আপনি কি ছাত্রলীগ বা আওয়ামীলীগের কর্মী?আপনি কি নিজেকে একজন নিবেদিত কর্মী মনে করেন?তাহলে এ লেখা কেবল আপনার জন্য।আমি জানি আপনার বিশাল হৃদয়ে বাংলাদেশ,শেখ মুজিব,হাসিনা আর জয়কে ধারন করে রেখেছেন।নিজের জীবন বা পরিবার ও আপনার কাছে তুচ্ছ তাদের জন্য।নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে আপনার একটু ও ভয় নেই।কারন আপনাদের মতো মানুষ আছে বলেই তো তারা শান্তিতে থাকতে পারে।
আমি বাংলাদেশের নাগরিক।আর তার প্রমান করার জন্য আমার কাছে আছে একটি জাতীয় পরিচয় পত্র আর আছে একটি পাসপোর্ট।আমি কোন দলের সাথে জড়িত নই।তাই আমার কোন চিন্তা ও নেই।কিন্তু আপনি তো ছাত্রলীগ বা আওয়ামীলীগ(কুত্তালীগ,ছাগুলীগ আমার নয় আপনাদের শত্রুদের দেয়া নাম)।আপনার তো আমার মতো কেবল জাতীয় পরিচয় পত্র বা পাসপোর্ট হলে চলবে না।আপনার একটি আইডি কার্ড লাগবে।সেটা হতে পারে হাসিনা বা জয়ের স্বাক্ষর যুক্ত।তা না হলে তো আপনার ই বিপদ।কেন?
সুমন দাস খুন হওয়ার পর ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ সুমনকে নিজেদের ‘কেউ নয়’ বলে অস্বীকার করেন! তার সাথে একই সুরে গলা মিলিয়ে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতারাও বলেছিলেন, ‘সুমন ছাত্রলীগের কেউ নয়’! এরপর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন অস্বীকার করেন আবদুল আলীকে! তার সাথে প্রায় একই সুরে গলা মেলালেন জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা।
সুমন দাস আপাদমস্তক একজন মুজিব সৈনিক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে লালিত ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন সুমন। সুমনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের টাইমলাইনই স্বাক্ষ্য দিয়েছিল, তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। যুদ্ধাপরাধীদের রায়ের পর জামায়াতের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে মিছিল কিংবা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ানের যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে সংবর্ধনা, সবখানেই পদচারণা ছিল সুমনের। তবু সুমনকে অস্বীকার করেছিল ছাত্রলীগ।
সুমনের মতোই আবদুল আলীকে ছাত্রলীগের কেউ নয় বলে দায় এড়ায় ছাত্রলীগ। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন আবদুল আলী ছাত্রলীগের কেউ নয়, এমন দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘মদন মোহন কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রম মদন মোহনে নেই। সুতরাং যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের সাথে ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’ আবদুল আলী কি ছাত্রলীগের কেউ নন? এমন প্রশ্ন তাকে করে শেষ করার আগেই জাকির তড়িৎগতিতে বলেছিলেন, ‘যে মারা গেছে, সে ছাত্রলীগের কিছু না।’!
এদিকে গত মঙ্গলবার খুন হন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রলীগ কর্মী কাজী হাবিবুর রহমান। নগরীর শামীমাবাদ এলাকার ছাত্রলীগ নেতা হুসাইন আহমদ সাগর গ্রুপ ছেড়ে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম তুষার গ্রুপে যোগ দেয়ায় হাবিবকে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। রাতেই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন হাবিব। তার মৃত্যুর ২৪ ঘন্টা না পেরোতেই তাকে অস্বীকার করা হয়েছে আওয়ামী লীগ থেকে। বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রলীগের কোনো ইউনিট নেই।’ তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, যেহেতু সেখানে ছাত্রলীগের কোনো ইউনিট নেই, সেহেতু কাজী হাবিব ছাত্রলীগের কেউ হতেই পারে না!
ইউনিট কিংবা কমিটি না থাকলে কেউ ছাত্রলীগ করতে পারে না? ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হতে পারে না? কিংবা মিছিল-সমাবেশ থাকলেই শুধু ছাত্রলীগ বলে গণ্য হবে, অন্যথায় হবে না? এমন প্রশ্নই ওঠছে ক্ষুব্দ সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে।
দায় এড়ানোর নির্মম মত্ততায় লিপ্ত নেতারা কি একবার খুন হওয়া কাজী হাবিবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঢুঁ মেরে আসবেন? দেখবেন কি ছাত্রলীগের কর্মকান্ডে হাবিবের জড়িত থাকার স্থির চিত্র? ২০১৫ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হাবিব ফেসবুকে লিখেন, ‘‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৬ বছর। ভাষা, মানচিত্র এবং উন্নয়নের জন্য সংগ্রাম, আওয়ামী লীগই পারে, আওয়ামী লীগই পারবে। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথেই থাকুন।’ হাবিব যদি ছাত্রলীগের কেউ না হয়ে থাকেন, তবে কেন এসব লিখতে গেলেন? কেন আওয়ামী লীগের জন্য তার এতো দরদ? এমন প্রশ্নই এখন সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
হাবিবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রাখা ছবিতে দেখা যায়- ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ওয়ার্ড ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শাখা’র উদ্যোগে র্যালিসহ আ’লীগ-ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অগ্রভাগেই ছিলেন কাজী হাবিব। এমনকি আওয়ামী লীগের বর্র্ষীয়ান নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি আবু সুফিয়ান, সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ, সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীসহ আ’লীগ-ছাত্রলীগের অনেক নেতাদের সাথে কাজী হাবিবের ঘনিষ্ট ছবি রয়েছে। অথচ ‘ছাত্রলীগের ইউনিট নেই’ বলে প্রকারান্তরে কাজী হাবিবকে অস্বীকার করা হলো।
আমার এক বন্ধুর লেখা থেকে কিছু সংযোজন করলাম।আমি সিলেটের লোক।তাই কেবল সিলেটের চিত্রটা আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।এ চিত্র সারা বাংলাদেশে আছে জানি।আর তাই আমার মতে দয়াকরে আপনি আপনার আইডি টা বানিয়ে নিন।তা না হলে বলা তো যায় না যাদের জন্য এতকিছু করতেছেন তারাই রাত পোহালে আপনাকে বেওয়ারিশ বলে ঘোষনা করতে পারে।আর আপনি কি একজন বেওয়ারিশ হয়ে মরতে চান?
শুনলাম দেশে নাকি জামায়াত তাদের নাম পরিবর্তন করতেছে।সব তরুন নেতারা নাকি দলের প্রধান হয়ে আসবে।যাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধ বা রাজাকার উপাধী নেই।সে হতে পারে আপনার ভাই নয়তো বা আমার ভাই।কারন রাজাকারের এ দলটা পরিবার তান্ত্রিক নয়।আর তাই যেকোন যোগ্য নেতা তাদের দলীয় প্রধান হতে পারে।আর তা যদি হয় তাহলে আর কারু মাথাব্যাথা না হলে ও আপনাদের মানে ছাত্রলীগ বা আওয়ামীলীগের মাথাব্যাথা হবার কথা।কারন দেশে তো বিএনপি বলে কোন দল নাই।আমি আমার লেখায় সবসময় বলি আমি কোন দলের লোক নই।আমার কাছে ভালটা সবসময় ভাল আর খারাপটা খারাপ।রাজাকারের দলের একটা ভাল দিক শেয়ার করে লেখাটা শেষ করবো।
আমার এলাকাতে বা আমার গ্রামে অনেক ছোট ভাই আছে যারা এ দলটার সাথে জড়িত।তারা মরলে নিজেদের শহীদ মনে করে।যদিও আমার সন্দেহ এটা তারা কোন হাদিস থেকে পেল।তারা মরলে শহীদ হবে কিনা আমি জানি না।তবে আমি এটা জানি তাদের দলের কোন কর্মী মারা গেলে তারা তাদের শহীদ বলে এবং প্রতি বছর সম্মানের সাথে তাদের স্মরন করে।তারা তাদের কর্মীদের বেওয়ারিশ বলে সমাজে তুলে ধরে না।যেমনটা আমি অন্য দলগুলোর মাঝে দেখি।আমি আশা করবো বাংলাদেশের অন্যতম একটি দল হিসেবে এবং দেশ স্বাধীনে যাদের ভূমিকা রয়েছে সেই দলের আর কোন নেতা বা কর্মী বেওয়ারিশ হয়ে মারা যাবে না।তার পরিবারের জন্য দল কিছু করুক বা না করুক তার মরার পর যেন সে দলের একজন নিবেদিত কর্মী ছিল সেটা স্বীকার করে নেয়।
আশা করবো আপনারা,ছাত্রলীগ ভাইয়েরা নিজেদের প্রয়োজনে একটা করে দলীয় কার্ড বানিয়ে ফেলবেন।যার জন্য জীবনটা বিলিয়ে দিচ্ছেন তাদের থেকে আর কিছু না হোক বেওয়ারিশ তো আর শুনতে হবে না।