somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিস ইজ ইওর কান্ট্রি । আসলেই কি তাই , কোনটা আমার দেশ ?

২২ শে জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাইগ্রেট আষ্ট্রেলিয়া এসেছি ২০০৯ এর জুনে । দেশে ডাটাবেজ প্রোগ্রামিং এর জব করতাম আর ডেটাবেইজ এডমিনিষ্ট্রেশনের উপর পড়াশোনা করতাম ফাকে ফাকে। আট বছর চাকুরী করার পর স্রষ্টা কপালে লিখে রেখে ছিলো বলে পিউর কম্পিউটার সাইন্স না হওয়ার পরও কেমন করে জানি এদেশে চলে আসলাম । এসে পড়লাম এক মহা সমস্যায় । গ্লোবাল ফাইনাসিয়্যাল ক্রাইসিস এর সময়। আইটি জব তো দূরে কথা কোন অফিসিয়াল জব-ই পাইনা । এক মাস এক দূর সম্পর্কের ফুফুর বাসায় থাকার পর ভাড়া বাসায় তুলে দিল । দেশ থেকে আনা টাকা দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে । চিন্তা করলে মাথা ঘুরে । পণ করলাম যা পাব তাই করব , তবু ফিরে যাবনা । ওয়ান ওয়ে টিকেট । তারপর যে কোন কাজ খোজা শুরু করলাম । দোকাদারী, লোডিং, শপিং সেন্টার ও হোটেল ক্লিনিং কাজ কোনটাই বাদ দিলাম না । সংসার তো চালাতে হবে ।

অসহনীয় শারীরিক পরিশ্রম । স্বাস্হ্য এত খারাপ না, তবে কোনদিন এরকম কাজ করিনি ও মনে মেনে নিতে না পারার কারণে কাজে খালি ভূল করতাম । তাই কাজ একটার পর একটা চলে যেত । এক সময় ছয় মাস কোন কাজ-ই পেলাম না । ব্যালেন্স তলানিতে এসে ঠেকল । আর বুঝি টিকতে পারলাম না । এসময় খালি ঘুরে ঘুরে কাজ খোজতাম । আত্নীয়রা সান্ত্বনা দিতো এবং কাজ খোজার ব্যাপারে সাহায্য করত । মনে মনে শুধু আল্লাহকে ডাকতাম আর বলতাম যে , আর যাই করো আমাকে এভাবে পরাজিত করে দেশে ফেরত পাঠিওনা । এসময় একটা আইটি জবের জন্য দুবার করে নিউ ক্যাসেল গিয়ে ইন্টারভিউ দিয়ে আসলাম । প্রায় তিন ঘন্টার পথ । ডিরেক্টর কেন যেন আমাকে পছন্দ করল । দ্বিতীয়বার ইন্টারভিউর আগের রাতে আমাকে ফোনে গাইড লাইন দিলো ইন্টারভিউ এর ব্যাপারে । মনে সাহস আসলো । ইন্টারভিউ মোটামুটি ভালো-ই হলো । এক সপ্তাহের জায়গায় দুই সপ্তাহ পরে জানাল , আমরা তোমাকে সিলেক্ট করেছি তবে আমাদের যেহেতু এখন ফান্ডের অভাব তাই তোমাকে দু-তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে । তবে তুমি এর মধ্যে অন্য জবের চেষ্টা করতে পার । আমি তো অবাক । ফান্ড যদি নাই আছে তবে এ নাটক কেন ? অবশ্য কম্পানিটা একটা ছোটখাট নতুন সফটওয়্যার ফার্ম । তবে কাজটা পুরোপুরি আমার ব্যাকগ্রাউন্ড এর না হলেও যেখানে আইটির কিছু পাই না তাই খুব আশান্বিত হচ্ছিলাম । তীরে এসেও তরী ভিড়ল না । যাক, আল্লাহ ভরসা । কপালে যা আছে । কাজ খুজতে লাগলাম । আর ইন্টারনেটে ধুমসে এপ্লাই । সিভি পাঠাতে তো আর টাকা খরচ হয় না । এর মধেও অনেক কিছু হয়েছে..সব কিছু লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে ।

এক দিন হাউজ কিপিং এর একটা ডাক পেলাম এক এজেন্সি কোম্পানী থেকে, ছয় মাস আগে এপ্লাই করেছিলাম । পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণে নিলো । কেন আগেরটা ছেড়ে ছিলাম জিজ্ঞেস করায় ---বলে ছিলাম অত্যন্ত কাজের চাপ আর আর খালি হোটেলে পরিবর্তন করে । ম্যানেজার আশ্বাস দিলো এখানে এরকম হবে না । সুতরাং কাজ শুরু করে দিলাম ।

দুদিন মাত্র কাজ করেছি --খুব মনোযোগ দিয়ে যেন আবার এটাও খোয়া না যায় , সব ধ্যান জ্ঞান এখানে , যেহেতু স্হায়ী কাজ । অত্যন্ত পেট চলবে আর একটু আধটু পড়াশোনা করে যদি নিজের লাইনে যেতে পারি । তারপরও মনে মনে একটু দু:খ , নিজের লাইনে জব পেলাম না ।

হঠাৎ একদিন ফোন পেলাম, একটা রিক্রটিং এজেন্সি থেকে, জিজ্ঞেস করল কি করছি, কোন জব করছি কিনা ? বললাম , না , চাকুরী খুজছি ।
বলল, এক মাসের একটা কাজ আছে , কন্ট্রাক্ট জব, কিছু ডাটা এন্ট্রি আর কাষ্টমার / ক্লায়েন্ট এর সাথে কমোনিকেট করে ডাটা আপডেট করতে হবে । কাজ করতে হবে ওরাকলের ই-বিজনিসে । দুটানায় ভোগলাম । স্হায়ী পার্টটাইম ক্লিনিং এর কাজ করব নাকি এক মাসের নিজের লাইনে জব করব ? এক মাসে যা পাব তা ক্লিনিং এর ছয় মাসের পয়সার সমান । ছয় মাস পরে কি করব ? আবার একটা কাজ পাওয়া যে কি কঠিন ? আবার মোটামুটি আইটি জব না বলতে ও ইচ্ছা করেনা । এক মাসের অভিজ্ঞতা দিয়ে হয়তো অন্য কোথাও ম্যানেজ হবে ! কি যে করব । মাথায় ধরেনা ।

(লেখা বেশী বড় হয়ে যাচ্ছে, বাকীটা আরেকদিন শেষ করব; দুখিত; আর লিখতে ইচ্ছে করছে না; কত যে অভিজ্ঞতা হলো এই অল্প সময়ে !! )
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:১৪
১৯টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×