জনগণের প্রকৃত ভোটে একবার ইউপি মেম্বার হওয়া হাজার বার ভুয়া ভোটে রাষ্ট্রপতি হবার চেয়েও মহামুল্যবান। যতই আমরা পদবী লিখি, আমি বার বার নির্বাচিত, মানুষ আড়ালে আবডালে সেটা নিয়ে হাসে নাকি গর্ববোধ করে সেটা দেখা ও বুঝার মত বিবেক কতজনের আছে?
নির্বাচন বর্তমান সংবিধানের অধীনে নাকি সংশোধিত সংবিধানের অধীনে হলো তার চেয়ে বড় কথা নির্বাচনটা ফেয়ার হলো কিনা। জোর জবরদস্তিমুলকভাবে নিজেকে নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রতিটি দিন যা যা করা হবে, সেগুলো করার ন্যায্যতা তার থাকে না। যেহেতু তিনি জানেন যে তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন, ফলে জনগণের কাছে তার দায়বদ্ধতা থাকে না। ফলে তার দায়িত্বপালনকালীন পাঁচ বছরে জনগণ চরম স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হন। যোগ্যতা ও ন্যায় নীতির ভিত্তিতে জনগণ সরকারী সুযোগ সুবিধা পাওয়া থেকে বন্চিত হন। অযোগ্য পদলেহনকারী ও তোষামোদকারীরা সকল কিছুর মালিক বনে যান। এইসব পদলেহনকারী সংখ্যায় অল্প হলেও তাদের অধিকারে চলে যায় সকলকিছু। চোখের সামনে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ছেলে মেয়ে বেড়ে উঠে এসব অন্যায় দেখতে দেখতে এবং একটা হীনমন্যতায় আচ্ছন্ন থাকে তাদের জীবন। ফলে বংশ পরস্পরায় অনেকের অজান্তেই জনতন্ত্রের পরিবর্তে প্রজা ও রাজার তন্ত্র প্রচলিত হয় এবং ফিরে আসে কুর্নিশ আর জ্বি হুকুম জাঁহাপনার যুগ।
আধুনিক এক বিংশ শতাব্দির পৃথিবীতে কোন জ্বি হুকুম জাঁহাপনা বলা প্রজাদের দিয়ে নব্য সাম্রাজ্যবাদ ও বর্ণবাদ মোকাবিলা করা সম্ভব হয় না, প্রকারন্তরে নয়া উপনিবেশবাদের যাতাকলে নিস্পেষিত হওয়া ছাড়া তাদের আর কোন গত্যন্তর থাকে না।
কাজেই এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, গনতন্ত্রে ফেয়ার নির্বাচন তথা জনগনের ভোট দেবার অধিকার নিশ্চিত করা যে কোন দেশের দেশপ্রেমিক সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর নৈতিক দায়িত্ব। কারণ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত ব্যক্তিরাই নিশ্চিত করতে পারে মানুষের আইনগত অধিকার, দুর করতে পারে বৈষম্য, কায়েম করতে পারে সকলের জন্যে কল্যাণমুলক রাষ্ট্র।