প্রথমে বলে রাখি সিগারেট খাওয়া কোন স্মার্টনেস নয়। বরং এটা খেলে মৃত্যু ঘনিয়ে আসে।অহেতুক টাকা খরচ করে একটা দুর্গন্ধ যুক্ত জিনিস যেটা খেলে ক্যান্সার হয় সেটা খাওয়ার কোন মানে হয়না। কিন্তু প্রথমে ইমোশান পরে এডিকশন থেকে মানুষ সিগারেট এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। এই ক্ষতিকর জিনিসটি পান করাকে যারা স্মার্টনেস হিসেবে দেখাতে চায় তারা তো স্মার্ট নয়ই বরং ক্ষেত। একজন স্মার্ট মানুষের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো যা কিছু সমাজ দেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর তা বর্জন করা। যদি খারাপ কিছু পান করা বর্জন না করে উলটো সেটা টানাকে স্মার্টনেস মনে করে তার চেয়ে বড় খ্যাত আর নেই।
পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি ভালো করে লক্ষ্য করুন। একটি মেয়ে শাড়ি পড়ে সিগারেট খাচ্ছে। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যমে বেশ ভাইরাল। মুক্তমনারা বলছেন আমার এমন একটা জিএফ লাগবো। আর জঙ্গিরা বলছে নষ্টামি। একটা ছেলে যদি এভাবে সিগারেট হাতে ছবি দেয় ভাইরাল হওয়ার প্রশ্নই আসে। যেহেতু একটি মেয়ে এভাবে সিগারেট টানছে ৪র্থ বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রে সেটাতো ভাইরাল হবেই।কারণ মুসলিম সমাজ এর থিউরি হলো - মেয়েরা বোরখা পরে ঘরে বসে থাকবে, স্বামীর পা টিপবে, পরিবারের সবার জন্য রান্না করবে, খাওয়া শেষে এঁটো থালা বাসন মাজবে। উঁচু ভয়েজে কথা বলতে পারবেনা। সেখানে সিগারেট খেলে ধরেই নিবে সে পতিতা লেভেলের কেউ।
অথচ সিগারেট খাওয়া ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্যই মাকরূহ এবং ক্ষতিকর। ছেলেরা ধুমপান, মদ, জুয়া নারী এগুলোর প্রতি এডিকটেড হলে নরমাল আর মেয়েরা সিগারেট খেলে নষ্টা, কোন ছেলে বন্ধুর সাথে চিল করলে ২ নাম্বার, মদ খেলে পতিতা। অথচ এগুলো ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই নিষিদ্ধ।
ছবিটি আপলোড দেয়ার পর একজন মুক্তমনা প্রথমে চিন্তা আরে শালা - জোস তো, ভীষণ বোল্ড। এমন একটা ডেম কেয়ার জিএফ/বউই তো চাই, তাহলে জমে যাবে। মেয়েটি যদি হিজাব পড়ে সিগারেট টানতো তাহলে আবার কথিত প্রগতিশীলরা হাউকাউ করত। তাদের ভাষ্যমতে সিগারেট খাওয়ার অধিকার একমাত্র যারা হিজাব পড়েনা তাদের। একজন হিজাবী সিগারেট টানতে পারবেনা।এই ছবিটি আপলোত জঙ্গি জামাত হেফাজত লেভেলের মৌলবাদীরা লিখছে - "৭৫% উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে ২৭ থেকে ৩০ বছর বয়সেও বিয়েহীন। ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে এরা এমন এক সংকট তৈরী করেছে যে আগামী ৫ বছরে লাখ লাখ মেয়ে বিয়েহীন থাকবে৷
তাদের যৌবনের চাহিদা, আবেগ,ভালোবাসা হারানোর ফলে। স্বামীর মন জয় করার পরিবর্তে স্বামীর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই সংসারে দরকষাকষি করবে৷ আর স্বামীও তাদের মাঝে আনুগত্য, কোমলত্ব,নারীত্ব না পেয়ে অসহ্য হয়ে উঠবে। তখন সংসার টিকানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ তার স্ত্রী ৩০ টা বছর পুরুষের ফিতরাতে টেক্কা দিয়ে সে নিজেই পুরুষে বিবর্তিত হয়ে গেছে। তার আস্ত দেহটাই নারীর বৈশিষ্ট্য হলেও। সে মানসিকভাবে পুরুষ। স্বামী তাকে দৈহিক ভাবে নারী পেলেও সে মেন্টাল ভাবে পুরুষ। এমন একটা দিন আসতে যাচ্ছে। মেয়েরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যৌবন থেকে যেমন বঞ্চিত হবে। বঞ্চিত হবে সংসার থেকেও। বঞ্চিত হবে আখিরাতের মুক্তি থেকেও।"
চিন্তা করেন।ঐ ঘুরে ফিরে সে একই কথা। মেয়েরা উচ্চ শিক্ষিতা ও স্বনির্ভর হওয়ার কোন দরকার নেই। যেহেতু তাদের জন্ম হয়েছে পুরুষের যৌন চাহিদা মেঠাতে - সেহেতু তাদের ক্যারিয়ার বিল্ড করতে নাকি ২৫-৩০ বছর পার করে দিলে সে নাকি পুরুষের প্রতিদন্ধী। সে নাকি নারী থেকে পুরুষ হয়ে যাবে। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়াই নাকি ডিভোর্স এর মূল কারণ! অথচ ডিভোর্স হয় মেন্টাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং না হওয়ার কারণে। মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার। ডিভোর্স এর মূল কারণ দারিদ্রতা, সেক্সুয়াল অক্ষমতা, পর পুরুষ বা নারীতে আসক্তি, বেটার অপশান খুঁজে পাওয়া এবং মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট জ্বিন শয়তান ও মানুষ শয়তানের কুমন্ত্রণা।
মোল্লাদের এই পোস্টে দেখলাম অনেক বেকুব ও ছাত্রী সংস্থা লেভেলের নারী লাইক দিচ্ছে। সহমত জানাচ্ছে। মৌলবাদীরা এভাবেই আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করে। তাই তাদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। মৌলবাদীদের আনফ্রেন্ড/ব্লক করে দিন। তাদের পেজগুলোতে আন লাইক দিন। দেখবেন লাইভে নেগেটিভ কিছু ঘটছেই না। এদের কাজই হলো সারাক্ষণ আপনাকে ডিমোটিভেট করে জাহান্নামের ভয় দেখিয়ে ক্যারিয়ার গঠন না করে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দাসীবাঁদী বানানো। তাই এসব জঙ্গি জামাত হেফাজতকে লাইফ থেকে মুছে দিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৩৯