দ্য হেগ
২৮ জানুয়ারী, ১৮৭৩
অতিপ্রিয় থীয়,
আমি খুব আনন্দিত যে তুমি খুব তাড়াতাড়ি আমার চিঠির উত্তর লিখেছো। এটা জেনেও ভালোলাগছে ওখানকার সবকিছূ তোমার ভালোলাগছে এবং তোমার তোমার বোর্ডিংবাড়ী নিয়ে তুমি ভাগ্যবান বোধ কর। যদি কখনো কোন কিছুতে সমস্যার সম্মুখীন হয় আমার মনেহয় মনটাকে সহজ কর, পরিষ্কার রাখ আস্তে আস্তে সবকিছূ ঠিক হয়ে যাবে। আর মানুষ যা চায় প্রথমেই সবকিছু পায়না, তার জন্য সাধনা প্রয়োজন।
হেইন চাচার জন্য আমি খুব মর্মযাতনা অনুভব করছি এবং আমি অন্তঃকরনে কামনা করি যে উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হোন কিন্ত আমার ভয় হয় উনি সুস্থ্য হবেন না। গত গ্রীষ্মেও তিনি উচ্চাকাঙ্খায় ভরপুর ছিলেন, তাঁর বিভিন্ন রকমের পরিকল্পনা ছিলো। আমাকে বলছিলেন তাঁর ব্যবসাটা খুবই ভালো চলছে। তাই তার অসুস্থ্যতার খবর সত্যিই খুবই বেদনার১।
গত রোববার আমি কোর২ চাচার ওখানে ছিলাম ওখানে আমার খুবই আনন্দময় একটি দিন কেটেছে এবং তুমি সহজেই অনুমান করতে পারছো যে আমি ওখানে অনেক কিছু দেখেছি। তুমি তো জানোই যে চাচা প্যারিসে গিয়েছিলেন এবং অতি সম্প্রতি তিনি ফিরেছেন, সঙ্গে করে এনেছেন মহামারী সংখ্যক পেইন্টিং আর ড্রয়িং। সোমবার সকালে আমি আর্মসটারডামে ছিলাম এবং আবারও মিউজিয়ামে গিয়েছিলাম। তুমি কি জানো, ট্রিপ হাউসের৩ পুরনো দালান ভেঙ্গে নতুন বিশাল একটি ভবন নির্মান করা হচ্ছে? আমার অবশ্য খুবই ভালো লাগছে কারণ আগের দালানটা অনেক ছোট ছিল এবং পেইন্টিংগুলো এমনভাবে ঝোলানো ছিলো যে একজন দর্শক একসাথে অনেক ছবি দেখতে পারতোনা।
আচ্ছা, ক্লুসনারের পেইন্টিংগুলো আমি কিভাবে দেখতে পারি, বলোতো? আমি তাঁর খুব কম কাজ দেখেছি এবং সেগুলো খুবই দৃষ্টিনন্দন ছিলো। আমাকে লিখে জানাও যে আলফ্রেড স্টিভেন্স এর অন্য কাজগুলো কোথায় পেতে পারি আর তাঁ ক্রিশ্চিয়ান নামটাই বা কী? রঁদ্দ্যা ছবি গুলো সর্ম্পকে আমি ভালো মতো জানি এবং সম্পতি ব্রাসেলসে একটা প্রদর্শনীতে তাঁর বেশকিছু কাজ আমি দেখেছি। তুমি ওখানে প্রতিনিয়ত যেসব কাজ দেখছো সেগুলো সর্ম্পর্কে আমাকে নিয়মিত লিখবে আশাকরি। এগুলো আমাকে সবসময়ের জন্য ভীষনরকম আনন্দে রাখে। তুমি আমাকে যে অ্যালবামের শিরোনামটি লিখে পাঠিয়েছ সেটি সেই অ্যালবাম নয় যেটি আমি মনে করেছিলাম। এটিতে শুধুতে করোটের লিথোগ্রাফগুলো আছে। যাইহোক তোমাকে ধন্যবাদ, চেষ্টার জন্য।
অনেকদিন আন্নার কোন চিঠি পাই না। তার কাছ থেকে একটা চিঠি আশা করি। যদিও এখন ও অনেক অলস হয়ে গেছে। তোমার উচিত হবে আন্নাকে মাঝেমাঝে দুএকটা চিঠি লিখে চমকে দেয়া। ও খুব মজা পাবে। আর তোমাকে অবশ্যই ব্যস্ত থাকতে হবে কাজের মাঝে, এটা খুবই চমৎকার একটা ব্যাপার।
এখানে ভয়াবহ ঠান্ডা; যে মাঠগুলো বন্যাকবলিত ছিলো ওটার বরফের উপর এখন স্কেটিং শুরু হয়ে গেছে। আমি বেশকয়েকবার হাঁটতে গিয়েছিলাম। আমি আগ্রহের সাথে জানতে চাচ্ছিলাম যে তুমি স্কেটিংয়ের জন্য একটা ফাঁকফোকড় বের করে এখানে আসতে পারবে কিনা? এখানে আমার প্রোটেটটি পাঠালাম, কিন্তু সাবধান বাড়িতে লেখার সময় এ বিষয়ে কিছূ লিখবে না। এটি বাবার জন্য, তাঁর আসন্ন জন্মদিনের উপহার।
চাচা চাচীকে আমার উষ্ণ অভিনন্দন; মিঃ স্মিথ ও মিঃ এডওয়ার্ড কেও।
তোমার চিরদিনের কাছের মানুষ
ভিনসেন্ট
পুনশ্চ: হ্যানিবিক, ফি ও রুসদের পক্ষ থেকে তোমাকে শুভেচ্ছা পৌঁছে দিলাম। এখন তবে বিদায়, তোমার জন্য শুভকামনা, অজস্র অপার।
ছবি: চিঠিতে বর্নিত রঁদ্দ্যার একটি চিত্রকর্ম। অ্যাট দ্য কবলার'স, ১৮৬৭
নোট১: দুর্বল স্বাস্থ্যের কারনে ১৮৭২ সালে হেইন ভ্যানগঘকে আর্টডিলারশীপ হতে অবসরগ্রহন করতে হয়।
নোট২: কোমেলিস মেরিনাস ভ্যানগঘ। ভ্যানগঘের বাবার ভাই যাকে পারিবারিকভাবে তাঁর নামের অদ্যাক্ষর সিএম বলে ডাকা হতো। আর্মসটারডামে তাঁর একটি সুবিখ্যাত আর্ট গ্যালারী ও বইয়ের দোকান ছিলো।
নোট৩: দ্য ট্রিপ হাউস (ট্রিপেনিয়াস) ১৬৬৬ সালে আর্মসটারডামে দুই ধনী ভাই লডউইস্ক ও হেনড্রিক ট্রিপ কতৃক নির্মিত হয়। বিখ্যাত আর্কিটেক্ট জাস্টাস এই বাড়ীটির নকশা করেন।
নোট৪: আন্না কোমেলিয়া ভ্যানগঘ, ভ্যানগঘের ছোটবোন। আন্না নেদারল্যান্ডের দক্ষিনে লিউওয়ার্ডেন শহরে একটি বোর্ডিংস্কুলে থেকে তিনি পড়াশোনা করতেন।
আলোচিত ব্লগ
আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।
কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।
ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।
কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।