দুর্ভাগ্য কখন এসে দুয়ারে কড়া নাড়ে বলা দুরহ। দুর্ভাগ্যের মাত্রা কতখানি তা হয়ত আপেক্ষিক। নখ কাটতে গিয়ে কারো আঙ্গুল কাটলে সেটিই তার জন্য দুর্ভাগ্য। কিন্তু এ কোন নাটকীয় দুর্ভাগ্যের কাহিনি নয়, আজকের এ ভাগ্যাহত তরুণের কাহিনি জীবনের এক অতিনাটকীয়, চরম বাস্তবতার কাহিনি।
সুজন চন্দ্র সরকার ( Click This Link )। বাংলাদেশের চাঁদপুরের ছেলে, ষোলদিন পূর্বে তার বয়স হয়েছে মোটে ২৬, গত এপ্রিলে জার্মানির ব্রেমেন শহরে এসেছে উচ্চশিক্ষার্থে। আসার পর হতেই জন্ডিস আর দুর্বলতা, পরবর্তীতে যকৃতে টিউমার। অপারেশনে সেটি সারলেও সেখান থেকেই উৎপত্তি হয়েছে মরণব্যাধী ক্যান্সারের। এবং এত দ্রুত তার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে যে সে নিজেও কল্পনা করতে পারেনি কী নিদারুণ ভবিতব্য সামান্য তফাতে দাঁড়িয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসছে।
কথা না বাড়িয়ে বরং চরম সত্যের দিকে ধাবিত হওয়াই উচিত। সুজন এখন জাগতিক সকল চিকিৎসার উর্ধ্বে। কদিন আগেই ডাক্তার বলেছে তার বেঁচে থাকার শেষ আশাটিও আর অবশিষ্ট নেই। যত দ্রুত সম্ভব দেশে গিয়ে যেন পরিবারের সাথে শেষ সময়টুকু অতিবাহিত করে। কিন্তু মানুষের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত পৃথিবীর সকল দুয়ার বন্ধ হয়ে গেলেও আশা কখনো মরে যায় না। শেষ আশা হিসেবে সুজন হোমিওপ্যাথির শরণাপন্ন হতে চেয়ে হয়ত দেশে ফিরতে সামান্য বিলম্ব করতে চেয়েছিল। সেটি সম্ভব নয় আর। বর্তমানে হামবুর্গের এপেনডর্ফ হসপিটালের ২২৩ নম্বর রুমে লাইফ সাপোর্টে আছে সে। শল্যচিকিৎসার ধ্রুপদী ভাষায় যাকে বলে ক্লিনিক্যালি ডেড। জানিনা নিশ্চিত মৃত্যুর কথা জেনে কিভাবে স্থির থাকা যায়!
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহিণী সুজনের মাকে ঘটনা জানানো হয়েছে মাত্র। জার্মানির আমরা সকল বাংলাদেশি এখন এই মায়ের সন্তান। এই মায়ের আবেদন যে করেই হোক সন্তানের লাশটা যেন দেশে পাঠানো হয়, তিনি নিজ হাতে চিতায় তুলে দিবেন।
মায়ের আকুতির কাছে বাস্তবটা বড় নির্মম। এই লাশ পাঠাতে গুনে গুনে ৬৫০০ (সাড়ে ছয় হাজার ) ইউরোর প্রয়োজন। তবে হিন্দু রীতি অনুযায়ী লাশ পুড়িয়ে ছাই পাঠাতে লাগবে ৪৫০০ (সাড়ে চার হাজার) ইউরো। সুজনের দূরতম সম্পর্কের কোন বন্ধু বা স্বজনও জার্মানিতে নেই। আমরা যারা সুজনের দেহ দেশে পাঠানো নিয়ে ভাবছি তাদের সকলের কাছে উক্ত দুটি এমাউন্টই এক অসম্ভব ব্যাপার। গত কদিন ধরেই ভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল অফিস, আস্তা, এবং এখানে সেখানে বহু দৌড়াদৌড়ির বহু পরামর্শ মিলেছে, আশ্বাস মেলেনি।
কিন্তু ওই যে বললাম, আশা কখনো মরে যায় না। কারণ জার্মানিতে হাজারো সুজন রয়েছে। আমরা তাই প্রতিজ্ঞা করেছি সুজনের দেহভষ্ম নয়, পুরো দেহটাই পৌঁছাবে মায়ের কাছে।
বিসাগের পক্ষ হতে আমরা কখনো অর্থ সাহায্য চাইনা। কিন্তু আজ অন্য কারো জন্য নয়, আমার আপনার মতই একজনের জন্য আকুল আবেদন, আপনারা জার্মানির প্রতি শহরে নিজ নিজ দায়িত্বে অর্থ সংগ্রহ করে অতি দ্রুত সেটি আমাদের কাছে পাঠান।
আমরা জানি আপনারা গতর খেটে দুটো পয়সা উপার্জন করে পড়ালেখা করেন, হয়ত ভাবছেন ৫/১০ ইউরো কিভাবে পাঠানো যায়, লজ্জার ব্যাপার। কিন্তু বিশ্বাস করুন যেকোন পরিমাণ অর্থই ধীরে ধীরে সাড়ে ছয় হাজারের ঘরে পৌঁছবে।
সুজনের ভাইদের সাথে আমরা কেউ কেউ কথা বলি, টেলিফোনের তরঙ্গে হাউমাউ শব্দ শোনা যায়, তবু সুজনের গর্ভধারিণী মা, প্রিয়তম পিতার সাথে কথা বলার সাহস আমাদের হয় না। সুজনের এই সকরুণ পরিণতি পরিবারের সবাইকে চিরদিনের জন্য শোকাহত করে রাখবে সন্দেহ নেই, তবু আমাদের অচেনা অজানা এই ভাইটির জন্য আমাদের হৃদয়ও বিদীর্ণ হয়ে যায়, আমাদের চোখও চিকচিক করে উঠে ভেজা জলে।
যেভাবে সাহায্য পাঠাবেনঃ
Name: MD HASNAIN
IBAN: DE58 2904 0090 0170 7256 00
BIC: COBADEFFXXX
Name: Muhammad Jahid Kabir
IBAN: DE93690400450271504300
BIC: COBADEFF690
পেপালঃ
Email: [email protected]
Name: Muhammad Jahid Kabir
যেকোন তথ্য বা পরামর্শের জন্যঃ
[email protected]
মোবাইলঃ
১। 0176 23536388 (হাসনাইন)
২। 01722976422 (জাহিদ কবীর হিমন)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০