলে স্যারদের হাতে মার খাওয়া লিগাল বলে কথা। যাই হোক, পুরা ইন্সিডেন্টে লাভের লাভ যেটা হলো যে স্কুলও আমার উপর থেকে আশা সরিয়ে নিলো। দিন শেষে ক্লাস ফাইভের ম্যাথের মডেলটেস্টের ফেইলর টাই বলতে গেলে আমার স্কুল লাইফের ফ্রিডমের পিলার হলো। ওই দিন থেকে কোনভাবে পাশ করা আর ফার্স্ট হওয়া আমার জন্য এক হয়ে গেল। সো-কল্ড ফেইলর তার নো-বডি হবার মিশনে আরো একধাপ এগিয়ে গেলো। বলে রাখি, এটা কোন হিরোইক মিশন না, ফেল করে কেউ হিরো হয় নাই। স্কুল ড্রপ-আউট হয়ে বিলিনয়নার হবার পোটেনশিয়াল আমার নেই৷ আমি হাইয়েস্ট গেলে হিরো-ভিলেনদের মারপিট দেখা দর্শকদের একজন হবো৷

এবং ঠিক সেদিন থেকে আজও মেন্টাল ব্রেকডাউন আমার ভালো ফ্রেন্ড... ভাগ্যিস সেও আমার সাথে রিলেশনশিপে আসতে চায় না...
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×