সোফায় বসা লোকটি দুপা তুলে বসে আছে। ঘরের দরজাটা খোলা। তার দৃষ্টি বাইরে।
*স্যার, কেমন আছেন?
-ভাল মন্দ আপেক্ষিক ব্যাপার। (চোখ না সরিয়ে) আজ সকল ব্যাস্ততা থেকে অবসর নিব। এটা ভাল কথা। আবার সবাই মিলে আমার জন্য নিরবে দু এক ফোটা জল ফেলবে। রুমালে নাক মুছতে মুছতে নাকের আগা লাল করে ফেলবে! Seriously very sad!!!
*স্যার কি এখনি বের হবেন?
-বের যখন হবই এখনি বের হয়ে পরি।
*স্যার বাইরে তো মেঘ জমেছে। একটা ছাতা নিয়ে যেতেন। আমার কাছে একটা এশ কালারের ছাতা আছে। ছাতার কাপড়ের একটা অংশ ছিড়ে গেছে। তবুও কাজ চালানো যাবে।
-প্রয়োজন নেই। অনেক দিন ভিজি না। মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে শুদ্ধ হয়। শরীরের পাপ ধুয়ে মুছে ফেলে। যেখানে যাচ্ছি সেখানে পাপের কোন স্থান নেই।
কিছুক্ষন নিরবতা। বাইরে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে।
*স্যার কি একাই যাবেন?
-একা যাবার ইচ্ছে ছিলো। ভাবলাম অনেক দূরের পথ। হিমুকে নিতে পারতাম। আজ কালকার ক্যাঁচরা ছেলে। যাই বল Old is always gold. তাই মিসিরকে নিয়েই যাই।
*মিসির আলি স্যার রাজি হয়েছেন?
-হুবেনা মানে! এমন শিক্ষা দেবো যে নিজের নাম ভুলে যাবে! যাকে বলে হালুয়া টাইট!!!
*স্যার হিমুটাকে কে দেখবে?
-আরে বোকা (মুচকি হেসে)এ পর্যন্ত ওকে কেও দেখেছে? ও কি আসলে দেখে রাখা টাইপ এর ছেলে???
*জি, জি না স্যার।(লজ্জিত হয়ে)
এবার বৃষ্টি অনেক ঘন হোল।
*স্যার বৃষ্টি বেড়েছে।
-এবার বুঝি সময় হোল।(সোফা থেকে উঠতে উঠতে)। মিসির আমার জন্য রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে আছে।
লোকটি সোজা দরজার দিকে হাটতে থাকল।
-(হাটতে হাটতে) তোমার ছেলের জন্য আমি কিছু বই রেখে গেলাম। ওকে বোল আমার পক্ষ থেকে ওর জন্য গিফট।
*স্যা...স্যা...স্যার...
লোকটি কোন জবাব না দিয়ে দরজায় চলে গেলো। এই যেন এখনি চলে যাবেন।
-(হঠাত চৌকাঠে থেমে, ভেতরে না তাকিয়ে) হিমু বিচ্ছুটাকে বোল পাগলামি কম করতে। নাহলে কিন্তু হালুয়া টাইট!
লোকটি বৃষ্টিতে হারিয়ে গেলো। মহাকালের স্রোতে আর তাকে খুজে পাওয়া যাবেনা। কোনদিনই নয়। কোনদিনই নয়...............................