লোকটা আমার দিকে তাকাল। উফ্ কী নিষ্ঠুর হিংস্র মুখ! লম্বা একটা কাটা দাগ কপাল থেকে চোখের পাশ দিয়ে নেমে গেছে। দেখলেই বুক শুকিয়ে যায়।
আগুনে চোখে লোকটা বলল, "চেপেচুপে বসে পড়ুন। ব্যাগ সরানো যাবে না।"
আমিও আর কিছু না বলে ঠেলেঠুলে বসে পড়লাম।
.
গভীর মনোযোগ দিয়ে একটা বই পড়ছে লোকটা। কী বই জানার উদগ্র আগ্রহ হচ্ছে। কিন্তু এমন ভাবে পড়ছে যে দেখার উপায় নেই।
একটা বাচ্চা ভিখারি এসে আমার পা ধরে নিল। টাকা দিতে তবে ছাড়ল। বাচ্চাটা লোকটার মুখের দিকে একবার তাকিয়েই দৌড়ে পালাল।
একজন হিজড়ে এসে লোকটার কাছে হাত পেতে দাঁড়াল। লোকটা শুধু বই থেকে মুখ তুলে একবার তাকাল। হিজড়ে হাসছিল, হাসি তৎক্ষণাৎ ভ্যানিশ হয়ে গেল। ঝুপ করে কোমর দুলিয়ে চলে গেল। আমাকেও আর টাকা চাইল না।
হকাররাও লোকটাকে ঘাঁটাচ্ছে না।
এরকম লোককে সবাই এড়িয়ে চলে। এর মুখে যেন একটা প্ল্যাকার্ড লাগানো আছে, তাতে লেখা.."আমি ভয়ংকর, আমায় ঘাঁটিও না,তফাত যাও"।
.
আমার প্রচন্ড আগ্রহ হচ্ছে, সাংঘাতিক খতরনাক লোকটা এত মন দিয়ে কী বই পড়ছে জানার জন্য।
ট্রেন আসছে। উঠতে হবে। লোকটাও এই ট্রেনেই যাবে। অ্যানাউন্সমেন্ট হতেই ব্যস্ত হয়ে বইটা মুড়ে ব্যাগে ঢোকাল। সেই সময় নামটা পড়তে পারলাম। আর এইসান ঝটকা লাগল, পড়েই যাচ্ছিলাম!
বইটার নাম...."রাগী বউ বশ করার উপায়"...
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১:০৬