somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম জব-ইন্টার্ভিউ এর অভিজ্ঞতা

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাল ২০১৬, আগস্ট মাস।
তখন সবে পাশ করে বের হয়েছি। গায়ে জোশ অনেক। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা খেয়ে ডেস্কটপ চালু করে, গান ছেড়ে দিয়ে বিডিজবস এ জব অফার খুঁজতাম এবং যেটাই মিলে যেত সেটাই এপ্লাই করে বসে থাকতাম।

তবে আমার নিজেরো কিছু চাহিদা ছিল।
যেমন, ঢাকার বাহিরে জব করব না কারন আমি চাইতাম সারাদিন খাটাখাটনি করে দিন শেষে ফ্রেন্ড সার্কেলের সাথে আড্ডা দিব, মজা করব, মিউজিক প্রাক্টিস করব। ঢাকার বাহিরে গেলে সেটা হবে না। আমার পরিচিত এক বুয়েটের বড়ভাই, নারায়ঙ্গঞ্জে একটা বড় ইলেক্ট্রিসিট ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পনির ইঞ্জিনিয়ার। আমার দেখা অন্যতম সেরা গিটারিস্ট। তার একটা মিউজিক ম্যান জেপি সিরিজের গিটার ছিল। তার গিটার বাজানো শুনলে চোখে পানি আসে। কিন্তু বেচারা সারাদিন কাজ শেষে বন্ধু বান্ধবের অভাবে তার গিটার খানাই বেচে দিল ৬০ হাজার টাকায়। এখন হয়ে গেছে আর দশটা নরমাল চাকরিজীবি। এই ভয়টা আমার আছে। একারনেই আমি সব সময় ঢাকার মধ্যে চাকরি চেয়েছি।

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সাথে সাথে আমার দুইটা প্রফেশনাল কোর্স ও করা ছিল যেমনঃ ফায়ার সেফটি ডিজাইন ও পিএলসি অটোমোশন। এছাড়াও অটোক্যাড, ম্যাটল্যাব সহ আরো কিছু ইইই সম্পর্কিত সিমুলেশন সফটওয়্যার ভালো পারতাম। কারন ঐসব সফটওয়্যার দিয়ে প্রচুর প্রজেক্ট (১০ টার মত) করেছি ।শালার আমার এমন কপাল যে একটা জায়গা থেকেও ডাক আসে না।

মনের দুঃখে বসে থাকি। এখানে ঘুরতে যাই, ওইখানে ঘুরতে যাই। আত্মীয়স্বজনের বাসায় তো যাই না প্রশ্নের ভয়ে। ওদিকে দুই কাজিন (প্রায় সম বয়সী) দুইটাই মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি তে প্রায় লাখের কাছাকাছি বেতনে ঢুকেছে। এই কথা শুনতে শুনতে আমার চুল সব পড়ে গেল। আমি কখনোই কারোর সাথে নিজেকে তুলনা করি না। অন্যদের জীবন এক গতিতে চলবে, আমার চলবে আমার গতিতে। কিন্তু আমি কেন অন্যের গতিতে চলি না, এই কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে সবাই কে। যে কারনে আমি আমার আত্মীয় স্বজনের থেকে হালকা দুরত্ব বজায় রেখে চোলি।

আর আল্লাহর কাছে একটাই দোয়া চেয়েছি যে দশ হাজার টাকার হলেও একটা চাকরি যেন পাই।

তো ভার্সিটির এক বড় ভাই আমাকে ফোন দিলেন সকাল প্রায় ১১ টার সময়। তিনিও একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে আছেন। তার কোম্পানিতে একটাই পদ খালি হয়েছে। কিন্তু তারা ঐ পদ পূরণের জন্য ইন্টার্নাল সার্কুলার দিয়েছে। এর অর্থ ঐ কোম্পানির এমপ্লয়ি দের পরিচিত কেউ থাকলে তার সিভি টা এইচ আর এর কাছে ফরোয়ার্ড করে দিতে হবে। এই ধরনের সার্কুলার কোন ওয়েব সাইটে, খবরের কাগজ বা ফেসবুকে আসে না। তো আমি সিভি পাঠালাম। আমার ইন্টার্ভিউ হবে ঠিক পরদিন। আমার ফর্মাল জামা-প্যান্ট খুজে কোনমতে আয়রন করতে দিয়ে আসলাম সাথে জুতা খুজে ঐটাকে কালি করতে দিয়ে আসলাম। কিন্তু সমস্যা হল মোজা।মোজা নাই আমার। এখন বাটার দোকানে গেলে মোজার দাম পড়বে ১০০ এর উপর (আমার ধারনা)। তো ফ্রেন্ডের কাছ থেকে বুদ্ধি নিয়ে আমি ১০ টাকায় বলাকায় উঠে কাকলি নেমে ফেরিওয়ালার কাছে থেকে ৩০ টাকায় মোজা কিনে আবার ১০ টাকায় ফিরে আসলাম। ইন্টার্ভিউ এর জন্য ড্রেস রেডি।

ইন্টারনেট এ সার্চ দিলাম, "Interview Questions"
অনেকগুলা লিংক আসল। মোটামুটি সব লিংকেই একি টাইপের প্রশ্নের উদাহরন হিসেবে দেওয়া আছে।
১. তোমার সম্পর্কে বল
২. তোমার শক্তিশালি দিক কোনটা?
৩. তোমার দুর্বল দিক কোনটা?
৪. কেন তুমি আমাদের এখানে জয়েন করতে চাচ্ছ ?
৫. কেন তোমাকে আমি নিব?
৬. তুমি কত স্যালারি চাও?
৭. এর সাথে কিছু হয়ত টেকনিক্যাল প্রশ্ন থাকতে পারে।

তো সব কিছু মোটামুটি খাতায় নোট করে ওইটা লিখে নিজে নিজে আউড়িয়ে প্রাক্টিস করে শুতে শুতে রাত ১ টা বেজে গেল। পরদিন ১১ টায় ইন্টার্ভিউ। বাড্ডায়। জীবনে ঐদিকে যাই নাই। কাজে জানিওনা কিভাবে যাব।
সকালে উঠতে উঠতে নয় টা বেজে গেল। দাঁত ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে ও গোসল করে ফর্মাল ড্রেস পরে নিলাম। নাখাল পাড়াতে যে খানে থাকতাম ওইখান থেকে নাবিস্কো মোড়ে হেটে যেতে পনের-বিশ মিনিট লাগবে। আর ফর্মাল ড্রেসে হেটে যাওয়াটা ভালো কাজ হবে বলে মনে করলাম না। তার উপর নাস্তা খাওয়ার টাইম নাই।

একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়লাম। রিকশা নাবিস্কো মোড়ে নামিয়ে দিল। ভাড়া ২৫ টাকা। ভাড়া দেওয়ার সময় আবার মজার কাহিনি হয়েছিল। প্রথমে আমি দিয়েছিলাম ৫০ টাকার নোট। রিকশাওয়ালার কাছে ছিল ২০ টাকার নোট। উনি আমাকে ২০ টাকা হাতে দিয়ে বাকি ৫ টাকা তিনি খুজতেছেন। এই সময় আমি দেখলাম মানিব্যাগের চিপায় যে টাকা আছে
ওইটা দিয়ে ২৫ টাকা ভাড়া দেওয়া যাবে। আমি তখন রিকশাওয়ালা কে বললাম যে আমার ৫০ টাকা দেন আমার কাছে ২৫ টাকা আছে আমি দিয়ে দিচ্ছি। উনি আমার ৫০ টাকা ফেরত দিলেন আমি ওনাকে ২৫ টাকা দিয়ে দিলাম।

এর পর মেইন রোডে দেখলাম বাড্ডা যাওয়ার লেগুনা আছে। আমি লেগুনা চড়ে বসলাম। বসার সাথে সাথেই লেগুনা ছেড়ে দিল। আর ঠিক এই সময় দেখলাম ঐ রিকশাওয়ালা মামা,"এ মামা, এ মামা" করতে করতে লেগুনার দিকে আসতেছে। আমি বুঝলাম না বিষয়টা। লেগুনা তখন অনেক দূরে চলে গেছে।

মোটামুটী আমতলী দিয়ে যখন লেগুনা ঢুকল, তখন বুঝলাম রিকশাওয়ালার ২০ টাকা এখনো আমার কাছে আছে। যাই হোক ফেরৎ দেওয়ার কোন উপাই নেই। বাড্ডার মোড় থেকে বিশ্বরোডের দিকে ৫ মিনিট হাটলে অফিসের ঐ বিল্ডিং পড়ে। ১১ তলায় ওই কানাডিয়ান অফিস। খাতায় এন্ট্রি করে লিফটে করে গেলাম অফিসে। তখন বাজে সাড়ে ১০টা।

অফিসে যেয়ে রিসিপশনে যেয়ে বললাম, আমার ইন্টারভিউ আছে। আমার কাছ থেকে সিভি নিয়ে রিসিপশনের এক আপু ভিতরে নিয়ে গেল। এর মাঝে আমি বসে বসে অফিস দেখতে থাকলাম। যতদুর চোখ যায়, বড় বড় টেবিলে বসে ল্যাপটপ নিয়ে ধুমায়ে কাজ করে যাচ্ছে এমপ্লয়ি রা। সবাই ক্যাজুয়াল ড্রেসে। কেউ কেউ ব্যান্ডের টিশার্ট পরে এসেছেন। একজন কে তো স্যান্ডেল পায়ে দেখলাম।
অফিসের একপাশ দিয়ে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত পুরোটাই গ্লাস। পুরো শহর টা দেখা যায়। দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। এর মধ্যে রিসিপশনের আপু এসে বলল, সাড়ে ১১ টায় ইন্টার্ভিউ হবে, আর আমি চা কফি কিছু খাব কিনা? আমি বললাম,"কফি হলে ভালো হয়"। চাকরি পাব কি পাব না এটা জানি না। খেয়ে যাই। ৫ মিনিটের মধ্যে নেসক্যাফের একটা মগের হাফ মগ কফি আসল। কফি খেতে লাগলাম। কফির স্বাদ এভারেজ। রিসিপশনে অনেক ম্যাগাজিন রাখা ছিল। কানাডিয়ান কোম্পানি টা ছিল ফায়ার সেফটির উপরে। এ কারনে বেশিরভাগ ম্যাগাজিন ফায়ার সেফটির উপর।

সাড়ে ১১ টা বেজে গেল। ডাক আসল। ফায়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্ট্মেন্ট এর হেড আমাকে ডাকলেন। সালাম দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। ঢুকতে ঢুকতে দেখলাম আমার সিভি রাখা আছে। সিভির উপরের দিকে কিছু সংখ্যা লেখা। আমাকে ইংরেজিতেই বসতে বললেন, আমি জীবনেও কারোর সাথে ইংরেজি তে কথা বলিনি (প্রেজেন্টেশন ছাড়া) আমি তার পুরা আমেরিকান একসেন্ট এ ইংলিশ বলা শুনেই প্রথমেই ঘাবড়ে গেলাম।
বসে পড়লাম সামনের চেয়ারে, ইন্টার্ভিউ শুরু হল। ইংরেজি তে,

হেডঃ তোমার সম্পর্কে কিছু বল।
আমিঃ আ-আ-আমি "হাবলু"। আ-আ-আমি জন্ম ও বেড়ে ওঠা "অ-অমুক" জায়গায়। আমার এস এস সি, এইচএসসি ও-ও-ওইখা-খানে।...................(অনেক ক্ষণ এ উঁ করার পর)..........................এর পর ঢাকায় আসি। এসে তমু ভার্সিটি তে ভর্তি হই। ভার্সিটি থাকা কালে অ-অনেক প্রজেক্ট করেছি। রোবটিক্স কম্পিটিশনে ভার্সিটি লেভেলে চাম্পিয়ন হয়েছি এ-এ-ছাড়াও ন্যাশনাল রোবোটিক্স ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করেছি। সে-সে-সেখানে আমাদের প্রজেক্ট বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
আ-আ-আমার থিসিস ছিল "ক" এর উ-উ-উপর। যে-যেটার পেপার ও পাব-পাবলিশ হয়েছে।
ব্যক্তিগত ভাবে আ-আ-মি অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে পারি। যে-যে-যেকোন পরিবেশে আমি নি-নি-নিজেকে মানিয়ে নি-নিতে পারি"

হেডঃ তোমার দেখছি ফায়ার সেফটির উপরে ট্রেনিং আছে। কয়দিনের ট্রেনিং ছিল?
আমিঃ ৫ দিনের

হেডঃ কি কি ছিল কোর্সে?
আমিঃ মেইনলি ছিল কিভাবে একটা আগুন প্রতিরোধক বিল্ডিং ডিজাইন করব, এমার্জেন্সি এক্সিট কেমন করে ডিজাইন করতে হবে, কি কি ইকুইপমেন্ট রেডি রাখতে হবে, কিভাবে দেওয়াল ডিজাইন করতে হবে, সিড়ির ডিজাইন টা কেমন হবে, ইলেক্ট্রিসিটির লাইন কেমন হবে, এলার্মের পজিশন কেমন হবে এইগুলাই,আর..............................(আবার হ্যাং খেয়ে বসে ছিলাম)...................................আর কিছু কেস স্টাডিজ।

হেডঃ আচ্ছা। ভালো। তোমার এই ট্রেনিং টা আছে দেখে ভালো লাগল। তবে এইখানে আমরা আমাদের মত আরেকবার ট্রেনিং নিতে হবে। আবার এইখানে কিন্তু প্রচুর খাটনি। খাটা-খাটনি পারবে তো?
আমিঃ অ-অবশ্যই। কোন সমস্যা হবে না স্যার। আমি পা-পারব।

হেডঃ তুমি জান তো এই কোম্পানির বাংলাদেশে অপারেশন ২০১৮ পর্যন্ত।
আমিঃ জি স্যার। ৩১ অক্টবর পর্যন্ত, আমি ইন্টার্নেটে দেখেছি। [ নোটঃ আগেরদিন রাত্রে নেট ঘেটে এই কোম্পানি সম্পর্কে অনেক কিছু দেখেছি, এমন কি যে আমাকে ইন্টার্ভিউ নিচ্ছে তার সম্পর্কেও জানি, তার লিংকডিন ঘেটে জানি যে সে ক্যারিয়ার শুরু করে ২০০৬ সালে, এর মাঝে সে আরো ৩ টা কোম্পানিতে চাকরি করেছে ]

হেডঃ তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আমিঃ আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার পাওয়ারপ্লান্টের উপর মাস্টার্স করার ইচ্ছা আছে।

হেডঃ ভালো ভালো। তোমাকে আমরা কেন নিব?
আমিঃ আ-আ-আমি খুব মনোযোগ দিয়ে ক-কাজ করতে পারি, আমি যে-যে-কোন পরিস্থিতি মা-মা-মানিয়ে নিতে পা-পারি। এই কারনে।

হেডঃ আচ্ছা। কথা বলে ভাল লাগল। ধন্যবাদ। তোমার সাথে পরে যোগাযোগ করা হবে।
আমিঃ ঠিকাছে। ধ-ধন্যবাদ।

ইন্টার্ভিউ শেষ হল। চলে আসলাম বাসায়। বাসায় আসার পথে সকালের ঐ রিকশাওয়ালার সাথে দেখা। পরে ওর পাওনা ২০ টাকা দিয়ে দিলাম।

এখন তো বুঝি, কত লেইম একটা ইন্টার্ভিউ দিছিলাম। ওই হেডের জায়গায় আমি হলে আমি আমাকে ঘাড় ধরে বাহির করে দিতাম অর্ধেক পথেই। ওই সময় আমি যে পারফর্মেন্স দেখিয়েছি, যে কোন রিক্রুটার আমাকে রিজেক্ট করে দিবে সাথে সাথেই। তারপর কেন জানি আমাকে পরদিন ফোন দিয়ে জানানো হল, যে আমি সেরা ৩ জন এর মধ্যে আছি। আমার নিজের কাছেও বিশ্বাস হয় নি। মানে কি? আমার তো পারার কথা না। হতে পারে সিভি উলটা পালটা হয়ে গেছে। কারন আমাকে কোন টেকনিক্যাল প্রশ্ন করেনি। তার উপর বড় কথা আমি তো সারা ইন্টার্ভিউ জুড়ে তোতলাইছি । যাই হোক আমার পরের ইন্টার্ভিউ হল ফোনেই । এবার হল যে আমার ডিরেক্ট বস হবে সেই। তার নাম বাংলা করলে হয়ঃ লেবু :D

উপরের হেডের প্রশ্নের মতই অনেক টা আমাকে প্রশ্ন করা হল। তবে এটা ছিল বাংলায়। সবশেষে বলল ঠিকাছে তোমাকে রেজাল্ট জানিয়ে দেওয়া হবে।

আমি কিন্তু আশা দেখতে শুরু করলাম। যতদুর শুনেছি বেতন হবে ৩০ হাজারের আশেপাশে। আমি স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। একটা সিঙ্গেল খাট কিনব ভালো দেখে (তখন ফ্লোরিং করি), একটা ভালো টেবিল কিনব, একটা শেলফ কিনব, অনেক বই জমাব, এক বছর পর ডেস্কটপ টাকে গেমিং পিসিতে রুপান্তরিত করব, দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাব।

প্রত্যেক দিন সকালে ঘুম থেকে উঠি আশা নিয়ে যে, এই বোধয় ফোন আসল জবের পজিটিভ খবরের। তখন কিভাবে সেলিব্রেট করব সেই চিন্তা করি। কোন কোন বন্ধু কে খাওয়াব, কোন রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে যাব এই প্লান করতে থাকি। বাসায় কিভাবে বলব যে আমার চাকরি হয়েছে। কিভাবে আত্মীয় স্বজন কে জানাব? কোন মিষ্টি নিয়ে যাব এই চিন্তা করতে থাকি।

১৫ দিন হয়ে গেল কোন ফোন নাই। আমি তো সন্দেহ করা শুরু করলাম। লাস্ট এ যিনি আমাকে ফোনে ইন্টার্ভিউ নিয়েছিলেন তাকে ফোন দিলাম।

আমিঃ হ্যালো। আপনি কি "লেবু" বলছেন?
লেবুঃ জি, আপনি কে?
আমিঃ আমি "হাবলু" বলছিলাম, আমি "এই পদের" জন্য একটা ইন্টার্ভিউ দিছিলাম "এত তারিখে"। বলা হয়েছিল রেজাল্ট জানানো হবে। রেজাল্ট টা কবে হবে জানতে পার?
লেবুঃ এই পদে তো লোক নেওয়া হয়ে গেছে। সরি ভাই। কিছু মনে নিয়েন না।

এই বলে লেবু মিয়া আমার ফোনটা কেটে দিল। আমি দুঃখে শুয়ে থাকলাম অনেক্ষণ। ওইদিন সারাদিন কিছু খাই নি। সন্ধায় রুমে (ওপেন স্পেস) আলো জ্বালায় নি। পাশের রুম থেকে আলো আমার রুমে আসছিল। রাত ১১ টায় উঠে খেতে গেছি হোটেলে, প্রায় বন্ধ হবে হবে ভাব। কিছু পরোটা বানান ছিল। ঠান্ডা হয়ে গেছে। তেলে চুপচুপে অবস্থা। ২ টা পরোটা আর অখাদ্য সবজি দিয়ে খাওয়ার পর টং থেকে এক কাপ কড়া রঙ চা খেয়ে আবার আমার ছোট ফ্লাটে আসলাম। গিটারে সুর তোলার চেষ্টা করলাম। সুর লাগছে না ঠিক মত। ফ্রেট বোর্ড থেকে বার বার হাত সরে যাচ্ছিল। ভালো মন্দ যে রেজাল্ট ই আসুক ফোন দিয়েও তো জানাতে পারত। তাহলে এত স্বপ্ন দেখতাম না। স্বপ্নভঙ্গও হত না।

একটা ছোট অভিমান ছিলঃ

সেই যখন বাদই পড়ব, তাহলে কেন প্রথম ইন্টার্ভিউ টাতে টিকলাম?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৫৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×