এটি ছিল ভারতীয় উপমহাদেশ এর সুবর্ণ সময়। এমনকি তখন রাজারা বুদ্ধিজীবিদের অনুসরণ করতেন। সে সময়ের একজন ছোট রাজা নাম মহারাজ দস্তগীর। তিনি ছিলেন খুব ভাল শাসক। তিনি আলাওল নামের একজন মহান বুদ্ধিজীবীকে অনুসরণ করতেন। রাজার রাজত্বে আলাওলের ছিলো একচ্ছত্র প্রভাব। একদিন আলাওলকে রাজার অনুরোধ 'মহিলাদের সম্বন্ধে একটি বই লিখুন'। এর কারণ কিছুদিন ধরে রাজা তার রাণীকে বুঝতে পারছিলেন না। তাই বুদ্ধিজীবীর আশ্রয় নেওয়া। মহিলা সম্পর্কে অনেক কোটেশনসহ বই লিখলেন আলাওল।. তারপর লেখার সমাপ্তি টানলেন এই বলে যে ''its all about the women. No women can go beyond these lines’’। বইটি রাণীর হাতে এসে পড়লো। মহারাণী বইটি পড়লেন। এবং বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলেন যে বুদ্ধিজীবির তার স্ত্রী ব্যতীত কোন মহিলা সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। এবং তিনি বোকার স্বর্গে বাস করেন। তাই রাণীর কাছে পুরো বইটি ধাঁধার মতো মনে হলো। রাণী বইয়ের উপর রাজার মতামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। কারন রাজা প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাওল কে অনুসরণ করেন। রাজা উত্তরে বললেন যে বইটি পড়ার পর হতে বর্তমানে তিনি প্রতিটি ধাপে ধাপে রাণীর মন পড়তে সক্ষম! রাজার এ আবাল বাণী শুনে তো রাণী হতভম্ব। এবার রাণী মহারাজ দস্তগীর কে মহিলাদের সম্পর্কে আসল পাঠ দানের সিদ্ধান্ত নিলেন।
একদিন রাণী আলাওলের বাড়িতে তার রাজকীয় দূত পাঠালেন। দূত আলাওলকে একা মহারাণীর রাজপ্রাসাদে আসতে আমন্ত্রন দিলেন। আলাওল এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন এবং সঠিক দিনে প্রাসাদে গিয়ে হাজির হলেন। তিনি চিন্তা করলেন রাণী তার বই পড়ে অনুরক্ত হয়েছেন। ফলে বইটি সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য তাঁকে বিশেষ আমন্ত্রন। আলাওলকে রাণীর বিশেষ রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। রাণী ঘরে ছিলেন একা। তাই আলাওল ভয়েভয়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে হার-হাইনেস মহারাণী একা কেনো? রাণী তাকে বলেন যে রাজা বা তার রাজকীয় প্রাসাদের কেউ আলাওলের এ আগমনের কিছুই জানেন না। আলাওল সহসা প্রচন্ড ভীত হয়ে পড়লেন। এবং প্রাসাদ থেকে পলায়ন করার উপায় জানতে চাইলেন। উত্তরে রাণী জানালেন যে রাজার এখন রাণীর বিশেষ রুমে আসার সময়! তাই এখন আলাওলের পলায়ন সম্ভব নয়। তাই তিনি তার বড় আলমারির মধ্যে আলাওলকে ঢুকে লুকিয়ে থাকতে বললেন। আলাওল দেখবেন আলমারিতে ঢুকা ছাড়া আর কোনো উপায় খুলা নেই। ততক্ষণে রাজা রাণীর ঘরে প্রবেশ করলেন। রাজা রাণীর মুখের দিকে তাকালেন। অল্প কিছু বাক্য বিনিময়ের পর রানী তাকে জিজ্ঞেস করলেন যে তিনি চিন্তা করছেন! রাজা উত্তরে বললেন যে তিনি বর্তমানে রাণীর মন পড়তে পারেন! রাণী মজা পেলেন এবং রাজাকে তিনি কি বিষয়ে এই মুহূর্তে চিন্তা করছেন তা প্রকাশ করতে.বললেন। রাজা লম্বা একটা চাহনি দিয়ে উত্তরে বললেন যে মহারাণী এই মূহর্তে তাঁর রাজার সম্পর্কে চিন্তা করছেন এবং অপেক্ষা করছেন তার রাজার সংগ ভোগ করার জন্য। রাণী বলেন আপনি ঘোড়ার ডিম জানেন জাহাপনা। আমি এখন আপনার প্রিয় বুদ্ধিজীবি আলাওলের ভয়ে ভীত। রাজা উত্তরে বললেন যে আলাওল একজন জাত পণ্ডিত এবং তাঁর সম্পর্কে ভয় করার কোন কারণ নেই। রাণী উত্তরে বললেন যে আলাওল এখানে এসেছেন তার সঙ্গে একাকী দেখা করতে। খারাপ অভিপ্রায় নিয়ে। কিন্তু রাণী আলাওলকে লকারে আটকে রেখেছেন। এখন তিনি রাজার কাছে বিচারের চান। সস্তব্ধ ক্ষুব্ধ রাজা হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন এবং চেঁচিয়ে অভিযুক্ত আলাওল এখন কোথায় জানতে চাইলেন। রাজা আল্লাহর নামের শপথ নিয়ে বললেন যে আলাওল যদি সত্যি সত্যি এসে থাকেন তবে দুনিয়ার কোনো শক্তি আজ থাকে রাজার হাত থেকে বাচাতে পারবেনা। আলাওল রাজা ও রানী মধ্যে কথাবার্তা সব শুনেছেন। তিনি প্রায় অজ্ঞান এবং চরম ভয়ে কখনযে আলমারির ভিতর প্রস্রাব করে বসেছেন তা খেয়াল করেন নি। তরতরিয়ে শুধু কাপছিলেন। তিনি যেন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলেন যে এটা তার জীবনের শেষ দিন। শেষবারের মতো আল্লাহর কাছে তওবা করে রাখলেন।.এদিকে রাজা তখন শুধু আহত বাঘের মত গর্জন করছিলেন।
এবার রাণী রাজাকে শান্ত হয়ে তার পাশে বসতে বললেন। তারপর তিনি রাজাকে বললেন যে এমন চিন্তা কিভাবে রাজার মাথায় আসে যে যে আসে তার প্রিয় আলাওল একা তার রাণীর খাস কামরায় আসতে পারেন? কার কাঁধে এতো বড় মাথা যে এমন চিন্তা করবে। একা রাজার প্রাসাদের মধ্যে প্রবেশ করবে। রাণীর খাস কামরায় চলে আসবে। রাজা কিভাবে এমন চিন্তা করতে পারলেন। কিভাবে বিশ্বাস করলেন। রাজা লজ্জা পেলেন এবং রাণীকে বিশ্রাম নিতে বলে
খাস কামরা ছেড়ে চলে গেলেন।
মহারাণী এবার আলাওলকে আলমারি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বললেন। আলাওল নতুন জীবন পেয়ে খুশিতে বাচ্চাদের মতো নাচতে নাচতে বেরিয়ে এলেন। কন্ঠে তার একটি নতুন কবিতা। আলাওল আবৃত্তি করছিলেন '' the women and only women can make u to live or cause u to die ''
মহারাণী এবার রাগে অগ্নিবর্ণ ধারণ করলেন। বললেন, আলাওল মশাই! আপনি এবার আরো বড়ো ভুল করছেন। আপনি শিরক করছেন। মনে রাখবেন, জীবন মৃত্যুর মালিক কেবল আল্লাহ। মহারাণীকে নয়, আল্লাহকে ভয় করুন।
বুদ্ধিজীবি আলাওল আবারো একটা ধাক্কা খেলেন। মহারাণীকে ধন্যবাদ দিয়ে স্বসম্মানে বাড়ি ফিরলেন।
(গল্পটির কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই।)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




