ছবি - বিডি নিউজ ২৪
রমজানে রোজা রেখে যারা 'ঢাবির চারুকলায় রঙ উৎসব' করছে তাদের রোজা হবেনা বা তারা ইসলাম এর অবমাননা বা ক্ষতি করছে বলেছেন ইসলাম পন্থিরা। অনেক মুসলিম ধর্ম গেলো, ধর্ম গেলো বলে হায় হুতাশ করছেন। আসলে একজন মোটামুটি মানের মুসলিমও রোজা রাখেন। মুসলিম হয়ে রোজা না রাখার মধ্যে কোন বাহাদুরি নেই। আপনি যদি একজন মুসলিম হন তাহলে রোজা না রাখলে বা রোজা ভেঙ্গে দিলে গিলটি ফীল হবেই। ফ্রেন্ডলিষ্টের একজনরে দেখলাম সে রোজা না রেখে সীসা বারে গিয়ে সীসা টানছে। আর ওয়ালে ছবি পোস্ট।অনেকে কমেন্টে সমালোচনা করছে।তাদের গেয়ো টেয়ো খ্যাত ম্যাত বলে একাকার। আমি কমেন্ট করলাম খ্যাত কোথাকার। আমার ফেবু ওয়াল দেখে হেতে টাসকি।দেখলো আমারে খ্যাত বলার অবকাশ নেই।কোন রিপ্লাই না দিয়ে কমেন্ট মুছে ব্লক মারছে। এমন একটা ভাব রোজা না রেখে সে বিরাট স্মার্ট লোকের পরিচয় দিয়েছে। অথচ একজন স্মার্ট মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে কমিউনিটি মেইন্টেইন করা, পরিবেশ বুঝে কাজ বা এক্ট করা। কে রোজা রাখবে আর কে রোজা রাখবেনা এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার, তবে একটি দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ২/৩ ভাগ যখন রোজা রাখছে তখন এমন কিছু করা অভদ্রোচিত আচরণ ন বলেও অনুচিত বলা বাহুল্য।
কিন্তু সমস্যা হলো এদেশের মুসলিমরা একটা বিশ্রী অধিকার ফলাতে চায়। একজন হাফেজ সারাদিন রোজা রেখে বুলেট গতিতে তারাবিতে কোরান পড়ে আল্লাহর নির্দেশকে অমান্য করছেন। আল্লাহ পবিত্র কোরানে শিখিয়ে দিয়েছেন " তোমরা কোরান আবৃত্তি কর ধীরে ধীরে" অথচ তারাবিতে যেভাবে কোরান তেলওয়াত হয় উহা পুরাই সময় নষ্ট। এতে কোরানের মর্যাদা ও আদব ক্ষুন্ন হয়। এবার আসি ঢাবির "রঙ উৎসবে"। চারুকলার কিছু ছেলে মেয়ে রঙ উৎসব উপলক্ষে রোজা রেখে নাচানাচি করছে। ইসলাম পন্থিরা লিখছে - " অদ্ভুত এক আধুনিক জেনারেশন!! এরা ইসলামকে নিজের মত করে সাজিয়ে নিচ্ছে অন্ধ অনুকরণে!!" এমন কি ঢাবিতে যারা " হলি" সেলিব্রেট করছে তাদেরকে ইসলাম বিরোধী ট্যাগ দিচ্ছে। কি অপরাধ ছেলে মেয়ে গুলোর যে রোজা রাখার পরও একেবারে ইসলাম বিরোধী বানিয়ে দিয়েছে?
অপরাধ হলো ঢাবির চারুকলার রঙ উৎসবে যোগ দেয়া এক স্টুডেন্টকে সাংবাদিক জিজ্ঞেস করছেন রোজা রেখে রঙ মেখে নাচানাচি কেন? সে উত্তর দেয় "রোযা রেখেছি কিন্তু ধর্ম ধর্মের জায়গায়, উৎসব সবার", আরেকজনে বলে " রোযা রেখে সংযম করতে হয় বাট মাঝে মাঝে আনন্দ করাটা ইটস ওকে, আল্লাহ উইল আন্ডারস্ট্যান্ড" এবং আরেকজনে বলে "আজকে রোজা এটায় সমস্যা"। মানে সে বুঝাতে চেয়েছে রোজা রাখার কারণে মজা কম করতে পারছে। অথচ হুজুর গণ প্রচার করছেন - উক্ত স্টুডেন্ট নাকি বলছে রোজা একটা সমস্যা। এবং কোরানের একটা আয়াতের রেফারেন্স টেনে বলছে - সূরা আস-সাজদাহ'র একটি আয়াতে বলা আছে..
"আর যদি আমি ইচ্ছা করতাম, তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার হিদায়াত দান করতাম। কিন্তু আমার কথাই সত্যে পরিণত হবে যে, ‘নিশ্চয় আমি জিন ও মানুষ উভয় দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করব"
ধরে নিলাম ঢাবির হলিতে যারা রং মেখে ঢং সাজছে তারা জাহান্নামি কারণ রঙ উৎসব নাকি হিন্দুদের হলি। তারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করছে। তাহলে তারাবিতে আল্লাহর আদেশ অমান্য করে বুলেট গতিতে যারা টাকার বিনিময়ে কোরান তেলওয়াত করছেন, এবং যারা উহা শুনছেন তারাও তো পবিত্র কোরানের সুরা মুজ্জামিল এর ৪ নং আয়াত অমান্য করছে। যদি মেনে নেই, কোরানে আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে রঙ মেখে ঢং সেজে হলি উপলক্ষে ফান করা অপরাধ তাহলে ১০০০ কি মি গতীতে কোরান পাঠ করাও অপরাধ। আপনি জীবনে দেখছেন কোন ইসলামিস্টকে অযৌক্তিক ২০ রাকাত তারাবি, এবং সেখানে বুলেট গতিতে কোরান পাঠ এর বিরুদ্ধে কথা বলতে?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৪:৪৮