ছেলে থাকতে এতীম পৌত্র পৌত্রী বঞ্চিত হওয়ার কারণ
১.মৃতের উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য শুধু আত্মীয় হওয়াই মাপকাঠী নয়। বরং নিকটাত্মীয় হওয়া শর্ত। নইলে আদম-হাওয়ার সন্তান হিসাবে দূর সম্পর্কের হলেও দুনিয়ার সকলেই মৃতের আত্মীয়ের মধ্যে শামিল হয়ে যাবে। ফলে সবাই ওয়ারিছ হওয়ার দাবিদার হতে পারে। অবশেষে যার দাপট চলবে কেউ মৃত্যুবরণ করলেই সে তার সকল সম্পদের জবর দখলকারী হয়ে যাবে। পরিণামে সমগ্র বিশ্বে অরাজকতা †ছয়ে যাবে। এ কারণেই ইসলাম উত্তরাধিকার প্রাপ্তিতে মৃতের নিকটাত্মীয় হওয়ার শর্তারোপ করে সকল নৈরাজ্য নির্মূল করে দিয়েছে। সুতরাং মৃতের ছেলে-মেয়ে এবং পৌত্র পৌত্রী থাকলে ছেলে-মেয়েই তার উত্তরাধিকারী হওয়া যুক্তিযুক্ত। কেননা মৃতের অধ:স্তন নিকটবর্তী স্তরের আত্মীয় তারাই। তবে এ সময় মৃতের এতীম পৌত্র পৌত্রী থাকলে ইসলামে তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে।
২.এতীম নিজ পিতার সম্পদে চাচাদের অধিকারের কোন সুযোগ রাখে না। অনুরূপ চাচা থাকতে দাদার সম্পদে ভাতিজাও কোন অধিকার রাখবে না। এটাই যুক্তিযুক্ত।
এতীম পৌত্র পৌতত্রীদের বিকল্প ব্যবস্থা
মৃতের ছেলে-মেয়ের তুলনায় এতীম পৌত্র -পৌত্রী যদি অভাবগ্রস্থ হয় তবুও তারা ওয়ারিছ হবে না। কেননা অভাব বা প্রয়োজন উত্তরাধিকার প্রাপ্তির কারণ নয়। কিন্তু তাদের অভাব মোচন করার জন্য, তাদের মনোকষ্ট ও নৈরাশ্যকে দূর করার জন্য কোরআনে বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
১.আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
সম্পদ বণ্টন কালে যদি †তামাদের দূরবর্তী আত্মীয়-স্বজন, এতীম ও মিসকীনরা উপস্থিত হয় তাহলে তা হতে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করে দাও। আর তাদেরকে সদুপদেশ মূলক কথা শোনাতে থাক।-সূরা নিসা: আয়াত নং ৮।
এ আয়াতে মৃত ব্যক্তির প্রত্যেক ওয়ারিছকে এতীম পৌত্র -পৌত্রীদের প্রতি সদয় এবং তাদের লালন-পালনে সহযোগী হওয়ার আদেশ জারি করা হয়েছে। তাদেরকে নিজের সন্তান মনে করে তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে আদেশ করা হয়েছে।
২.তাছাড়া দাদা জীবদ্দশায় এতীম পৌত্র -পৌত্রীদের জন্য কিছু সম্পত্তি দলিল করে যেতে পারেন।
৩.সকল হাদীস গ্রন্থে এতীম লালন-পালনের প্রতি সবাইকে উৎসাহিত করে প্রচুর হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন:
(ক) রাসূলে-পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম এরশাদ করেন মুসলমানদের সেই ঘরই উত্তম †যখানে এতীমের সাথে উত্তম আচরণ করা হয়। আর মুসলানদেনর সেই ঘর নিকৃষ্ট সেখানে এতীমের সাথে অসদাচারণ করা হয়। আমি এবং এতীমের লালনকারী জান্নাতে এরকম থাকবো: এসময় তিনি মধ্যমা এবং শাহাদত অঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করেন। (হাদীসের প্রায় কিতাবেই এ হাদীসটি উল্লেখ হয়েছে)।
(খ) যে ব্যক্তি নিজের পানাহারে এতীমকে সাথে রাখবে আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করবেন। (তিরমিযী শরীফ)
(গ) সাত জিনিস মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। তন্মধ্যে একটি হল। এতীমের সম্পদ আত্মসাৎ করা। (আবূ দাঊদ শরীফ)
পক্ষান্তরে হিন্দু ধর্মে উত্তরাধিকারে পৌত্র -পৌত্রী কোন অধিকার রাখা হয় নি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




