ফেব্রুয়ারী মাস আমাদের দেশের মানুষের কাছে ভাষা দিবসের জন্য খুবই শোকের। শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ দেয়ার অহংকারে বুক ফুলে যায় আমাদের।ফেব্রুয়ারীর ১৩ তারিখে ১লা ফাল্গুনের উৎসব হয় দেশের উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোতে।মেয়েরা বাসন্তী রঙের শাড়ী পড়ে। উপরের ছবিতে বাসন্তি কালারের শাড়ি পরা লিনা। ছবিটি ১লা ফাল্গুনে আমার তোলা। ২য় ছবিতে দেখুন একয়ি মেয়েকে ১লা বাসন্তী রঙের শাড়িতে খোপায় ফুল দিলে কি অতুলনীয়া লাগে।
ছেলেরা রঙিন পাঞ্জাবি পড়ে। কয়েক বছর আগেও বেশ জমজমাট হয়ে থাকতো ১ লা ফাল্গুন। আমার খুব প্রিয় একটা দিন ১লা ফাল্গুন। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আসরের শোটির আয়োজন করেছিলাম ২০২১ সালের ফাল্গুন মাসের ১ তারিখ।
কিন্তু যত সময় গড়াচ্ছে ততই এই মাসের একটি দিবস অত্যন্ত ভয়ংকর হয়ে ওঠছে।সেটি হইল ১৪ই ফেব্রুয়ারি। এই দিনকে ঘিরে তরুণ তরুনীদে উৎসাহের শেষ নেই। ১৪ই ফেব্রুয়ারী নাকি ভালোবাসা দিবস। এর আগের কয়েকদিন নাকি 'রোজ দিবস, বারবি দিবস, চকলেট দিবস, হাগ দিবস, প্রপোজ দিবস, সর্বশেষ ভালোবাসা দিবস'। ভালোবাসা পবিত্র জিনিস। এটা অপরাধ নয়। একটি ছেলে একটি মেয়েকে ভালোবাসবে, জড়িয়ে ধরবে, চুমু খাবে, ইট ইজ টোট্যালি ওকে। কিন্তু সমস্যা হল ১৪ই ফেব্রুয়ারী রীতিমতো 'সেক্স ডে' হয়ে ওঠেছে। সেক্স ডে হয়ে ওঠলেও সমস্যা নেই যদি পরষ্পরকে বিয়ে করে। দুঃখজনক হলেও নির্মম সত্য হলো ১৪ই ফেব্রুয়ারী যে কমিটমেন্ট ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে মেয়েটি বা ছেলেটি নিজেকে উজাড় করে দেয়, অনেক কষ্টে মা-বাবা থেকে টাকা নিয়ে বা যে কোন ভাবে টাকা জোগাড় করে যেকোনো ভাবে উক্ত দিবস গুলো সেলিব্রেশনের মহা আয়োজন করার মাধ্যমে মেয়েটির/ছেলেটির মনে ভালোবাসার সৃষ্টি করে ১৪ তারিখ পেয়ে যাওয়ায় পর, ১৫ তারিখে সমস্ত ভালোবাসা শেষ হয়ে যায়।অধিকাংশই বেটার অপশান পেলে ব্রেক আপ করে।যে সম্পর্ক পূর্ণতা পায়না, পাবেনা আমাদের রাষ্ট্র সমাজ আইন সে সম্পর্ককে সমর্থন করেনা। অদ্ভুত লাগে এই দিবসে ছোট ভাইবোন গুলো নিজেদের ভার্জিনিটি নষ্ট করে।ট্রাস্ট মি এদের ১% ও দৈহিক সম্পর্ক করার পর নিজেদের রিলেশনশিপকে বিয়ে করার মাধ্যমে পারমানেন্ট করেনা।
আমাদের নিজস্ব কালচার এবং সেন্টিমেন্ট এর সাথে ভ্যালেন্টাইন্স ডেতে 'প্রেমের নামে যা হচ্ছে' তা যায় না। এগুলো ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম ভ্যালেন্টাইন্স ডে সেলিব্রেশনের মাধ্যমে এক ধ্বংসাত্বক খেলায় মেতে ওঠেছে। ১৪ই ফেব্রুয়ারীতে ভার্জিনিটি হারানো মেয়েটি পরে যখন ব্রেক আপ হয় তখন ডিপ্রেশনে চলে গিয়ে নিজেদের পারিবারিক সুখ বিনষ্ট করছে। নিজে মানসিক অশান্তিতে ভুগছে।
অধিকাংশ মেয়ে বেটার অপশন পেয়ে ছেলেটির সাথে প্রতারণা করার ফলে ছেলেটি ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে।সুন্দর ছেলে গুলো বছর বছর জি এফ পরিবর্তন করছে ফলে ছ্যাকা খাওয়া মেয়ে গুলোর লাইফ নরকে পরিণত হচ্ছে।আমাদের দেশে এই দিবসটির ভয়াবহতা বলে শেষ করার নয়।
১৪ই ফেব্রুয়ারী সেলিব্রেশন হচ্ছে হবে।এগুলো কেউ বন্ধ করতে পারবেনা। কে কি করবে যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। খারাপ লাগছে আমাদের প্রজন্ম ১৩ই ফেব্রুয়ারিতে বাসন্তি রঙ এর শাড়ি পড়া প্রেমিকার প্রেমিকার হাত ধরে ঘুরতো, প্রেমিকার জন্য ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো। একটু একটু করে ভালোবাসাকে পূর্ণতা দিয়ে বিয়ে করত আর বর্তমান প্রজন্ম ডিরেক্ট রুম ডেট করে এর পরের দিনই ব্রেক আপ করছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৬