ইদানিং তাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা, অনেক বিদ্রুপ। কেন তাকে টিমে রাখা হচ্ছে, সে ক্যাপ্টেন কোটায় খেলে, এম পি কোটায় খেলে, কত কি!! আবেগের কারনেই সে টিমে আছে!!
আচ্ছা, মানলাম, তাকে আবেগের কারনেই টিমে রাখা হচ্ছে কিন্তু তার এজন্য আবেগটা কেন তৈরী হলো? এমনি এমনি তো হয়নি। নিশ্চয় এমন কিছু করেছে দলের জন্য, দেশের জন্য। এতগুলো ইঞ্জুরি আর অপারেশন নিয়ে এখনো অদম্য লড়াকু মনোভাব তার। না, থাক এসব বলিনা। অনেকে এ বিষয়টা নিয়েও বিদ্রুপ করে।
আচ্ছা, আপনারা কি জানেন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী কে? হ্যা, তিনিই। ২১৩ ম্যাচে ২৬৬ উইকেট। ইকোনমি রেট ৪.৮৫। এভারেজ ৩২. ২৯। অনেকে বলেন, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স খুব খারাপ। তা হলে দেখুন, বিশ্বকাপের আগে জেতা ট্রাই নেশন সিরিজে তিনি মুস্তাফিজের সাথে যৌথভাবে দলীয় বোলারদের ভিতর সর্বোচ্চ ৬ উইকেট নিয়েছেন, ৪ ম্যাচে। মুস্তাফিজের ইকোনমি রেট যেখানে ৭.৩৭ সেখানে তার ৫.৪১। তার বলে পেস নাই, সুয়িং নাই কত কথা!! ভাই, বাংলাদেশে কয়টা পেসার এসেছিল বলেন তো। তাকে কি গতিদানব শোয়েব আখতার, ব্রেট লি বা সুইং লিজেন্ড ওয়াসিম আকরাম দিয়ে তুলনা করবেন? এটা কি যৌক্তিক? আপনাকে যদি আইনস্টাইন, বিল গেটস, মাদার তেরেসা দিয়ে তুলনা করা হয় , কতখানি যৌক্তিক হবে বিষয়টা?
তার ক্যাপ্টেনসি নিয়েও প্রশ্ন!! তুলোধুনা করা হচ্ছে। তার ক্যাপেন্সি পরিসংখ্যান, ৮১ ম্যাচে ৪৬ জয় শতকরা ৫৮%। বাংলাদেশে তার চেয়ে ভাল ক্যাপ্টেন কে ছিল? তাদের পরিসংখ্যানটা ও একটু দেখুন। সাম্প্রতিক তার কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন হচ্ছে। ভাই, আমরা টিভি পর্দায় সোভায় বসে খেলা দেখি, মাঠে না। ক্যাপ্টেনরা কন্ডিশন দেখে ভেবেচিন্তে, টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে আলাপ করেই সিদ্ধান্ত নেয়। আর সব ক্যাপ্টেনেরই কিছু সিদ্ধান্ত ওইদিন কাজ না ও করতে পারে। এই মাশরাফি ই অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচে বাজিমাত করেছিল।
তাকে বাদ দেয়া হোক, বসানো হোক, রুবেলকে তার পরিবর্তে নামানো হোক।অথচ, অল্প কিছুদিন আগে নিদহাস ট্রফির ফাইনালে খারাপ করার পর আমরাই রুবেলকে শূলে চড়িয়েছি,টিম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করতে হবে সহ কত কি!!।এমনকি তার ব্যক্তিগত বিষয়, চারিত্রিক গবেষণা ও কম হয়নি ফেসবুকে!! তখন একবার ও মনে হয়নি এই রুবেলই ২০১৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কি ম্যাচটাই না জিতিয়েছিল।
২/৩ ম্যাচ খারাপ খেললেই বিশ্বকাপের মতো আসর থেকে নিজেদের ইতহাসের সেরা ক্যাপ্টেনকে বাদ দেয় কিনা, আমার জানা নেই। ইতিহাসে ও এমনটি আছে কিনা সন্দেহ!!! যাই হোক, মাশরাফি আর বেশি দিন খেলবে না। টেস্ট, টি টুয়েন্টি থেকে তো আগেই অবসর নিয়েছে,বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে থেকে ও সম্ভবত অবসর নিয়ে নিবে।
ইঞ্জুরি আক্রান্ত শরীর নিয়ে আহত বাঘের মত গত ১৭/১৮বছর ধরে যে লোকটি বীরবিক্রমে লড়াই করে গেছে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, তাকে কি ক্যারিয়ারের শেষ দিনগুলোতে একটু সম্মান জানানো যায়না???
শ্রদ্ধা, ভালবাসা প্রিয় ক্যাপ্টেন ❤।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৯ সকাল ৯:২৮