
বাহুবলী নেতা মোক্তার আনসারির ৭৮৬ লেখা গাড়ীর সারি যখন বের হতো, সাধারণ মানুষ তো বটেই পুলিশ অফিসাররা সসম্ভ্রমে স্যালুট ঠুকতো। তার বাড়ীতে রেইড করার জন্য বারবার আবেদন করেও সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ অনুমতি পায় নি। সে চোরা অস্ত্র কারবারীদের থেকে লাইট মেশিনগান পর্যন্ত কিনেছিলো। এক মিনিটে ৫৫০ রাউন্ড ফায়ার করা যায়। তার হেফাজতে ছিল G-3 রাইফেল। মিনিটে ৬০০ রাউন্ড ফায়ার হয়। পাকিস্তান মিলিটারি এই রাইফেল ব্যবহার করতো। এই অস্ত্র কেনার সময় হাতেনাতে ধরার ব্লু প্রিন্ট তৈরী করেছিলেন পুলিশের এক DSP. তাকে উপর মহল থেকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয়। পরে সেই ডি এস পি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার পাঠানো লোকেরা মহম্মদাবাদের বিজেপি এম পি ও তার সঙ্গীদের একটা সরু রাস্তার মুখে ঘিরে ধরে ৪০০ রাউন্ডের বেশী গুলি করে গাড়ী সহ ঝাঁঝরা করে দেয়। এই ছিল মোক্তার আনসারির কীর্তিকলাপের কিছু ঝলক। কিন্তু দিব্যি ঘুরে বেড়াতো। মাঝে মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ধরা দিলেও জামিন। তার বিরুদ্ধে সাক্ষী কে দেবে ? ওরাই তো তখন রাজা বাদশা। একদিকে মোক্তার, আরেকদিকে আতিক, অপর আরেকদিকে আজম খান।ওদেরই রাজত্ব।যোগী আদিত্যনাথ আসার আগে এই ছিল চিত্র।
এখন চিত্রটা কি ? প্রথম যোগী আদিত্যনাথ সরকারে আসার পর যখন মোক্তারকে গ্ৰেফতার করা হয় তখন কংগ্ৰেস পাঞ্জাবে তার নামে একজনকে দিয়ে একটা অভিযোগ করিয়ে পাঞ্জাবের কোর্টে হাজির করিয়ে রোপার জেলে পাঠায়। সেখানে তাকে রাজার হালে রাখা হয়েছিল। তার ছেলের বিয়ে হলো পাশের কংগ্ৰেস শাসিত রাজস্থানে। একদম রাজকীয় স্টাইলে। কংগ্ৰেসের নেতাদের সহযোগিতায়।
বারংবার উত্তর প্রদেশ পুলিশ মোক্তারকে নিজেদের রাজ্যে নিয়ে যেতে চাইলেও কংগ্রেসের পাঞ্জাব সরকারের জেল প্রশাসন মোক্তার অসুস্থ এই মেডিক্যাল রিপোর্ট দিয়ে তাকে আসতে দিচ্ছিল না। এরপর উঃ প্রদেশ পুলিশ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। সেখানকার রায়ের ভিত্তিতে পাঞ্জাব সরকার বাধ্য হয় তাকে ফেরৎ দিতে। যেদিন উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাকে নিয়ে আসছিল, সেদিন ভয়ে সে জল পর্যন্ত খায় নি। পুলিশ ভ্যান থামলেই ভয়ে আতকে উঠছিল।এন কাউন্টারের ভয়। উত্তরপ্রদেশের জেলে সদা সর্বদা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মরার আগে প্রতিদিন মরছে। মৃত্যুভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তার সম্পত্তি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পরিবার, লোকজন, শাকরেদ সব পুলিশের নজরে। একসময় তার যেই শাগরেদরা খেয়াল খুশী মত তোলা আদায়, লোককে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানো এইসব করে বেড়াতো, এখন পুলিশের ডান্ডায় সব ঠান্ডা হয়ে ভেজা বেড়াল হয়ে গিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের এম পি, এম এল এ কোর্ট একটা মামলায় তাকে গ্যাংস্টার আইনে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। একটা মামলায়। এইরকম অনেক মামলা এখন পুলিশ চার্জশিট দিয়ে কোর্টে পাঠাচ্ছে। এই জীবনে মোক্তার আর জেল থেকে বেরোতে পারবে না। অবশ্য কোনদিন শুনবেন আতঙ্কে জেলেই হয়তো হার্টফেল করেছে।
মৃত্যুর চাইতেও অনেক বড় শাস্তি প্রতিদিন মৃত্যুর আতঙ্ক তাড়া করে বেড়ানো। সেটা এখন মোক্তার আনসারি হাড়ে হাড়ে ভোগ করছে।
সন্ন্যাসী মুখ্যমন্ত্রী সত্যিই অসাধ্যসাধন করেছেন। অপরাধের শরীরে মোক্ষম আঘাত হানতে পেরেছেন বলেই বিভিন্ন সমীক্ষায় দেশবাসীর বিচারে তিনি সেরা মুখ্যমন্ত্রী।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




