আমি কোন ইসলামি ব্লগার নই। ধর্ম পরিপূর্ণ ভাবে মানতে পারিনা। কবুলের মালিক আল্লাহ।তবে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ও তাহাজ্জুদ প্রতিদিন পড়ি। ব্লগে আমার পোস্ট পড়ে বিএনপি ও বিএনপি ভেক ধরা জামাত শিবির মনে করে আমি ইসলাম বিরোধী। আসলে তাদের ধারণা ঠিক নয়। যারাই ওদের দল করেনা তাদেরকে ওরা ইসলামের দুষমন ভাবে। বিষয়টি হাস্যকর হলেও সত্য।
অনেকবার বলছি, আবারও বলছি, কে কোন ড্রেস পড়বে তা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।জোর করে চাপিয়ে দেয়াটা অন্যায় ও অপরাধ। সেটা হোক বোরখা অথবা টিশার্ট। বোরখা পড়লেই যে কেউ সেকেলে ক্ষ্যাত আনস্মার্ট এমন যারা ভাবে তারা যেমন বলদ, ঠিক তেমনি যারা মনে করে বোরখা যারা পড়েনা তারা সবাই নাস্তিক বা জাহান্নামি তারাও ছাগল। বোরখা পড়া অনেক মেয়ে ওয়েস্টার্ন পড়া অনেক মেয়ের চেয়ে বেশী স্মার্ট। এমবিএ তে আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দর মেয়ে সাফানা। শালিনতা বজায় রেখে ওয়েস্টার্ন এর সাথে বোরকা ও হিজাব পড়ত। ধর্ম প্রাকটিস করত। সুরা আর রহমান মুখস্থ ওর। ফ্রেন্ডরা আড্ডা দেয়ার সময় গান করত। ও করত না। সুরা রহমান বা কোরানের কোন আয়াত তেলোয়াত করত বা ইসলামি কোন গজল। এতো সুরেলা কণ্ঠ যে অন্য ধর্মের বন্ধুরাও মুগ্ধ হয়ে শোনত। আমি কখনোই তাকে পুরা মুখ ও হাতের কব্জি হিজাব দিয়ে কাভার করতে দেখিনি। বোরখা পরেও একটা মেয়ে ক্লাসে যে সবচেয়ে ক্লাসি/স্মার্ট হতে পারে সে তার জলন্ত প্রমাণ।
গতকাল নেটে একটা ছবি ভাইরাল হয়েছে। কিছু মেয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে নিজেদের ছবি বাদ দেয়ার জন্য আন্দোলন করতে আর তাদের সাথে সহমত জানিয়েছে লক্ষ লক্ষ মৌলবাদী।অথচ কোরানে জাতীয় পরিচয় পত্রে মেয়েদের ছবি ইউজ করলে পাপ হবে এরকম একটা আয়াত এমনকি সহীহ হাদিস পর্যন্ত নেই। আর কোরানে পর্দা করা মানে যেটা বুঝানো হয়েছে তা হলো মনের পর্দা। কোরানে বার বার মনের ও মস্তিস্কের পবিত্রতার কথা বলা হয়েছে। যেমন: পবিত্র কোরানের সুরা আযহাবের ৫৩ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেছেন - 'পর্দার বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।’ (সূরা আহযাব: ৫৩)। সুরা আযহাবের ৩৩ নং আয়াতের অনুবাদ বিষটি আরও স্পষ্ট হয়। আল্লাহ সুবাহানাতাআলা বলছেন - ‘আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের অন্তর ও মস্তিষ্ক থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।’ (সূরা আহযাব: ৩৩)।
একটা মেয়ে বোরখা করছে কিন্তু মন হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ, অহংকার, ফেতনা,, গীবত, অন্যকে কটাক্ষ করা, অপরের ক্ষতি করা, আল্লাহর কোন সৃষ্টিকে (ছাগু ও কাঠমোল্লা ছাড়া) কষ্ট দেওয়া ও আঘাত করার জঘন্য বিষয় গুলোতে ভরপুর তাহলে সে আসলে হিজাবী বা পর্দাশীল নয়। কিন্তু একটি মেয়ে বোরখা পড়ছেনা হৃদয় ও মস্তিষ্ক উল্লেখিত নোংরা গুণ গুলো থেকে মুক্ত তবে সে হিজাবী বা পর্দাশীল। কারণ শয়তান ভর করে মন মস্তিষ্কে দেহে নয়। তাই মগজকে কাভারড করে রাখতে হবে দেহকে নয়।