somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোরগ পোলাও মাএ ২০ টাকায়!!

২১ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




দিনগত রাত সোমবার ২টা। রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের এক পাশে মানুষের জটলা। মধ্য রাতে এত মানুষের জটলা দেখে কৌতুলবশত গাড়ি থামিয়ে গেলাম কাছে। চোখ পড়লো খাবারের ডালায়।

ডালায় করে বিক্রি হচ্ছে লোভনীয় খাবার মোরগ পোলাও। দাম মাত্র ২০ টাকা! দামটা একটু অবাক হওয়ার মতো বটে। তবে অবস্থা দেখে কেউ ভুল করতে পারেন পোলাওয়ের হাট বলে। ছোট বড় ডালায় ২০-৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে খাবারগুলো। ময়লা, আবর্জনার ডালার মধ্যে খাবার! সারি সারি সাজানো। ঠিক সবজির দোকানের মতো।
এত রাতে গাড়ি থামিয়ে কাছে যাওয়ায় প্রথমে একটু চমকে গেল সবাই। বিষয়টি নিয়ে জানার লোভ হলো। কথা বললাম এখানের বিক্রেতাদের সঙ্গে।

জানা গেলো, সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ, রিকশা, ঠেলা চালক ও ভাসমানদের খাবার এটি। যাদের বেশি টাকায় হোটোলে বসে মোরগ পোলাও খাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য এ ব্যবস্থা।

তবে কোনো জনহিতৈষী এ ব্যবস্থা করেছেন বিষয়টি এমনও নয়। খাবারগুলো সেখানে তৈরিও হয়নি, এসেছে বড় বড় কমিউনিটি সেন্টার, ক্লাব ও হোটেল রেঁস্তোরা থেকে। সবই উচ্ছিষ্ট। যে খাবারগুলো উচ্ছিষ্ট হিসেবে থাকে সেই খাবারগুলো এখানকার কিছু ব্যবসায়ীরা কিনে আনে। কিনে মধ্যরাতে তারা বিক্রি করে। বাসি হলেও তাদের কাছে মোরগ পোলাও বলে কথা!

এখানকার এক ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তারা প্রায় ১৫জনের মতো ব্যবসায়ী রয়েছেন। যারা এ ব্যবসায় জড়িত। রাত ১২টার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কমিউনিটি সেন্টার, হোটেলে ও রেঁস্তোরার উচ্ছিষ্ট খাবার তাদের কাছে বিক্রি করতে আসে। তারা সেগুলো কিনে এই সাধারণ লোকদের কাছে বিক্রি করে।

খাবারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে নূরুল ইসলাম বলেন, “ভাই এগুলো কি আমরা বুঝি! আমরা করি ব্যবসা। আর যারা খায় তারা তো ভালো হোটেলে খেতে পারে না। এগুলো খেয়েই মন কে সান্ত্বনা দেওয়া।”

তিনি বলেন, “কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ, তা যাচাই করলে এরা তো খেতে পারবে না।“

নুরুল ইসলামের মতো আরেক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামও প্রায় একই কথা বলেন। তিনি বলেন, “রাত হলেই আমরা এখানে আসি। এরপর খাবার নিয়ে আসে লোকজন। তাদের কাছ থেকে খাবার কিনে আমরা খুচরাভাবে বিক্রি করি। এটা দিয়েই আমরা সংসার চালাই।”

এই খাবারগুলো আপনারা খান কি-না এমন প্রশ্নে শহিদুল বলেন, “আমরা খাই না, তবে যারা খায় তারা তো খারাপ বলে অভিযোগ করে না। অনেক দিন ধরেই আমরা এ ব্যবসা করছি।”

শহিদুল বলেন, “আমরা এক হাজার টাকার খাবার কিনে দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করি। এভাবেই আমাদের সংসার চলে। দিনের বেলা ঘুমাই আর রাতে এই ব্যবসা করি।”

প্রতি রাতে এখানে দুই থেকে প্রায় পাঁচশ’ লোক এখানে খেতে আসে বলেও জানান তিনি।

শহিদুল, নুরুল ছাড়াও সেখানে দেখা যায় মমিনুল ইসলাম, কোরবান আলী, আসলাম, শরিফুলসহ অন্তত ১০জন ব্যবসায়ীকে।

এদিকে খাবার খেতে আসা শাহাজাহান আলী বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা তো এই খাবার হোটেলে খেতে পারবো না, যার কারণে এখান থেকে খাচ্ছি। ”

তিনি বলেন, “আমরা এখানে ২০ টাকা দিলে পেটপুরে মোরগ পোলাও খেতে পাচ্ছি। আর হোটেলে খেতে গেলে দেড় থেকে দু’শো টাকা লাগবে। আমাদের পক্ষে এত টাকা দিয়ে খাবার খাওয়া কি সম্ভব!”




সমাজের নিম্ন আয়ের এই লোকগুলো বোঝে না কোনটা স্বাস্থ্যসম্মত আর কোনটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাদের কাছে মুখ্য বিষয় ২০ টাকায় পোলাও থেতে পারা। শুধু নিজেরা নয়, বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানদের জন্য কিনে নিয়ে যান তারা। মোরগ পোলাও খাওয়ার শখ তো তাদেরও আছে।

সূএঃ Click This Link






১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×