somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ জীবন দোয়েলের, ফড়িংয়ের...

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই সেদিন, মানে ২১ সেপ্টেম্বর। ২২-এ আমার জন্মদিন। ওই রাতে আমার নাইট ডিউটি। মায়ের সাথে আমার দুই কন্যা অন্যতমা আর বর্ণমালা বেড়াচ্ছে খালার বাসায়।
আমি রাত ১১টা সংবাদ শেষ করে নামছি, রিসিপশনে দেখি আমার দুই কন্যা অন্য-বর্ণ, সঙ্গে শিপলু! ছোট্ট একটি কেক নিয়ে অপেক্ষা করছে আমার মেয়েরা। বাজানের জন্মদিনের ১২টা ০১-এ কেক কাটবে ওরা। ওরা আমাকে বাজান বলে ডাকে।
আমাদের যৌথ পরিবার। শিপলু এ বাড়িতে বউ হয়ে আসার পর রেওয়াজটা চালু করেছে। পরিবারের সদস্যদের জন্মদিনের ১২টা ০১-এ কেক কাটার আয়োজন করে। বড় পরিবারে যা হয়, প্রতি মাসেই কারো না কারো জন্মদিনটিন কিছু একটা থাকে।
আমার মেয়েরা জন্মের পর থেকে দেখছে, মধ্যরাতে কেক কাটা হচ্ছে। ওরা বড় মজা পায়। অন্যতমা তো আগে ভাবত, ওর জন্মদিনেরই কেক কাটা হচ্ছে। প্রতিমাসেই ওর জন্মদিন। ও কেক খায় না একফোটাও। তবে ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নেভানোতে, কেকে ছুরি চালানোতে আর হাততালি দিতে ওর বড় আনন্দ। আমার সেই মেয়েরা তাদের বাজানের জন্মদিনের ১২টা ০১-এ কেক কাটবে না!
কেক হাতে আমার মেয়েদের দেখে রাতের ডিউটি শেষ করে বাড়ির পথধরা আমার সহকর্মীরা ৬তলা থেকে আবার উঠল ৯তলায়। ৬তলায় আমাদের রিসিপশন আর ৯তলায় নিউজরুম। সবাই হৈচে করে ছোট্ট কেকটা কাটল। আমি কলিগদের সামনে লাজুক মুখে দাঁড়িয়ে। আমার ওই লজ্জানীল মুখে চুমু খেল আমার দুই কন্যা।
রাতে ওরা খালার বাসা ফার্মগেটে থেকে যাবে। আমি চলে যাব বাসায়। অফিসের গাড়িতে ওদের তুলে নিলাম। ফার্মগেটে যখন ওদের নামিয়ে দেব, তখন বর্ণমালা কান্না শুরু করল- বাজানকে ও ছাড়বে না।
অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নামালাম। আমার গাড়ি ছেড়ে দিল। রাতে খোলা হাওয়ায় ভেসে আসছিল তখনো বর্ণর কান্না।
আর... আর আমি কাঁদছিলাম গাড়ির ভিতর। এই জীবনের ওই অসামান্য সুখে।
কত কিছু না পাওয়ার, অতৃপ্তির আর অপমানের এই জীবনে আর কী দরকার- এই ভালোবাসার চেয়ে! মনে হয়, এ জীবনই দোয়েলের, ফড়িংয়ের- মানুষের সাথে তার হয় যে গো দেখা...

** আমার দুই কন্যা- অন্যতমা আর বর্ণমালা। ছবিটা অবশ্য ২ বছর আগের। যখন লিখছি, হাতের কাছে তখন ওদের আর কোনো ছবি ছিল না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৫৬
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×