somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছবি ব্লগ । আর স্মৃতির এক ফোল্ডারে প্রিয় মনু রেল স্টেশন

০১ লা মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শীত শেষের ফুলেল গপ্পো ।









ভ্যালেন্টাইনের ফুল নয়, তাতে কি সৌন্দর্যে একটুও কম নয় ।









“চোখে সর্ষে ফুল” দেখে খারাপ তো লাগেনি । বরং মনটাই ভরে গেছে ।







গতি দানব ।
আগমন ......



দানবীয় রূপ......



প্রস্থান......



ট্রেন দেখলেই । আমার বেশি মনে পড়ে বিভিন্ন সময়ে আমার ট্রেন মিস করার । আর সেটা মনে হলেই একটা গান ও খুব মনে পড়ে স্করপিওন্সের ।

“Don't be lazy man and work off your ass.
He's the boss you've gotta do what he says!
Catch your train, run and forget those ways.
Keep it cool it's not too late! ”

সান্ত্বনাঃ আমার মত ট্রেন মিস করা অলস আছে বিশ্বজুড়ে বর্তমান।

জেলে >>> মাছ (ধাপে ধাপে)









এই স্টেশনটা দেশের সবচেয়ে অবহেলিত স্টেশনগুলোর একটা ।



শৈশব, কৈশোরে আমার নানা বাড়ি মানেই এই মনু স্টেশন । তখন রাস্তাঘাট তেমন ভালো ছিলোনা তাই এই অঞ্চলের একমাত্র বাহন ট্রেন (তাও লোকাল ট্রেন) আর সেই সুত্রে এই স্টেশন । আশেপাশের দুই-তিনটি ইউনিয়ন ও চা বাগানের যাত্রীদের জন্য হাতেগোনা কয়েকটি লোকাল ট্রেন এখানে থামত, মিক্স ট্রেন, কুশিয়ারা, জালালাবাদ ......। এই স্টেশন এতই অবহেলিত যে আমার মনে হয় যার কারনে এর স্টেশন মাস্টার কখনো বদলী হননি । আমি সেই থেকে একজনই স্টেশন মাস্টার দেখে আসছি । খোশ মেজাজি, বিনয়ী ও ভালো মানুষ ।



জায়গা, অবস্থানগত কারনে কোন ধরনের সিগন্যালের বেবস্থা নেই । তাই ক্রসিং হয়না(নিয়মিত রেল যাত্রীরা এই বরিক্তিকর শব্দের সাথে পরিচিত থাকবেন)। কোন ধরনের ফোন নেই তাই অন্য স্টেশনের সাথে কোন যোগাযোগ ছিলোনা তাই কখনই যাত্রীরা জানতে পারতেন না যে ট্রেনটি দেরী করছে সেটি আর কতক্ষণে এসে পৌঁছাবে। এ যেন দীর্ঘ বিরক্তিকর প্রতীক্ষা ।

ছেলেবেলার লাল স্টেশনগুলো এখন আর নেই প্রায় । নতুন ডিজাইনে সংস্কার হচ্ছে সব স্টেশন । এই স্টেশনটি এখনো লাল । নস্টালজিক “লাল স্টেশন”





এই অবহেলিত স্টেশনটি ব্রিটিশ আমলে এতটা অবহেলিত ছিলোনা । বরং এর বাণিজ্যিক গুরুত্ব ছিল । পাশের স্টোর হাউজটি আজো তারই সাক্ষী দিচ্ছে । পাশের মনু নদী হয়ে ভারত থেকে আসতো পন্য সামগ্রী, মনু স্টেশন হয়ে ছড়িয়ে যেত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। দেশ ভাগের পর আস্তে আস্তে হারিয়ে যায় এর গুরুত্ব। মাঝে মাঝেই গুজব কানে আসত এই বুঝি বন্ধ হয় বলে স্টেশনটি।





সাম্প্রতি আবার মনু স্টেশন তার অস্তিত্বের জানান দিয়ে ছিল । মনু নদীর (নদীর পাড়েই স্টেশন) উপরে যে সেতু তাতে বাঁশ দিয়ে আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা জোড়া তালি দিয়ে ছিলেন । তাতেই মিডিয়ায় তোলপাড় আবার আলচনায় মনু স্টেশন।



বুঝলাম না পরে বাঁশের অংশটি তুলে দিয়ে কাঠ দিয়ে মেরামত করাতে কি এমন মহাভারত শুদ্ধ হয়ে গেল । ছবি দেখে এর কিছুটা বুঝতে পারবেন।



শত অবহেলায় ক্ষয়ে ক্ষয়ে চলা অখ্যাত এ স্টেশনটি আমার স্মৃতির পুরোটা জুড়েই থাকবে । আমি বলতে শিখিনি রেলগাড়ি কিংবা ট্রেন, শিখেছি লম্বা গাড়ি। বাবা চাকুরি করতেন ফেঞ্চুগঞ্জে ৭ টি স্টেশন পরেই কাঙ্ক্ষিত মনু স্টেশন । মাইজগাও, ছকাপন, লংলা, টিলাগাও, কুলাউড়া স্টেশনগুলো কিভাবে ভুলা যায় !!! এই স্টেশনে নেমেই শিহরিত হতাম - এসেগেছি নানা বাড়ি, আমার স্বর্গ । যেখানে আজো বার বার যেতে চাই । ফেরার পথে সকাল সাড়ে আট টায় কুশিয়ারা ট্রেন । স্টেশন মাস্টারের হাসি । কটাকট টিকেটে সিল মারা । ট্রেনের আসা, খুব অল্প সময় থেমেই যাত্রীদের কোলাহলের মধ্যে বিকট এক হর্ন বাজিয়ে আবার ছুটে চলা। নানা বাড়িছেড়ে যাওয়ার কষ্টটা (যেটা কণ্ঠ পর্যন্ত এসে অস্বস্তি দিতে থাকে) ঝিক ঝিক শব্দের সাথে সাথে সেটা মিলিয়ে যায় । এই স্টেশনটি ও হয়ত কখনো সংস্কার হবে নয়তো বাতিল । তাতে গুরুত্বপূর্ণ কাজের কাজ কিছুই হবেনা । তাই এটি নস্টালজিক লাল রঙে পুরনো স্টেশনের সাক্ষী হয়েই থাক । আমি অন্তত তা ই চাই।

আমার হাসি কান্নার শৈশবের লাল রঙের মনু স্টেশন।






ফক্রেঃ Aklis Ahmed and Meah Md. Sharif

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪২
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×