রোমহর্ষক ঘটনার যে কোনো চিন্তাকেও হার মানিয়েছেন তিনি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেহ থেকে স্ত্রীর মাথা বিচ্ছিন্ন করেছেন। এখানেই শেষ নয়, স্ত্রীর রক্ত দিয়ে গোসলও করেছেন। গ্রেফতারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)-এর কাছে অবলীলায় এমনই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন 'ভয়ঙ্কর স্বামী' মানিক মিয়া ব্যাপারী ওরফে মানিক (৩৩)। ১২ জানুয়ারি রাজধানীর মিরপুর-১০ এর ডি-ব্লকের ১০ নম্বর রোডের তিন নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী সাদিয়া আফরিন রিতা (২৫)-কে নির্মমভাবে হত্যা করেন মানিক।
এডিসি মশিউর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মানিক মিয়া হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। তিনি গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন, তার সাংসারিক জীবনে প্রায় তিন মাস ধরে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য ও ঝগড়া-বিবাদ বিরাজ করছিল। ১১ জানুয়ারি সকালে মানিক বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখেন রিতা তাদের শয়নকক্ষে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। কে ফোন দিয়েছে জিজ্ঞেস করতেই রিতা উত্তেজিত হয়ে মানিককে বলেন, কে ফোন দিয়েছে, তা তোমার জানার দরকার নাই। তখন তিনি স্ত্রীর হাত থেকে ফোনসেটটি কেড়ে নিলে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে রিতা রাগ করে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেদিন সন্ধান পাননি। রিতার মুঠোফোনও ছিল বন্ধ। পর দিন সকালে রিতা বাসায় ফেরেন। শুক্রবার দিন-রাত কোথায় ছিলে- রিতাকে মানিক এমন প্রশ্ন করলে রিতা কোনো জবাব না দিয়ে চুপচাপ থাকেন। অনেক বার জিজ্ঞেস করার পরও রিতা কোনো উত্তর না দেওয়ায় গালমন্দ শুরু করেন মানিক। শুরু হয় তুমুল ঝগড়া। স্ত্রীর প্রতি সন্দেহের বশবর্তী হয়েই একপর্যায়ে মানিক রাগ করে রিতার গলা চেপে ধরেন। শ্বাসরোধে হত্যা করেন রিতাকে। কেবল শ্বাসরোধে হত্যা নয়, রিতাকে বিবস্ত্র করে টেনে বাথরুমে নিয়ে ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে আলাদা করেন। এরপর মাথার অংশটি পলিথিনের ভেতরে ঢুকিয়ে বাথরুমের সামনের ড্রামে রেখে দেন। এরপর সিনেমার খলনায়কদের মতো স্ত্রীর শরীরের রক্ত দিয়ে গোসল করেন। পরে আবার গোসল করে রাত ৯টায় বাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান মানিক। রিতা ও মানিকের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, প্রেমের সম্পর্কের জেরে তিন বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মানিক ও রিতা। দুজনই কর্মজীবী। মানিক মিরপুর মীম ফ্যাশন বায়িং হাউসে এবং রিতা গ্যালাক্সি হোম বিল্ডার্সে চাকরি করতেন। কিন্তু মাসতিনেক ধরে স্ত্রীকে সন্দেহ করছিলেন মানিক। সেই সন্দেহের মাত্রা একটা পর্যায়ে এতটাই বেড়ে যায় যে মধুর দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ায় খুনোখুনিতে। জবাইয়ের মতো নৃশংস নারকীয় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন রিতা।
১৬ জানুয়ারি রাতে পুলিশ রিতার লাশ উদ্ধার করে। হত্যাকাণ্ডের আট দিনের মাথায় গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মশিউর রহমান ও জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম স্ত্রী হত্যার অভিযোগে গত রবিবার রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থেকে মানিককে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই মানিক গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অকপটে তার স্ত্রীকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। পরে গতকাল ডিবি পুলিশ মানিককে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন । ২৩/১/২০১৩
Click This Link
উপরোক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে বলা যায় - পরকীয়া থেকে স্বামী স্ত্রী সকলেই সাবধান থাকবেন । এটা মেনে নেয়া স্বামী-স্ত্রী যে কারো পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়ায় । মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা । এই সময়টাতে শয়তান মানুষকে নিয়ে যায় চরম ধ্বংসের দিকে - এই জীবন ও মৃত্যু পরবর্তী জীবন - সব শেষ । ঈর্ষা পরায়ণ স্বামীদের ক্ষেত্রে স্ত্রীকে হত্যা করতে দ্বিধা করেনা - আর স্ত্রীদের ক্ষেত্রে সন্তানকে হত্যা করে নিজে আত্ন-হত্যা করে - এরকম ঘটনা প্রচুর ঘটছে। সবল দুর্বলের উপর চেপে বসে - কারণ কান্ড জ্ঞান লোপ পায় ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:১২