গুরু কৃপাহি কেবলম্ -ওঁ নমো ভগবতে অদ্বৈতানন্দায়
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
দেহ ও মনের ক্ষেত্র স্বাধ্যায়, নিষ্ঠা, অনুরাগ দ্বারা কর্ষিত হয়ে চাষোপযোগী হলে বীজমন্ত্র বপনকারী গুরুদেব তথা জগৎগুরু ভগবান মনুষ্যরূপে আপনি এসে ধরা দেন। গুরুর মাঝে জগৎগুরু মূর্ত হয়ে, আবিষ্ট হয়ে ভক্ত, শিষ্য, প্রশিষ্য, অনুরক্তদের কৃপাসুধা দান করেন। তখন গুরুদেব অসম্ভবকে সম্ভব করেন।
পরম ব্রহ্ম গুরুদেব শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজকে আমরা শিষ্য, প্রশিষ্য,ভক্ত, অনুরক্তরা কেবল গুরু হিসাবে পাইনি- পেয়েছিলাম মা-বাবার যুগল মূর্ত্তিরূপে। সর্বান্তকরণে পুতঃপবিত্র মনে তাঁকে স্মরণ ও মনন করতঃ মনের কথা নিবেদন করলেই তাঁকে পাওয়া যায়, তাঁর করুণাঘন কৃপান সকলের বিপদভঞ্জনে, মঙ্গলার্থে, রক্ষার্থে নেমে আসে। যেমন- ১৯৬৪ ইং সন, আমাদের গ্রাম চট্টগ্রামস্থ সাতকানিয়া থানাধীন উত্তর ব্রাহ্মনডেঙ্গা গ্রামে অনুষ্ঠিত তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞ মহোৎসব গুরুদেব শিবকল্পতরু শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজকে পেয়ে গ্রামবাসী আনন্দপ্লুত হন। উৎসবের পরের দিন গ্রামবাসীর অনেকেই দীক্ষিত হন। সেই দিবাগত রাত্রে স্বামীজি গ্রামস্থ শিকদার বাড়িতে অবস্থান নেন। এ অধমের হতাশাগ্রস্ত মা কাঁদতে কাঁদতে স্বামীজির কাছে যান। জন্বকুষ্ঠিতে উল্লেখিত আছে যে ১৯৬৫ইং সনে বিধমা মা এর একমাত্র অনাথ সন্তান আমি রাখাল দাশ এর মৃত্যু অবধারিত। অসহায় বিধমা মা গুরুর কাছে একমাত্র ছেলের জীবন ভিক্ষে চাইলেন। গুরুদেব নীরবে আমার পাণে চেয়ে কি যেন ভাবলেন। অতঃপর মা-কে স্তাহখানেক পরে তাঁর সাথে দেখা করার নির্দেশ দিলেন। মা ও ঠিক স্তাহ খানেক পরে গুরুদেবের সাক্ষাতে গেলেন। গুরুদেব ছেলেকে বিয়ে দেয়ার জন্য মা-কে পরামর্শ দিলেন এবং বললেন যে, রাখালের একটি কন্যা সন্তান হবে এবং সেই কন্যা সন্তানটির আয়ুস্কাল হবে মাত্র ৩ দিন।এর বিনিময়ে ছেলে রাখালের মৃত্যু ফাঁড়া থেকে রেহাই পাবে। পরমকরুণঅময় গুরুদেবের পবিত্রমুখ নিসৃত বচন অমোঘ। আমার বিয়ের পর যথাযথ সময়ে আমার স্ত্রীর গর্ভে সর্বপ্রথম কন্যা সন্তান জন্মলাভের ঠিক ৩ দিন পর মেয়েটি মারা গেল। গুরুদেব যাই বলেন তাই হলো। আমি রাখাল দাশ গুরুর কৃপায় এখন অবধি বেঁচে আছি। আমার মাও বেঁচে আছেন। এ গুরু কৃপাহি কেবলম।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, কন্যা সন্তানটি মারা যাওয়ার কয়েকদিন পর বাঁশখালী থানাধীন সাধনপুর গ্রামের প্রধান রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। অকস্মাঃ বাবু সুধাংশু নন্দীর বাগ-বাগিচা থেকে প্রায় ৩/৪ হাত লম্বা একটি বিরাটায় বিষধর সর্প আমার দাড়ন্ত শরীরের উপর লাফ দিয়ে উঠে মিনিট কাল অবস্থান নিয়ে আমায় কোনরূপ ক্ষতিসাধন না করে লাফ দিয়ে চলে যায়। সেই অবস্থায় আমি সম্বিত হারিয়ে পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। দু'একদিন পর ভয় কাটিয়ে উঠে গুরুদেবের নিকট যাই। গুরুদেব আমাকে দেখতে না দেখতেই হাসতে হাসতে বলে উঠে- ভয় পেয়েছিলি? কৃপা লাভ করেছিস। তাঁর কৃপা এখনো আমার তথা আমার পরিবারের উপর বয়ে যাচ্ছে। আমি অনেক বছর অবধি বাণীগ্রাম হাই স্কুলে শিক্ষকতা করলেও তাঁর অসীম কৃপায় শহরে এসে নতুনভঅবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীন হাইস্কুলে শিক্ষক পদে যোগদান করি। বর্তমানে আমার তিন ছেলে ও একটি মেয়ে। বড়ছেলে আমেরিকার ভেন্ডারবিল্ট ইউনিভার্সটিতে (যে বিশ্ববিদ্যালয় হতে শান্তি পুরুস্কার বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস পি এইচ ডি ডিগ্রী লাভ করেন।) পদার্থ বিদ্যার উপর রিচার্সরত এবং মেজ ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হতে ডাক্তারী পাশ করে কর্মরত ও ছোট ছেলে ভারত হতে এম বি এ ডিগ্রী নিয়ে চাকুরী রত ও এই ওয়েব সাইটটির উদ্যোক্তা।এখনো গুরুদেব আমাকে তাঁর কৃপা দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত করেননি। গুরু কৃপাই একমাত্র কৌশল। গুরুকৃপা লাভ না হলে এ সংসার পার হওয়া অসম্ভব। গুরু পরমকরুণাময় জগৎ উদ্ধারক। যোগ কর্মকৌশলম- তবে ইহাই গুরুর কাছে শিখতে হয়।গুরুই সত্যম্ৎ শিবম সুন্দরম। এ উপাসনায় উপাসকের পথ সুগম করে দেন।
ওঁ নমোহস্ত্ত গুরুবে যস্মিন পব্মপলাশলোচনে
পরমগুরু অদ্বৈতানন্দরূপায় সচ্চিদানন্দ দায়িনে।
পরমব্রহ্ম গুরুদেব শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজের দিব্যবাণী।
কর্মী কর্ম করিবে অভিমান শূন্য হইয়া গুরুদেবতার পদাশ্রয়ে। অভিমানশূন্য কর্মীই জ্ঞানী। জ্ঞানী দিব্যালোকে সমুদ্ভাসিত। আবার জ্ঞানীর কর্ম হইবে বিশ্ব মঙ্গলে, সর্বজীবহিতে, অন্ধকারে নহে-আলোকে আলোকে।
জগতে একমাত্র গুরুই সৎ। গুরুতে জগৎগুরু। যাঁহাতে জগৎগুরুর চিৎশক্তির বিলামস, যাঁহাতে জ্ঞানশক্তির প্রকাশ তিনিই গুরু। অন্য কেহ গুরু হইতে পারেন না। কর্মফল জনিত জন্বমৃত্যুর কবলে পড়িয়া যাঁহাকে আর রূপায়িত হইতে হয় না। সেই মহাপুরুষই গুরু।
স্মরণ কর একটি বার। শরীর দিয়া কি করা হইয়াছে। যেই শরীরের জন্য অতকিছু করা হয়, পরিণামে তাহার কিছুই নাই-আছে ভস্ম।
হে মানব! ভোগ্যবস্ত্ত ক্ষুদ্র বিষয় সংগ্রহে কেনই বা তোমাদের দুরাগ্রহ; ভোগে সুখৈষনা বৃথা। সীমাহীন সুখ অনন্তে-ঐ ভূমা ব্রহ্মে। এই সীমাহীন সুখ লাভ করেন ভক্ত যোগযুক্ত।
যাঁহাকে না পাইলে মানব জীবন বাস্তবিকই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তাহার জন্য সর্বজীবন উৎসর্গ করিতে পারিলেই ঘটে সর্ব দুঃখ নিবৃত্তি। দুঃখের ঐকান্তিক ও আত্যন্তিক নিবৃত্তিই মোক্ষ।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'
আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আকুতি
দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ক- এর নুডুলস
অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।
ক
একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???
আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন