সাধারণ শনাক্তকরণের কাজে ব্যবহার ছাড়াও তাদের ক্লাশ-পরীক্ষা ও আবাসিক হলে উপস্থিতি, গ্রস্থগার, কম্পিউটার সেন্টার ও অন্যান্য শিক্ষা সহায়ক সুবিধাদির জন্য ডিজিটাল পরিচয়পত্র দেওয়ার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। ৪৭টি বিভাগে ভর্তির সময় ডিজিটাল পরিচয়পত্র বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়া হলেও প্রায় দেড় বছরেও মিলছেনা বহুল প্রত্যাশিত ডিজিটাল পরিচয়পত্র। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র প্রদান করা শুরু করলেও প্রায় দেড় বছর পরেও ডিজিটাল পরিচয়পত্র পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশীর ভাগ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল বিভাগের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরিচয়পত্র বাবত নেওয়া হয়েছে ৪০০ টাকা। কোন কোন শিক্ষার্থীর কাছ একাধিক বার মোট ৮০০ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের টাকা দেওয়ার পর দেড় বছরেও ডিজিটাল পরিচয়পত্র না পওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রশাসন গত ১৩ মে ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। রাবি ভিসি প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াসেফ উসমান ।ঐ অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ভাবে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ৫০০ জনকে এ পরিচয়পত্র প্রদান করার কথা থাকলেও গুটি কয়েক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়া কারো হাতেই নেই ডিজিটাল পরিচয়পত্র।
বর্তমান প্রশাসন ১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মাঝে এই পরিচয়পত্র প্রদানের মাধ্যমে বিতরণ কাজ শুরু হয়। এক বছর অতিবাহিত হলেও মাত্র ৪০০ জন ব্যতীত কোন শিক্ষার্থীর হাতে নেই ডিজিটাল পরিচয়পত্র। এ পর গত ফেব্রুয়ারী মাসে ডিজিটাল পরিচয়পত্র প্র¯‘তভার দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্লাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিজিটাল পরিচয় পত্র প্রদানের কথা বলে আমাদের বেতন থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। এর পর এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও আজ পর্যন্ত আমি সেই পরিচয়পত্র হাতে পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য মাস্টর্সে ভর্তি হওয়া একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, দেড় বছর আগে চতুর্থ বর্ষে ভর্তির সময় আমাদের থেকে ডিজিটাল পরিচয়পত্র বাবত ৪০০ টাকা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এবার মাস্টার্সে ভর্তির সময় আবারও ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে। মোট ৮০০ টাকা দিয়েও আমরা আইডি কার্ড হাতে পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্লা বলেন, নতুনভাবে ফেব্রুয়ারীতে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রথম ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ভর্তির কারনে তাদের ডাটার প্রয়োজন নেই। এখন আমরা পরিচয়পত্র দেওয়ার লক্ষে সকল শিক্ষার্থীর ডাটা সংরক্ষণ করছি। প্রথমে চতুর্থ ও মাস্টার্স বর্ষের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে। এর পর পর্যয়ক্রমে সকল শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্র-ভিসি প্রফেসর ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, শিক্ষার্থীদের থেকে আমরা অতিরিক্ত টাকা নেইনি। চতুর্থবর্ষ থেকে যারা মাস্টাসে উঠেনে তাদেকে চতুর্থ ও মাস্টার্স উভয় পরিচয়পত্র নিতে হবে । কারন দুটোতেই শিক্ষার্থীদের সকল ধরনের তথ্যাদি সংরক্ষণ করা থাকবে। শিক্ষার্থীদের এ দুটি পরিচয়পত্র দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট উত্তেলনের জন্য ব্যবহার করতে হবে।