যা পড়েছি
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনলাইনে মোটামুটি ২০ টি বই এর পিডিএফ লিংক ছড়িয়ে পড়ে এবং বলা যায় ভাইরাল হয়ে যায় দাবি করা হয় এই বইগুলো নাকি মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস জানতে সহায়তা করবে, সেখান থেকে কয়েকটি খুব গুরুত্তপুর্ন বই পড়ে শেষ করি। বই গুলো হচ্ছে "উইটনেস টু সারেন্ডার(সিদ্দিক সালিক)" ,''আমার ফাসি চাই(সাইদুর রহমান রেন্টু)'', ''জাসদ এর উথান পতনঃ অস্তির সময়ের রাজনিতী(মহিউদ্দিন আহমেদ)", ''রক্ষীবাহিনীর অজানা অধ্যায়(কর্নেল সরোয়ার)'' এছাড়া আমার সংগ্রহে থাকা পুরনো অনেকগুলো বই আবার পড়ে শেষ করেছি এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ''বাংলাদেশ লিগ্যাসি অফ ব্লাড(এন্থনি মাসকারেনহাস)'' রজনৈতিক উপন্যাস ''দেয়াল(হুমায়ুন আহমেদ)''
সংগ্রহ করেছি কিন্তু এখনো পড়া হয়নি ''চরমপত্র(এম আখতার মুকুল)'' ''মুলধারা ৭১( মইদুল হাসান)'' ''From third world to first, The singapore story(lee kuan yew)''
ফেসবুক এ প্রবাসী লেখক,দার্শনিক(স্বঘোষিত) মুরাদুল ইসলাম যিনি সম্ভবত গত ২০/২১ জুলাই এর দিকে ডা, ইউনুস এর বাংলাদেশের পরবর্তী সরকার প্রধান হবার ভবিষ্যত বানী করেন। এছাড়া দৈনিক বনিক বার্তাতে প্রকাশিত সাবেক অর্থমন্ত্রী লোটাস কামাল এর নিজস্ব লোক দিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে মনগড়া, বানোয়াট পরিসংখ্যান বানিয়ে দেশবাসীকে বোকা বানানো নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্টটি আমাকে হতবাক করেছে।
প্রতিক্রিয়া
আমার মতে এ্যান্থনি মাসকারেনহাস বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে সবচেয়ে নির্মোহ বিশ্লেষন করতে পেরেছেন। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর জননায়ক থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ওঠার ব্যার্থতা কিভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসের গতিপ্রকৃতিই পরিবর্তন করে দিলো সেটি তার নির্মম সমালোচনা আর নির্মোহ বিশ্লেষনে উঠে এসেছে।
জেনারেল নিয়াজির প্রেস সেক্রেটারী সিদ্দিক সালিক এর বইটি অন্যান্য অনেক পাকিস্থানী সমরনায়কদের তুলনায় কম বর্নবাদী(বিট্রেয়াল অফ ইস্ট পাকিস্তান, স্ট্রেঞ্জার ইন মাই অউন কান্ট্রি দ্রষ্টব্য )যদিও তিনি বাংলাদেশে সংঘটিত ধর্ষন কান্ডের অফিসিয়াল সংখ্যা জানিয়েছেন ৯ টি ।
আমার ফাসি চাই খুব সম্ভবত এই মুহুর্তে দেশের সবচেয়ে আলোচিত বই, তাই বিশেষ কিছু বললাম না তবে, বইটি সুলিখিত নয় এবং রেন্টু সাহেবের দেয়া অনেক তথ্যই তার নিজের বিশ্লেষনে ভুয়া বা অসার বলে প্রমানিত হয় তবে শেখ হাসিনার দাম্পত্য জীবন এর ঘটনাবলী বেশ কৌতুহলোদ্দীপক।
গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন আহমেদ এর লেখা জাসদ এর উথান পতন বইটি এত তথ্যবহুল ও সুলিখিত যে, এটি পাঠ করার সময় আমার মনে হয়েছে কোন থ্রিলার উপন্যাস পড়ছি। অর্থনৈতিক মুক্তি আর বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে যে বাংলাদেশের পথচলা শুরু হয়েছিলো ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে তা এখনো বাস্তবায়িত হলো না তার সবচেয়ে বড় কারন জাসদ এবং তার লাল সন্ত্রাস।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রক্ষী বাহিনীর উপপরিচালক কর্নেল সরোয়ার এর বইটি বেশ ক্ষীনবপু,রক্ষী বাহিনী নিয়ে ওঠা রাজনৈতিক প্রশ্ন বা প্রচার/অপ্প্রচার এর জবাবও তিনি সেভাবে দেন নি।
২০১৫/১৬ সাল থেকেই বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেশ উর্ধ্মুখি এমনকি লোটাস কামাল দায়িত্ব নেবার পর ২০/২১ সাল এ এসে সেটি ভারত কে সরিয়ে দক্ষিন এশিয়া অঞ্চল এর প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি তে পরিনত হয়(পরিসংখ্যান গত) কিন্তু জিডিপির এই একটানা বৃদ্ধি যে পরিমান কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ নিয়ে আসার কথা সেটি কিন্তু হয় নি, বরং সরকার দেশী বিদেশী উৎস থেকে ক্রমাগত ঋণ নিয়ে ও টাকা ছাপিয়ে দেশের অর্থনিতীর বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে এবং সাম্প্রতিক খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যে অসহনীয় মুল্য বৃদ্ধি সেটি ব্যবসায়ীদের কারসাজীর চেয়েও যে সরকারের ভুল পলিসীর কারনে বেশী হয়েছে সেটি বনিক বার্তার অসাধারন সেই প্রতিবেদনটিতে প্রমানিত হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ২:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




