somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামিক স্টেইট অভ বাংলাদেশ?!

১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আওয়ামি বাকশালীদের, খুন-হত্যা, জেল-জুলুম- নির্যাতন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতি, গণতন্ত্রহীনতা, বাকস্বাধীনতাহীনতা, নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা, সিন্ডিকেট ক’রে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে মানুষকে জিম্মি করে ফেলা, আয়নাঘর নামক জীবন্ত হেল বানিয়ে রাজনৈতিক ওপন্যান্টদের অমানুষিক শাস্তি দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। এক কথায় স্বাধীন দেশের নাগরিকদের পুরুদস্তুর পরাধীন বানিয়ে ফেলা দেখে বিস্ময়ে স্থব্ধ হয়ে গেছিলাম। ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। বুঝেছিলাম হিটলার মরে গেলেও রেখে গেছে তার অমর প্রেতাত্মা লেডি হিটলার, শেখ হাসিনা।

তবে এই ডাইনিবুড়ি পাইকারীহারে বিরুধী দল দমনের পাশাপাশি বেশ কিছু জঙ্গি ও গ্রেপ্তার করেছিলো। যেমন: হলি আর্টিজান হামলাকারী ISIS জঙ্গি গোস্টি, জামায়াতুল মোজাহিদিন বাংলাদেশ (JMB)’র আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, আল কায়েদা বাংলাদেশ শাখার আধ্যাত্মিক প্রধান আন্সারুল্লাহ বাংলার টিম(ABT)’র প্রতিস্টাতা মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে (বাংলাদেশি তালেবান)’র মাওলানা মামুনুল হক, রফিকুল ইসলাম মাদানি ইত্যাদি।

অবশ্য জঙ্গি তৎপরতার কারণে সরকার এদের বন্ধী করেনি; সরকার ভেবেছিলো এরা আসলে এক ধরনের সরকার বিরুধী গ্রুপ।কারণ এই জঙ্গিরা চায় বাংলাদেশ থেকে শুধু সরকার না, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটাকেই তুলে দিয়ে ইসলামি শরিয়া সিস্টেম নিয়ে আসতে। ইসলামিক খিলাফাহ সিস্টেম পুনঃপ্রতিস্টা করতে। ইসলামি শরিয়া প্রতিস্টার এই গ্যাঁড়াকলে পড়ে আওয়ামীলীগ এদেরকেও অন্যান্য বিরুধি দলের পাশাপাশি গ্রেফতার এবং কারারুদ্ধ করতে বাধ্য হয়। আর না হয়, জঙ্গিরা যখন প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মুক্তমনা, নাস্তিক, সেকিউলার ব্লগারদের হত্যা করতে শুরু করে তখন কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকার এদেরকে সমর্থন করেছিলো, বলেছিল, ''ব্লগাররা নিজেরাই এই বিপদ টেনে এনেছে। এখন তাদের উপযুক্ত শাস্থি-ই হচ্ছে।''

‘’ তোমি কে আমি কে
রাজাকার রাজাকার
কে বলেছে কে বলেছে
স্বৈরাচার স্বৈরাচার ‘’ - স্লোগানে যখন ছাত্রদের আন্দোলন শুরু হলো , এবং তারা এটাকে সরকার পতনের ১ দফা দাবিতে নিয়ে গেলো, খুবই খুশি হয়েছিলাম। আশা জেগেছিলো যে এবার যদি ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয়েই য়ায় তাহলে বাংলাদেশে মুক্তি পাবে বহু আকাংকিত মুক্তচিন্তার উন্মুক্ত ময়দান।

ছাত্র আন্দোলনে আহত-নিহত হলো অনেক অনেক ছাত্র। অসংখ্যা তাজা লাশ আর এক নদী রক্ত পেরিয়ে দেশ স্বাধীন হলো দ্বিতীয় বারের মতো। আসলো স্বাধীনতা ২.০।

কিন্তু,
যে বা যারা আসবে ক্ষমতায়, ভেবেছিলাম, গণতন্ত্র আর বাকস্বাধীনতা রক্ষা করবে, উদার হবে, মানবিক হবে। কিন্তু একি দেখছি? অবস্থা তো এখন হাসিনা আমল থেকে আরও খারাফ। কারণ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে মুল ভূমিকা রেখেছে বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলন। ইসলামি ছাত্র শিবির -নিজ নামে আন্দোলন করতে না পেরে ‘’বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’’ নাম নিয়ে মাঠে নামে এটা এখন আর লুকায়িত কিছু নয়। গুলি খেয়ে যে বা যারা মারা গেছেন এবং হাসপাতালে আহত যারা এখন মারা যাচ্ছেন কিংবা বেঁচে ফিরে আসছেন তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় তো আর লুকানো কিছু না। ফেইসবুক , ব্লগ, ইউ টিউব , পেপার পত্রিকায় আসছে তাঁদের ছবি এবং পরিচয়। সবাই দেখছেন ।
এদেরই প্রত্যক্ষ হুকুমে জঙ্গিদের জেল থেকে মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে অবাদে। সরকার পতনের প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়েছে কোন প্রকার যাচাই বাছাই না করে এই বন্ধীদের মুক্তি দেয়ার প্রক্রিয়া। জেল থেকে বেরিয়ে এসে এরা বাইরের সাথিদেরকে সাথে নিয়ে মেতে উঠেছেঃ

> মুর্তি ভাঙ্গার মহোৎসবে, এমনকি মুর্তিগুলো ভাঙ্গার আগে মূর্তির মাথের উপরে উঠে পেশাব করা হলো।
> ইয়া বিশাল মূর্তির মাথার উপরে বেয়ে উঠে জিহাদি পোষাক পরা লোকজন সমস্বরে তালেবানি স্লোগান দিলো, নারায়ে তাকবির - আল্লাহু আকবার।
> বড় বড় ক্রেন দিয়ে রাস্ট্রীয় উদোগ্যে ভাঙ্গা হলো মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে তৈরি মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্থ ভাস্কর্য।
> চালানো হল সংখ্যালঘুদের ওপর স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
> বিরুধি মতের যাকেই পাওয়া গেলো পিটিয়ে মেরে গাছের সাথে , খাম্বার সাথে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হলো। এই বীভৎসতার ছবি এবং ভিডিও তো ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
> পুলিশ খুন, আওয়ামী নেতা কর্মীদের ওপর হামলা, অনেককে খুন।
> আওয়ামি সমর্থকদের চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা। বিচারকদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা।
> দেশের সমস্ত ভাষ্কর্য, মনুমেন্ট, মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত জাদুঘর, মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্ত মূর্তি ভেঙ্গে ফেলা, গুঁড়িয়ে ফেলা, পুড়িয়ে ফেলা।
> হাসিনার সমর্থকদের মিডিয়া নিষিদ্ধ করা, অফিসে হামলা করা।
> শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করলে তাদের মারধোর করা
> যে ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলনে যায়নি, তাদের আর ছাত্রাবাসে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে না দেওয়া ।
আগে লোকেরা ছাত্রলীগের ভয়ে কাঁপতো, এখন কাঁপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ট্যাগ লাগানো ছাত্রশিবিরের ভয়ে।

শিবির! -যাদের ভিতরেই লুকিয়ে আছে, JMB, ISIS, আন্সারুল্লাহ, তালেবান। ভুলে যাবেন না, এই শিবির ই সেই শিবির যারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে স্লোগান দিয়েছিলো:

আমরা হবো তালেবান!
বাংলা হবে আফগান!!

এবং এরা-ই এখন ক্ষমতার কলকাঠি নাড়ছে।

baabulhabib
@ http://www.somewhereinblog.net

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×