একটি ছবি ছাপা হয়েছে সংবাদপত্রগুলোয় গত ৫ জানুয়ারি। ছবিটি ছাত্রলীগের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তোলা। স্থান বরিশাল। ছাত্রলীগের ক্যাডাররা এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে ধাওয়া করছে। ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে অস্ত্র। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ক্যাডাররা সেই অস্ত্র লুকাচ্ছে প্যান্টের পেছনে। ফটোসাংবাদিকদের ধন্যবাদ দিতে হয়। তারা সাহস করে ছবিটি তুলেছেন। একইদিন আরও ছাপা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য যেখানে তিনি বলেছেন, ‘দলীয় বিবেচনা না করে আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’ (যুগান্তর)। বক্তব্য ছাপা হয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদেরের, যিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এনালগ মন নিয়ে ডিজিটাল দেশ গড়া অসম্ভব’ (যায়যায়দিন)। ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মীরা ৬৩ পাউন্ড ওজনের কেক কেটে যখন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেন, তখন ছাত্রলীগের ক্যাডারদের অস্ত্রবাজির ছবি, আমার কাছে বিসদৃশ লাগে। আমি ঠিক মেলাতে পারি না। ওই অস্ত্রবাজরা তো ছাত্রলীগেরই কর্মী! প্রধানমন্ত্রী যখন পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আইনভঙ্গকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন, তখন বরিশালের ওই দুই ‘আইনভঙ্গকারী’ কি গ্রেফতার হয়েছে? জানি না বরিশালের পুলিশ প্রশাসন ওই ক্যাডারদের গ্রেফতার করতে পেরেছে কিনা; কিন্তু ওই ছবি আমাদের হতাশার মধ্যে ফেলে দেয়। আমরা তো এমনটি চাইনি। মনে আছে, গেল বছর একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন ওবায়দুল কাদেরই। ছাত্রলীগের ক্যাডারদের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি আর অস্ত্রবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি প্রকাশ্যেই বলেছিলেন ছাত্রলীগের ক্যাডারদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করা উচিত। একজন সাবেক ছাত্রনেতা (সভাপতি) কোন্ পর্যায়ে গেলে এ ধরনের কথা বলতে পারেন আমরা সেটা বুঝতে পারি। তিনি সত্য কথাটিই বলেছেন। তিনি হয়তো সত্যিকারভাবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার হোক এমনটি চাননি; কিন্তু স্পষ্টতই চেয়েছেন ছাত্রলীগের ওই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হোক। কিন্তু বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? কেউ কি নেই ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণে আনার?
- ড. তারেক শামসুর রেহমান

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




