" আমার ব্লগে ৪০০০ তম মন্তব্যটি করেছেন প্রিয় ব্লগার "জগতারণ" । পোস্টটি ওনাকে ডেডিকেটেড করা হলো। ভালোবাসার মাসে অবিরাম ভালোবাসা জানাই এই প্রিয় ব্লগারকে সবসময় সাথে থাকার জন্য "
ফেব্রুয়ারী এসে গেছে। জঙ্গিরা ছাড়া এই ফেব্রুয়ারী সকল বাংলাদেশীদের জীবনে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করে। আর মাত্র কটা দিন পরে বষন্ত বরণ। সবাই ফেসবুকে ইনস্টাগ্রামে ( মৌলবাদীরা ছাড়া) স্ট্যাটাস দিবেন " ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত" । মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে বাংলা নববর্ষের প্রথম যাত্রা শুরু। তখন প্রচলিত ১৪টি উৎসবের মধ্যে বসন্ত উৎসব উল্লেখযোগ্য।আগুন রাঙানো ফাগুন আমার তরুণ হৃদয়ে উচ্ছাস সৃষ্টি করে। ভালোবাসার মানুষটিকে আমি বসন্তের অপরুপ সাজে সাঁজাই। বাসন্তী রঙ এর শাড়ি কিনে দেই। আমার ফটুশ্যুটের স্টাইল ডিরেক্টর ও হেয়ার স্পেশালিস্ট সুন্দর করে রঙবেরঙের গাঁদাফুল দিয়ে প্রেয়সির খোঁপা বেঁধে দিয়ে তাকে অতুলনীয়া করে তুলে। অসাধারণ ভাবে সাজিয়ে দেয়র পর আমি অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। নতুন করে প্রেমে পড়ি, চুমু খাই , বুকে জড়িয়ে ধরি। কিছুক্ষণের জন্য একজন অপরজনের মধ্যে হারিয়ে যাই। বসন্তের নস্টালজয়া পরিবেশে আমাদের স্পদন উল্লসিত হয়। প্রেয়সীর খোঁপায় পড়া রঙবেরঙের গাঁদাফুল এর সুভাস আমাকে মিলনের জন্য পাগল করে তুলে।
ফেব্রুয়ারী উৎসবের মাস। ভালোবাসা দিবস, ১ লা ফাল্গুন, বই মেলা, ভাষা দিবস। ওহ ! এক সাথে একই মাসে ৪ টি উৎযাপন । ফেব্রুয়ারী ২য় সপ্তাহ থেকে গোটা মাস পুরা পিনিক থাকি আমি। ও চকলেট খুবই পছন্দ করে। ওর ফেভারিট "কিটকেট" । এই মাসের ৯ তারিখে চকলেট দিবস। আমি প্রতিবছর ওর জন্য এই দিবস উপলক্ষে চকলেট কিনে আনি আলাদা করে। সম্পর্ক সুন্দর রাখার জন্য এই দিবস গুলো খুবই কার্যকর। পুরা বছর অল্প অল্প সঞ্চয় করে প্রেমিকা/বউকে শাড়ি গহনা , চকলেট ইত্যাদি উপহার দেয়া যারা হারাম ফতুয়া দেয় ওরা আসলে জঙ্গি। ওদের কাজই হল স্ত্রী/ প্রেমিকাদের ঘরের দাসী বানিয়ে রাখা।
শীতের জীর্ণ শীর্ণ খোলস ছেড়ে বৃক্ষরাজি যখন নব কিশলয়ে সজ্জিত হয় তখন সত্যি পকৃতি এক অতুলনীয় রূপ ধারণ করে। ভালোবাসা দিবসে আমি প্রেয়সীকে নিয়ে ওর পছন্দের স্থানে বেড়াতে যাই। ওর পছন্দের স্থান তার বাপের বাড়ি । সেখানেই যাই। মুরুব্বীদের কবর জেয়ারত করি।আমার ৪ বছরের মেয়েটাকেও শাড়ি পড়ানো হয়। আমি সারাদিন মা-মেয়ের আনন্দ উপভোগ করি। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই। ভালোবাসার চেয়ে সুন্দর কিছুই হতে পারেনা।
কৃষ্ণচূড়া, রাঁধাচূড়া তরু , বাসন্তী, বেলী, জুঁই, মল্লিকা, মালতি, পারুল, রক্ত জবা, কাঞ্চন, পারিজাত, মাধবী, গামারী, চামেলী, রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা এবং হরেক রঙ ও ঢঙের গাঁধা ফুলের অনুপম নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য আমাকে পাগল করে দেয়।
"আজি এ বসন্ত দিনে বাসন্তী রঙ ছুঁয়েছে মনে;
মনে পড়ে তোমাকে ক্ষণে ক্ষণে
চুপি চুপি নিঃশব্দে সঙ্গোপনে।"
২১ শে ফেব্রুয়ারী আমার খুবই প্রিয়। সকাল থেকে আমি আয়োজন করে দিবসটি সেলিব্রেট করি। আমি সাদা পাজামার সাথে কালো পাঞ্জাবি পড়ি। মা-মেয়েও কালো শাড়ি পরে। শহীদ মিনারে যায়। ভাষা আন্দোলনের সময় আমার ভাইদের যেসব জঙ্গিরা হত্যা করেছে তাদের দিকে ঘৃণার থাথু নিক্ষেপ করি। মনে মনে রাজাকারের বাচ্চাদের অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় গালি দিতে গিয়ে থামে যাই। এতো গুলো প্রাণের বিনিময়ে অর্জন করা প্রিয় বংলা ভাষাকে ও গালি দিয়ে কলংকিত করার কথা ভাবতেই আমার হৃদয় রক্তাক্ত হয়। তাই থেমে যাই।
প্রতিবছর আমার আয়োজন করা ফ্যাশন শো গুলোতে ভাষা শহীদের স্মরণে একটা "ফ্যাশন কিউ " অবশ্যই রাখি। পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি একুশে ফেব্রুয়ারীর থিমের উপর করা ফ্যাশন কিউর একটা দৃশ্য।
একটি বিশেষ কারণে প্রতিবছর বসন্তের ১ম দিন এই গানটি ঘুম থেকে ওঠেই প্লে করি । ২/৩ বার শোনি। তাই গাননটির লিরিক্স থেকে শিরোনাম দিলাম।
ওগো দুখজাগানিয়া , ওগো ঘুম-ভাঙানিয়া তোমায় গান শোনাবো ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৫৫