শেখ হাসিনার পতনে আমার সমর্থনে আমার প্রিয় লীগ সহব্লগাররা মন খারাপ করছেন। আমি জানি আপনাদের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বাস করেন আপনারা দেশের বাইরে থাকেন। চাকুরী করেন। তাই বুঝবেন না কি ভয়ংকর একটি সময়ের মধ্য দিয়ে গেসে ১৬ টি বছর। স্পেশালি ২০১৩ সালের নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতায় আসার পর থেকে শেখ হাসিনার কথিত লীগরা দেশের ব্যাবসায়ীদের উপর অত্যাচার শুরু করে। আমি ছোট্ট একটা ব্যবসা করি। মিডয়া বিজনেস। লীগের সুবিধাবাদী মন্ত্রী এমপি দের মন রক্ষা করা ছাড়া ব্যবসা করা খুবই কঠিন। লীগের আমলে রিয়েল এস্টেট ধ্বংস, শেয়ার বাজার ধ্বংস, মোটাদাগে প্রতিটি ব্যবসার করুণ অবস্থা ছিল। ব্যাংক গুলোতে দিনে রাতে চলেছে হরি লুট।
আমি ব্লগে অনেকবার লিখেছি দেশের ৯০% মানুষ চেয়েছে হাসিনার পরিবর্তন। বিকল্প চেয়েছিল। আগে তো খেয়ে পড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে তারপর দল। দেশের মানুষ জাস্ট জিম্মি ছিল। তৃণমূল ও ত্যাগীদের কোনঠাসা করে দলে জায়গা করে নিয়েছিল দূর্নীতিবাজ ও সুবিধাবাদীর।উদ্ভট মস্তিষ্কের সব পলিসি মেকারদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। পাপন-সালাউদ্দীন ক্রিকেট ও ফুটবলকে রীতিমতো ধ্বংস করার পরও শেখ হাসিনা ১% স্টেপ নেননি।
আমার কাছে দলের চেয়ে দেশ বড়। আমি লীগ সমর্থন করি কারণ এটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল। যে দল ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ এনে দিয়েছিল। কিন্তু একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে হাসিনার স্বৈরশাসন মেনে নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিলোনা। আমি নিজের চোখে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে নিরীহ ছাত্রদের বুকে গুলি চালাতে দেখেছি।
হাসিনার আরেকটা নির্যাতন এর কথা বলি। আপনারা জানেন চট্টগ্রামে ৬০% বিএনপি, ২০% ধর্মীয় দল, ২০% লীগ। তাই আমার পরিবারের ও আত্নীয়ের অনেকেই বিএনপি করেন। আমার এক ফুফির বিয়ের ১ মাসের মধ্যে ফুফাকে দুবাই চলে যেতে হয়েছিল মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া থেকে বাঁচতে।কারণ তিনি বিএনপির অনেক বড় নেতা ছিলেন। আসলে চট্টগ্রামে দলের চেয়ে সম্পর্ক বড়। তিনি ৯ বছর পর আসছেন।ফুফির বাড়িতে যেন উৎসব। এরকম চট্টগ্রামে হাজার হাজার পরিবার এখন আনন্দে মুখরিত যাদের ঘরে বিদেশীরা ফিরছেন। হাসিনার স্বৈরাচার এর শিকার আমার পরিবার তাও আমি কখনো লীগ সাপোর্ট পরিবর্তন করবনা কারণ আমি কেন লীগ করি আগেই বলছি।
২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া আমাদের এক অভিনেত্রী নওশাবার কথা মনে আছে? আয়না ঘরে টানা ২১ দিন রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল। তার অপরাধ সে সরকারের বিরুদ্ধে পোস্ট দিয়েছিল। এরকম শত শত শিল্পী, ফিল্ম-নাটক নির্মাতা, অরগানাইজার, মডেল দের উপর শারিরীক ও শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করেছে শেখ হাসিনার কথিত আওয়ামী লীগ। আর এই কারণেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেমে এসেছে - ৯৮% শিল্পী। এমন সব ঘটনা সম্পর্কে আমি জানি যা জানলে আপনাদের গা শিউরে উঠবে। ওরা ইন্ডাস্ট্রিতে এমন অবস্থা করে রেখেছিল যে, হয় তাদের কথা শোন লীগ কর না হলে আয়না ঘরে যাও।
অনেকে বলছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পেছনে শিবির আছে। কথাটা পুরাপুরি ঠিক নয়। শিবির এই আন্দোলন এর সুযোগ নিয়েছে মাত্র। এদেশের মানুষ কখনোই এদের ক্ষমতায় আনবেনা। যদি কখনো প্রকাশ হয় সমন্বয়করা শিবির এর পরের দিন দেশের অন্তত ৭ কোটি মানুষ আন্দোলন করবে। আওয়ামী পন্থী সাংবাদিক গুলো বসে নেই। এরা খুবই টেলেন্ট। মাটির নিচে থেকে হলেও সত্য তথ্য বের করে আনবে। 'র' তো আছেই।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:৫১