আজকাল জিহাদী বই উদ্ধারে সরকারের পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ বিশেষ পারদর্শী হয়ে উঠেছে! জিহাদ নিয়ে বিতর্কে আজ নাই বা গেলাম। দেশে দুটি অপরাধে রাজনৈতিক নেতাকর্মী গ্রেফতার এখন কমন হয়ে গেছে।
১- নাশকতার আশঙ্কায়/ নাশকতার পরিকল্পনা করছে এমন সন্দেহে! (সাথে
জিহাদী বই উদ্ধার)!
২- পুলিশের কাজে বাঁধাদান এবং অগ্নিসংযোগ মামলা!
প্রথম মামলা নিয়েই আজকের কথা। সেদিন বাসে অফিসে যাচ্ছিলাম। হকার ৫ টাকার বিণিময়ে ১টি বাংলাদেশ প্রতিদিন ধরিয়ে দিল।
-প্রথম পেজের একটি সিঙ্গেল কলামের নিউজ সাথে ছবি। ছবির ক্যাপশান "জিহাদী বই সহ আটক ৫"
খবরটি কাদের নিয়ে বুঝতে কারো সমস্যা হবার কথা না। অনেকের এ্যালার্জি আছে তাই বেশি কিছু লিখলাম না। তবে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল সন্দেহে তাদের আটক করা হয়েছে।
-ভিতরের একটি পেজে নিউজ "কিশোরীকে ধর্ষনের ভিডিও ধারণ, আটক দুই ভাইবোন"
পড়ে দেখলাম "অষ্টম শ্রেণীর মেয়ের সাথে ঐ যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল! হটাৎ মেয়ে বিগড়ে গেছে তাই ছেলে তাদের রোমান্টিক প্রেমের মুহুর্তের তোলা ভিডিওগুলো ছেড়ে দিয়েছে মোবাইলের মাধ্যমে। এটিকে বলে দিয়েছে "ধর্ষণ" অষ্টম শ্রেণীর মেয়ে পড়ে বেশি অবাক হলাম না, দেশের সামাজিক অবক্ষয় কি পর্যায়ে সেটি হাড়ে হাড়ে বুজিয়ে দিচ্ছে ছোট্ট সংবাদটি। অষ্টম শ্রেণী না হলে বোধহয় আমাদের প্রগতিশীল সুশীলরা এটুকে ধর্ষণ বলতেন না!! কারণ মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভালই ছিল বলে মনে হয়!! খবর পড়ে তাই বিশ্বাস হয়েছে। যত ঝামেলা মেয়েটা কোন কারনে বিগড়ে গেছে।
-যাই হোক পরের কথায় আসি.....!! দুই দিন আগে রাজশাহীতে আমাদের এক পরিচিত প্রকৌশলী তাঁর ১৮/১৯ বছরের মেয়ে এবং ছেলে সহ গ্রেফতার হয়েছেন!! অবশ্যই রাজনৈতিক কারণে। মামলারতো আর অভাব নেই। জামাত শিবিরের টাকা খেয়ে পুলিশ নাকি এখন কোটিপতি হয়ে গেছে। জেলার আর জেল সুপারদেরও নাকি পোয়াবারো। জেলখানায় এখন জামাত শিবিরের একাধিপত্য কায়েম হয়েছে। বড় বড় দাগী আসামীরা পর্যন্ত স্বেচ্ছায় জামাত/শিবিরের নেতাদের জামাকাপড় আর টয়লেট পরিষ্কার করে দেয় শুনেছি। এরকম পরিস্থিতিতে এরকম সংবাদ আলাদা কোন বৈশিষ্ট বহন করে না। কিন্তু পরিবারটি যেহেতু পরিচিত এবং একজন এইচ. এচসি পরিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে আবার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে!! রিমান্ড আসলেই বাংলালিংক দামে পাওয়া যাচ্ছে আজকাল। বলারমত কিছু খুজে পাচ্ছিনা। খুনের মামলার আসামী অথবা অস্ত্রধারী সরকারী দলের ক্যাডারদের পুলিশ খুজে না পেলেও নাশকতার পরিকল্পনাকারীদের খুজে পেতে পুলিশের সমস্যা হয় না! এফবিআই-কেও হার মানাচ্ছে এরা।
-এদেশে অষ্টম শ্রেণীর এক কিশোরী মেয়ে প্রেম করে প্রেগন্যান্ট হতে পারে, এর বিপরীতে দেশে কোন আইন বা মামলা হয় কিনা... যতক্ষণ না সেটি মাথা বিগড়ে যাওয়া সেলফোনের ব্লুটুথ দিয়ে জনে জনে ছড়িয়ে পড়ে তা জানি না! কিন্তু পর্দা মেনে চলা এক মেয়েকে বাবার সাথে গ্রেফতার হতে হয় ঘরে জিহাদী বই নামক বস্তু পাওয়ার কারণে!! হ্যাঁ জিহাদী বই। কিছু পাওয়া না গেলে মুসলমানের ঘরে জিহাদী বই আছে না!!
-এই ১৯ বছরের টিনএজের মেয়ে কিরকম নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল যা উদঘাটন করতে ৭ দিনের রিমান্ড লাগে বুঝি না!!! রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের যে ঘরে আগুন আমরা প্রতিনিয়াত দিচ্ছি সেটি বাতাসের দিক পরিবর্তনের সাথে সাথে আমার ঘরের দিকেও তেড়ে আসবে এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়। বাতাস যেমন একদিকে বহে না তেমন ক্ষমতা সবসময় এক হস্তে থাকে না!!
-যে দেশের প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত ত্রাণ তহবিল হতে উৎকোচ গ্রহণ করেন আর সাভার ট্রাজেডির মত ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীরে হাত পাততে হয় ত্রাণের অর্থ সংগ্রহে তখন চিন্তা করি এটাকা-ও আবার কোন বিচারপ্রতিকে কিনতে উৎকোচ হিসেবে ব্যবহার হবে নাতো। যা খেয়ে তারা এক কিশোরী মেয়ের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করবেন"
পরিশেষে- "কুকুর কিংবা শুকুর কেবল আপন আপন প্রাণীর গর্ভেই জন্মে না.....যুগে যগে কিছু মানুষের পেট হতেও জন্ম নেয়"
একটু ভদ্র ভাষাতেই পোস্ট শেষ করলাম। নিজেরে মানুষ মনে করলে কমেন্ট করবেন অন্যথায় আমার পোস্ট-টারে দূর্গন্ধমুক্ত রাখতে দূরে থেকে সাহায্য করুন!!!