ইনবক্স অণুকাব্য : ২ : হাসান মনজু
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নন্দিনী এখন সুখের প্রাসাদে বন্দিনী
শ্বেত পাথরে পা
সোনার পালঙ্কে গা
কোনো এক অক্টোবরের ঘূর্ণিঝড়
উড়িয়ে নিয়ে গেছে অর্ক'র বাড়িঘর
এখন দুই মেরুতে পরস্পর
আজো মনে মনে টিনএজার দুরন্ত অর্ক আর অভিমানী নন্দিনী
ভ্রমনের গতিপথ জেনে পথের ধারে
কখনো দেখা হয় খেয়া পারাপারে
সতীর্থের দৃষ্টি এড়িয়ে এখন তখন,
পৃথিবীর কোনো কার্ডিওলজিষ্ট
বুঝতে পারেনা তাদের
অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন
এখনো আগের মতই অটুট
অর্ক'র দূর্বার ব্যাকুলতা আর
নন্দিনীর ভীরু চপলতা
প্রযুক্তির উৎকর্ষতায়
এখন আত্নিক সংযোগ ইনবক্স.......
ইনবক্স : ২ :
নন্দিনী, তুমি এসেছিলে কবিতার ছলে
কবিতা এসেছিলো সদলবলে
নিষ্টুর ডকাতের ছদ্মবেশে
আমার সর্বস্ব লুটে শেষে
বললে, চিনেছো আমায়
একা ছিলাম রাস্তায়
তুমিও কবিতার সাথে নিমেষে
ঙফিরে গেছো মুচকি হেসে
কাছে থাকো বলেছি বারবার
কখনো সময় হয়নি তোমার
এখন অলীক বিভ্রম নেই শূণ্যতা অপার
কবিতারাও বৈরী আমার
কবিতা নেই তুমি নেই
আছে শুধু জীবনের দায়ভার
-ইদানিং আমার সব কিছুকে কেমন যেনো ভয় করে অর্ক
পাথরকুচি বোতলের নীলচে সবুজ জলে জালি জালি অসংখ্য সাদা শিকড়
আমার চোখে চোখে তাকিয়ে
কি যেন খোঁজে, মনে হয় আমাকে জড়িয়ে ধরতে চায়
অক্টোফাসের মত আষ্টেপৃষ্টে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ঢাউস মেঘেরা আজ
আকাশের বারান্দা ধেকে নেমে
ভীর জমালো উপত্যক্যায়
হেয়াললিতে দু' একটি বৃষ্টির
বর্ষা্ও ছুঁড়লো,জলের ফোঁটয় নেমে এলো আলোস্য
ভেবেছিলাম ভরপেট ঘুমাবো
বিকেলে নূতন কবিতা শোনাবো
হ্যালো অর্ক হ্যালো
বলো নন্দিনী
পাহাড়ের বুকে মেঘ জমেছে
বৃষ্টি হওয়ার নালিশে
মেঘেদের দাবি ঘুম হবে সে
জলছবি আঁকা বালিশে
নন্দিনী,চোখের পাতারাও
কাল রাতে বিদ্রোহ করলো
কিছুতেই এক হতে চাইলো না
নিদ্রা দেবীর বশীকরণ,
কোয়ান্টাম,মেডিটেশন
কিছুতেই কিছু হলোনা
কেনো অর্ক আজকাল এমন হচ্ছে কেনো ?
নন্দিনী,বুকের বাম পাশ্বের পতিত জমিতে ভালবাসার বীজ বুনেছিলাম
-বাগান কেমন হলো ?
বিশ্বাস ঘাতক বন্যা দু' কুল ভাসিয়ে নিলো
বানভাসিতে তথৈবচ বাগান বীজতলা
বিপর্যস্ত,বিস্রস্ত এলোমেলো
-বন্যার কোনো কান্ডজ্ঞান নেই
এ জমিতে ভালবাসা হয়না অর্ক
তুমি অন্য বীজ বুনো
=নন্দিনী তোমার দেওয়া বীজ অঙ্কুরিত হলো,
বুক ফুঁড়ে দু' টি সবুজ পাতা দিলো
কালে কালে সে যন্ত্রণার বীষবৃক্ষ
মহীরূহ হলো
এখন সে বীষবৃক্ষে কবিতা হয়ে ফোটে
কবিতার ফুল
নন্দিনী,এ জীবন ছেড়ে আমি পালাতে চাই
এর দেয়ালে দেয়ালে অসহ্য
স্মৃতির পেরেক পোঁতা
-তোমাকে এখনো অনেক ভালবাসি অর্ক
=এত বছর পর এতো স্পষ্ট উচ্চারণে কেন বল্লে কথাটা ?
শুনে আমার শরীর এলিয়ে এলো
দৃষ্টি ঝাপসা,শরীর অবস,মন চিন্তাশূণ্য বিস্মৃতি নেমে আসছে
নন্দিনী,জীবন বড় ছোট
দ্রুত ফুরিয়ে যায়
তুমি বলেছিলে ভৈরবী হবে
আমি হব সন্ন্যাসী
একটি কথাও রাখোনি তুমি
এবার আমি মরতে চাই প্রাণপনে
মৃত্যুর দীর্ঘ য়াত্রায়
জড়িয়ে থাকতে চাই
তোমার গভীর আলিঙ্গনে
চলবে~~~~~~~