somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কৈশোরে গাণিতিক-ডাল্টনিক নিয়মে কবিতা/ উদ্ভট শিল্প লেখার অপচেষ্টা

২৬ শে নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই পোস্টটি কাল রাতে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু মেজাজ প্রচণ্ড খারাপ থাকায় আর ইচ্ছে করেনি।।। মানুষের মন ও মেজাজের লেখচিত্র sinx এর মত হওয়া উচিৎ।এতে করে মাঝে মাঝে মন-মেজাজ খারাপ হলে মন ভালো থাকার গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।।। সুতরাং, " শুভ মেজাজ খারাপ"।।।

এসএসসি পরীক্ষার পর বন্ধু-বান্ধব সবাই কোচিং করতে ঢাকা চলে আসলেও আমি বাসাতেই থাকি, কেননা আমার মা আমাকে ঠিক কোনকালেই একা ছাড়তে ভরসা পাননি, পাছে কোন সমস্যায় পড়ি এই আশঙ্কায়।। কিন্তু বাসায় রইলাম মানে তো আর পড়ার সঙ্গে সম্পর্কহীন হওয়া নয়।। তাই নটরডেম প্রস্ত্ততি নিতে হচ্ছিল ঘরে বসেই। কিন্তু আমি ঠিক কখনোই নিয়ম করে পড়তে পারিনি, বিশেষত নিয়ম মানাটা যেখানে বেশি জরুরী।। তাই পড়তে বসলেই নানাবিধ উদ্ভট পরিকল্পনা মাথায় জেকে বসত। ইতিমধ্যে আমার কাব্যের ঘোড়ারোগের আরোগ্য লাভ হয়েছে, যদিও রোগটা কাব্য থেকে এক্সপেরিমেন্টাল লেখাতেই স্থানান্তরিত হচ্ছিল ক্রমশ। সেসময় পদার্থ বিজ্ঞানে নিউটনের গতিসূত্রাবলী-রসায়নে ডাল্টনের পরমাণুবাদ পড়তে পড়তেই হঠাৎএকদিন ভাবলাম, আচ্ছা ডাল্টনের মত কিছু স্বীকার্য তৈরি করে কোন কবিতা যায় না? সেই ভাবনা থেকেই রসায়ন বই সামনে নিয়ে লিখে ফেললাম ডাল্টনিক কবিতা।।।একটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন,সেই শৈশবকাল থেকে মহাকবি মাইকেল মদুসূদন দত্ত আমার ভাবনার একটি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছেন।।
আগে কবিতাটি লিখি, তারপর স্বীকার্যগুলো নিচে উল্লেখ করব:

"রাত্রি বরণ"
রাত্রি হলেই বিবর্ণ হয়ে ঘনিয়ে আসে আঁধা
রাতের ছোয়ায় প্রকৃতিরই বদল হয় সুর।
রাত যেন সুমধু
রহেনা'ক প্রাণ দেহের মাঝে, হয় লোভাতুর।
রাত্রিতে সব নিথ
রাশি রাশি শুধু আকাশ জুড়ে তারার সম্ভার।
ঞ্জিত রঙে রসালের বেশে কী ভীষণ জোরে
রুক্ষতা ছেড়ে মোলায়েম হয়ে , আসে মনোহরে
রূপ যেন তার পার্থিব কোন কল্পিত গড়নে
রেশ পেয়ে তাই অবসান ঘটে সকল দম্ভে
রাত্রির এই নিস্তব্ধতায় সবকিছু দুস্ত
রাঙিয়ে দিয়ে প্রকৃতিকে প্রকৃতিকে সব করে সুমধুর

য়ে চলে কোন সুরের লহরী, শুনি তার কলর
বহতার টানে লোভাতুর প্রাণ থাকেনা'ক নীর
বাড়ন্ত সম্ভারে তারায় তারায় হঠাৎ মহোৎস
বর্ণালী আলো আর মনোহরী সাজের দীর্ঘ সদ্ভাব।
বল দেখি কোন দম্ভের জোরে রাত হয় সৌষ্ঠ
বেজে উঠে ঐ সুমধুর সুর_ভেঙ্গে দিয়ে কলর।।।

ডাল্টনের অনুসরণে কবিতার স্বীকার্যসমূহ:

১. কবিতার দৈর্ঘ্য হবে ১৮ লাইন। এই ১৮ টি লাইন ২:১ অনুপতে বিভক্ত হবে ।

২. মাত্র ২টি বর্ণ দিয়েই সম্পূর্ণ কবিতা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। অর্থাৎ ১ম ১২ লাইনের ক্ষেত্র প্রতিটি লাইনের প্রথম ও শেষবর্ণ একই হবে। (আলোচ্য কবিতার বর্ণটি "র")

৩. শেষ ৬ লাইনের ক্ষেত্রে অন্য একটি বর্ণ প্রতিটি লাইনের প্রথম ও শেষ বর্ণ হবে।।। (আলোচ্য কবিতায় বর্ণটি "ব")।

৪. কবিতার শিরোনামও হবে এই দুই বর্ণভিত্তিক । (আলোচ্য কবিতার শিরোনাম " রাত্রি বরণ"।।)

. ১ম লাইনের ছন্দমিল থাকবে ৬ষ্ঠ লাইনে। ( এ কবিতায় আঁধার- সম্ভার)এবং ২য় লাইনের ছন্দমিল ১২তম লাইনে।।। (এ কবিতায় সুর-সুমধুর)।।।

৬.১ম লাইনটি কবিতার ৬ষ্ঠ লাইন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করবে, এবং ২য় লাইনটি কবিতার ৭ম থেকে দ্বাদশ লাইন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করবে।।। অর্থাৎ কবিতার প্রথম লাইনটি হবে একটি অবস্থা, এবং ২য় লাইনটি হবে সেই অবস্থার একটি পরিণতি বা ঘটনার নাম।।এভাবে ১ম ২ লাইনই সম্পূর্ণ কবিতার নিয়ন্ত্রক হবে।।।

৭. কবিতার শেষ ছয় লাইন হবে ১ম বার লাইনের সারমর্ম বা ভিন্নাঙ্গিক উপস্থাপন।।

৮. প্রথম ১২ লাইনের প্রতিটি জোর লাইনের শেষ শব্দটি শেষ ৬লাইনে ক্রমানুসারে স্থান পাবে ( আলোচ্য কবিতার শব্দগুলো সুর, লোভাতুর,সম্ভার,মনোহর,দম্ভের,সুমধুর
)

৯.পুরো কবিতার বর্ণসংখ্যাকে ৫টি সুনির্দিষ্ট শব্দকাঠামো মেনে চলতে হবে। এই শব্দ কাঠামোকে A, B, C,D, E এই ৫টি প্রতীক দিয়ে প্রকাশ করা হবে।।
A=১৮টি বর্ণ , B=১৭টি বর্ণ, C=৮টি কর্ণ, D=১৯টি বর্ণ, E =২০টি বর্ণ।।
( আলোচ্য কবিতার কাঠামোবিন্যাস AACBCBBBAABBDEDEAA)
..............এই ডাল্টনীয় পদ্ধতিতে ৪টির বেশি কবিতা লেখা হয়নি সেসময়।। পরবর্তীতে আরও ভিন্নধর্মী প‌্যাটার্ন নিয়ে কাজ করেছিলাম নটরডেমে পড়ার সময়, যেগুলো এই মুহূর্তে হলে নেই।।। তবে এই ধরনের স্বীকার্য এবং নিয়ম কানুন মেনে চলা অনেক দুঃসাধ্য বলে কোন প‌্যাটার্নেই ৪-৫টির বেশি কবিতা বা উদ্ভট কিছু (যা-ই হোক) লেখা হয়ে উঠেনি।।।








৫১টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×