somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাষা আন্দোলন, মূর্তিপূজা আর খানিকটা পাকিস্তানী মনস্তত্ত্ব

৩০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্থানীয় হাই স্কুল পেরুবার সময় আমরা দেখলাম একটা শহীদ মিনার। কোথাকার কোন ভাষা আন্দোলনের সময় নাকি ঢাকার দুই তিনজন ছাত্র মারা যায়... তারপর থেকেই হিন্দুয়ানী বাংলার প্রতিটি স্কুলে স্কুলে শহীদ মিনার গজায়। জিনিসটার একটু বর্ণনা দেই। মিনারের পাদদেশে আছে একটি কবর। প্রতিদিন সকালে মিনার প্রদক্ষিন একটা রিচুয়াল। খালি পায়ে, হাতে ফুল নিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নিতে হয়।

"ইস্ট পাকিস্তান টু বাংলাদেশ"
-ব্রিগেডিয়ার সাদুল্লা খান, হিলাল ই জুরাত।

এই জেনারেল সাহেব একাত্তরে কিশোরগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে তার মনোভাব তুলে ধরলাম।
একজন পাকিস্তানী জেনারেলের বইতে এর থেকে বেশী আর কিই বা আশা করা যায়। "শহীদ মিনারের পাদদেশে কবর" এই ধরনের কথা জীবনেও শুনি নাই। একজন পাকিস্তানী মানুষের কাছে এর থেকে বেশী আর কিইবাঁ আশা করা যায়। বেচারা তার বর্বর, মাথামোটা, অশিক্ষিত, মূর্খ, ইতর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেছে মাত্র। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রত্যেক পাকিস্তানী ঠিক এভাবেই চিন্তা করে।

আমার এক আত্মীয় একবার পাকিস্তানে গিয়েছিলেন সেখানে এক তরুণের কাছে জানতে চেয়েছিলেন একাত্তরে কি হয়ছিলো। সে উত্তরে বলে হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ। মুজিবের গাদ্দারির কারণে হিন্দুরা সফল হয়েছিলো। সেই আত্মীয় বললেন তুমি ভুল করছো বাংলাদেশ মুসলমান কান্ট্রি। সেই সময় অনেক মুসলমানও মারা গিয়েছিলো। সেই তরুণ চোখ টিপে বলল তারা কি হিন্দু ছিলো না মুসলমান ছিলো সেটা কি তুমি "লুঙি উতারকে দেখা"। আত্মীয় খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলেন আমার এক পরিচিত মুসলমানকে তখন মেরে ফেলা হয়েছিলো। সেই তরুণ বলে, এটা অসম্ভব। হয় তোমায় পরিচিত মানুষ ভুল ইসলামের চর্চা করতো, অথবা তাকে আমরা মারিনি মেরেছে ইন্ডিয়ার সৈনিক। আমাদের সেনাবাহিনী ভুল করতেই পারে না। তুমি ইতিহাসের কিছুই জানো না...

পাকিস্তানীদের মনসতত্ত্ব এমনই। যাই হোক, যা বলছিলাম। এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারির কিছু আগে দেখলাম আমার কিছু পরিচিত ছোটভাই "শহীদ মিনার মূর্তিপূজা..." "শহীদ মিনার ভেঙে ফ্যালো..." টাইপ প্রবল উগ্র মৌলবাদী ধ্বংসাত্মক লেখা শেয়ার করছে। আমি তাদের ডেকে ভাস্কর্য আর মূর্তির পার্থক্য বোঝানোর চেষ্টা করলাম। খুব হাল্কা ভাষায় বোঝাতে চাইলাম কালচার আর রিলেজিয়ান ল্যাজেগোবরে করে ফেললে হবে না। শহীদ মিনার আমাদের আবেগের যায়গা এটা নিয়ে উল্টা পাল্টা করলে মানুষই সাইজ করে দেবে।

তেমন একটা সুবিধা করতে পারলাম না, আমার একগাদা হাদিসের রেফারেন্সের বিপরীতে সে আমাকে কেয়ামতের দিন সত্তুরটা মুসলমানদের দলের একটা দল জান্নাতে যাবে এই হাদিস ধরিয়ে দিয়ে প্রস্থান করলো।
আজ লেখাটা পড়তে গিয়ে মনে পড়লো সেই ছেলেটার কথা।

ব্রিটিশ চলিয়া গিয়াছে তবু তাহাদের দ্বিজাতি তত্ত্ব আজও মানুষ মারিতেছে,
পাকিস্তান চলিয়া গিয়েছে তবু তাদের ঔরসজাত পাকিমন পেয়ারুরা আজও আমাদের বিভক্ত করিয়া চলিতেছে।

লাস্টে একটা জোকস বলি।
এক পাকি মেজর ফ্যান পরিস্কার করার জন্য তার সদ্য বার্ণিশ করা টি-টেবিলে ওপর কাঁদামাখা জুতো নিয়েই উঠে পড়লেন।
স্ত্রী বলিলেন;
"টেবিলের ওপর একখানা কাগজ বিছাইয়া লইলেই তো পারো..."

সহাস্য মেজর সাহেব কহিলেন;
"বোকা মহিলা, আমি তো এমনিতেই নাগাল পাইতেছি..."
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×