somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন সুন্দরবন নিয়ে যাই। তবে সবার থেকে টিকিট হিসেবে অনেক অনেক ভোট চাই!! - শেষ পার্ট

০৫ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পার্ট দুই তে বলেছি সুন্দরবনের জলপথগুলোর কথা। এবার ভেতরটা দেখাই। ওপরের ছবিটা সুন্দরবনের একটা অন্ধগলি। এখানে শ্বাসমূল দেখতে পাবেন। জোয়ার আসলে গাছের সবুজ মাথাগুলো ছাড়া সব ডুবে যায়।

সুন্দরবনের অন্যতম বিশেষত্ব শ্বাসমূল, গোলপাতা আর স্যাতস্যাতে বালুমাটি। ওর উপর দিয়ে চিকন সাঁকো করা থাকে। সেখান দিয়ে হেঁটে ঘুরতে হয় বনের ভেতর।





সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে হেঁটে গেলে কচিখালি বিচ পাওয়া যাবে। কক্সবাজারের সাথে এই বিচটার ভিন্নতা হলো এই বিচে একেবারেই কাঁদামাটি। তবে বিচের ওপর ঢেউয়ের মতো আছে ধবধবে সাদা বক আর সামুদ্রিক পাখি, অজস্র ধবধবে সাদা শামুক আর ঝিনুক... অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য!



সুন্দরবনের একাংশ সিডরে একেবারে মুচড়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপ দেখলে অদ্ভুত হাহাকার লাগে...



এরপর কটকা বিচে গিয়েছিলাম। এই বিচ কক্সবাজারের মতোই একদম! খোলামেলা আর বিশাল!







এরপর গিয়েছিলাম একটা অভয়ারণ্য আর প্রজনন কেন্দ্রে। এখানে বানর, কুমির আর হরিণের অবাধ বিচরন আর নিশ্চিন্ত জীবনের নিশ্চয়তা থাকার কথা হলেও হরিণগুলো ক্ষুধার্ত থাকে, খাবার পায় না। বড় তারবেড়ায় আটকানো থাকে। বানরেরা একমাত্র গাছে গাছে ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ায়। একটা কাঠের চিকন ব্রিজ আছে বনের ভেতর। ওটার উপর দিয়ে বনে ঘোরা যায়। ওটায় হাঁটলে আশেপাশে অসংখ্য বানর এসে হাজির হয়। হরিণদের-ও ছেড়ে দেয়া হয় বনে মাঝে মাঝে। তবে রক্ষনাবেক্ষণে অনেক সংস্কার প্রয়োজন এদের। চলুন ঘুরিয়ে আনি আপনাদের ওখান থেকে এবার...















আমরা গিয়েছিলাম শীতের সকালে। তাই কুমিরেরা রোদ পোহাচ্ছিল। বানর দেখুন আরামে খাঁচায় ঘুম দিয়েছে!

সুন্দরবনের এতোকিছু দেখবেন আর পিঁপড়া দেখবেন না কেন?এখন একজন সুন্দরী পিঁপড়া দেখুন। এরা ফুলের মধু খায়...



এরপর আমরা নৌকা আর স্পিডবোট নিয়ে সুন্দরবনের আনাচকানাচ ঘুরেছি অনেক।



হরিণ দেখেছি বনে, বন্য শূয়োর দেখেছি আর শেয়াল দেখেছি। নৌকা খুব গভীরে গেলে ইঞ্জিন বন্ধ করে দিতেন মাঝি। ছবি তুলতে পারি নি কারন নৌকা বা স্পিডবোট থামে নি। কিন্তু তখন হাজার-হাজার পাখি আর বিচিত্র প্রজাপতি আর ফড়িং দেখেছি। এতো রঙের পাখি-প্রজাপতি-ফড়িং আগে দেখিনি! কিচিরমিচিরে কান ঝালাপালা! এরপর একটা হুংকার-ও শুনেছি। মাঝি আর গানম্যানরা বাঘ ভেবে নৌকা তাড়াতাড়ি লঞ্চে নিয়ে গেছেন। কিন্তু পরেও আবিষ্কার হয় নি যে ওটা কিসের হুংকার! এটুক বলতে পারি যে এমন গা শিহরণ দেয়া ট্যুর আমার জীবনে প্রথম! এতো এতো অভিজ্ঞতা একসাথে অন্যকোথাও পাই নি!



এটা আমার সুন্দরবন থেকে মংলা ফেরার পথে শেষ সূর্যাস্ত। প্রচন্ড মন খারাপ হয়েছিল। একেবারেই আটপৌরে জীবন ছেড়ে অমন একটা জিপসী জীবন কেমন যেন অন্যরকম অসাধারণ!



এরপর মংলা পোর্ট আর তারপর বিরক্তিকর মেশিন-জীবন ঢাকায় ফিরে আসা! ঢাকায় এসেও ৩-৪ দিন লঞ্চের দুলুনি পেয়েছি ভেতরে। সকালে ঘুমভেঙে জানালা দিয়ে তাকালে অশেষ সমুদ্রের নীল পাই নি, অদ্ভুত সুন্দর সোনালী জলমাখা সূর্য পাই নি! তখন বুঝেছি কী আশ্চর্য একটা সময় পেরিয়ে এলাম!

অনেকেই কক্সবাজার গিয়েছেন কিন্তু সুন্দরবন যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাদের জন্য আমার এই তিন সিরিজ-পোস্ট। আপনারা কিছুটা হলেও ধারনা পাবেন সুন্দরবন কেমন। একটু তো দেখলেন! এবার তাড়াতাড়ি ভোট করে ফেলুন তো! এক্ষুণী!! :)






পার্ট এক

পার্ট দুই

**ছবি সংক্রান্ত কথা : এখানের আপলোডেড ছবিগুলো সিলেকটিভ, অনেক রিসাইজড আর লো-কোয়ালিটির। নাহলে একসাথে আপলোড করতে পারতাম না। কেউ ঝকঝকে ভার্সন দেখতে আগ্রহী হলে আপনার ফ্লিকার একাউন্ট লিংক বা ইমেইল এ্যাডরেস দিবেন। আমি অরিজিনাল ছবি দেখাতে পারবো তাহলে। সবাইকে ধন্যবাদ।**
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৩৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×