কোন একক দেশ হিসেবে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী এবং সবচেয়ে পরীক্ষিত বন্ধু দেশ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সাড়ে চার দশকে জাপান বাংলাদেশকে যে পরিমাণ ঋণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, তার ধারেকাছেও নেই অন্য কোনো দেশ। তদুপরি জাপানই একমাত্র দেশ, যে কখনো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টা করে না, প্রভাব বিস্তার, অন্যায় স্বার্থ আদায় বা খবরদারি তো নয়ই। ভূ-রাজনীতির কোনো বিপজ্জনক বাঁকের দিকেও জাপান কখনো বাংলাদেশকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেনি। এমনকি ঋণের সুদ হিসেবে জমে যাওয়া যে পরিমাণ অর্থ জাপান বাংলাদেশকে মওকুফ করেছে, তাও এ পর্যন্ত কোনো দেশ করেনি। জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ৪৪ বছরে পদার্পণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বিধ্বস্ত বাংলাদেশে, ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাপান সরকার দৃঢ় পদক্ষেপে এসে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে জাপানে যে আন্তরিক ও সর্বোচ্চ সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল, জাপানের ইতিহাসে তা এক বিরল ঘটনা। জাপানের বাড়িয়ে দেওয়া সেই হাত আজও অব্যাহত আছে। অনেক দেশই সহযোগিতার পেছনে নিজস্ব স্বার্থ আদায়ের অদৃশ্য হাত বাড়িয়ে রাখে। অসম শর্তে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটে নেওয়ার চেষ্টা করে। ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশকে ব্যবহারের চেষ্টা করে। সে কারণে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য নানাভাবে তদবির করে। কিন্তু জাপান তা করে না। তাই জাপানের প্রস্তাবগুলো সর্বোচ্চ বিবেচনা পাওয়ার দাবি রাখে। আশা করি, আমাদের নীতিনির্ধারকরা এসব ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দেবেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৪