টি-টি বাবু এলেন। হঠাৎ হঠাৎ এনাদের উদয় হয়। এনারা না এলে বড্ড আফসোস হয়; টিকিটের পয়সাটা ফালতুই গেল। আর এলে যাই বলুন, আমার কিন্তু বেশ টেনশন হয়। টিকিটটা হারাইনি তো?
টিকিট দেখালাম। একে একে সবাই দেখাল। সবশেষে মুরগি ওয়ালা। মুরগিওয়ালা ময়লা পাঞ্জাবির পকেট থেকে পাতলা পিচবোর্ডের একখানা টিকিট বের করে টিটিবাবুর হাতে দিল।
টিটিবাবু টিকিটটা উলটে পালটে বললেন, “আর মুরগির টিকিট?”
“মুরগির টিকিট?” দেহাতি বলল, “মুরগিরও টিকিট?”
কী আর করা যায়? টিটিবাবুর বোধহয় আজ একটাও কেস নেই। অতএব, এই মুরগিটিকেই জবাই করার মনস্থির করে ফেলেছেন। বললেন, “টিকিট লাগবে। নাহলে ফাইন দিতে হবে।”
“অ।” দেহাতি বলল, “তা কত ফাইন?”
“আড়াইশো।”
“বঠে?” দেহাতি মাথা চুলকে জিজ্ঞেস করল, “রসিদ দিবে?”
“কেন দেব না?” টিটিবাবুর প্রত্যয়ী উত্তর, “নিশ্চয়ই দেব।”
“তবে লেখুন।” দেহাতিও বেশ জেদের সঙ্গে বলে।
টিটিবাবুর পকেট থেকে রসিদ বই বেরুল। ঘসঘস করে কী সব লিখে, ফড়াৎ করে কাগজখানা ছিঁড়ে দেহাতির নাকের সামনে বাগিয়ে ধরল কাগজখানা।
এদিকে দেহাতি ততক্ষণে মুরগির ঠ্যাং এর দড়ি খুলে কোলে নিয়ে আদর করছেন। কাগজটার দিকে একবার তাকিয়ে মুরিগিটাকে ছুঁড়ে দিল দরজার বাইরে।
ফর্র্ করে একটা শব্দ, মহাশূন্যে মুরগিটাকে দেখা গেল কিছুক্ষণ। ট্রেন এগিয়ে গেল। দেহাতি বলল, “আমার মুরগি নাই।”
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:২৪