ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের কাজ যত ত্বরান্তিত হচ্ছে, ততই এক নতুন ভুবনে প্রবেশ করছে এদেশের মানুষ। সব পথ এসে মিশে যাচ্ছে ডিজিটাল রূপকল্পে। এমনটা বাঙালীর ভাবনারও অতীত ছিল। দূরকে কাছে নিয়ে আসার, আরও সহজ করে পাবার সব পথ আজ করায়ত্ত। হাত বাড়ালেই মুঠোতে এসে ধরা দিচ্ছে নানামুখী সেবার ক্ষেত্রগুলো। সময়টা প্রযুক্তির। প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অগ্রগতি সম্ভব নয়। নাগরিক সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হলে প্রযুক্তির বিকল্প গতি নেই। হাতের মুঠোয় বিশ্বকে নিয়ে আসার স্বপ্ন পূরণ সহজসাধ্য প্রায়। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি ও অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে তা মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতির অগ্রগতির সহায়ক হয়ে উঠছে। সব কিছুকে ছাপিয়ে মানুষের জন্য এক নতুন পৃথিবী গড়ে তুলছে যেন। উদার আকাশ আর বিস্তীর্ণ প্রান্তরের মাঝখানের ব্যবধান কমে গিয়ে সবই যেন নতুনত্বের স্বাদ ও ছোঁয়ায় লালিত হয়ে মানুষের ঘরের দরোজায় এনে দিচ্ছে সেবা খাতকে। যা দেশের মানুষের জীবনমানে নিয়ে আসছে ইতিবাচক পরিবর্তন। ইতোমধ্যে দেশের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের তথ্যকেন্দ্রগুলো থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে সরকারী দফতরগুলোতেও কাগজের ফাইলের পরিবর্তে ই-ফাইল চালুর প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে ই-টেন্ডার চালুর কারণে এ সংক্রান্ত প্রায় সব ধরনের জটিলতার অবসান হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন বা এটুআই কর্মসূচীর আওতায় পৌর ডিজিটাল সেন্টার স্থাপিত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন চলছে। কৃষিক্ষেত্রেও লেগেছে তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া। এবার চালু হচ্ছে ঘরে বসেই চৌদ্দ শ’ রকমের প্রয়োজনীয় সরকারী ফরম পূরণ করা যাবে। একই সঙ্গে দেশের মানুষ অনলাইনে চারশ’ রকমের সরকারী সেবাও পাবেন। সেবা আরও সহজ করার জন্য ভয়েস এক্সেসও দেয়া হচ্ছে। এ জন্য কলসেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। ফলে যে কোন মোবাইল অপারেটর ব্যবহারকারী গ্রাহকরা সর্বনিম্ন কলরেটে ভয়েস কল, এসএমএস, আইভিআর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং ই-মেইল ব্যবহার করা যাবে। আর তাতেই মিলবে জাতীয় তথ্য বাতায়নের সব তথ্য। এছাড়া গ্রাহক কেন্দ্রিক ই-সেবা, মোবাইল এ্যাপস বাস্তবাযন করা হচ্ছে। একটি শক্তিশালী পদ্ধতি তৈরির কার্যক্রম চলছে। মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর ও অন্যান্য দফতর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নসহ মোট তেতাল্লিশ হাজারের বেশি সরকারী অফিস যুক্ত রয়েছে। দেশের যে কোন নাগরিকের তথ্য বাতায়ন থেকে তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বর্তমানে বাতায়নে দুই দশমিক এক মিলিয়ন ‘কন্টেন্ট’ রয়েছে। চার শ’র বেশি সরকারী সেবা প্রাপ্তির বিস্তারিত বিবরণ দেয়া আছে। দরকারী এক হাজার চার শ’ সরকারী ফরম রয়েছে। যা নাগরিকরা অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবে। এজন্য কাউকে সংশ্লিষ্ট দফতর বা কার্যালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। অবৈধ অর্থ লেনদেন করার পদ্ধতিও হয়ে যাবে বিলুপ্ত।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:২৫