somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুরু কৃপাহি কেবলম্ -ওঁ নমো ভগবতে অদ্বৈতানন্দায়

১৪ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দেহ ও মনের ক্ষেত্র স্বাধ্যায়, নিষ্ঠা, অনুরাগ দ্বারা কর্ষিত হয়ে চাষোপযোগী হলে বীজমন্ত্র বপনকারী গুরুদেব তথা জগৎগুরু ভগবান মনুষ্যরূপে আপনি এসে ধরা দেন। গুরুর মাঝে জগৎগুরু মূর্ত হয়ে, আবিষ্ট হয়ে ভক্ত, শিষ্য, প্রশিষ্য, অনুরক্তদের কৃপাসুধা দান করেন। তখন গুরুদেব অসম্ভবকে সম্ভব করেন।
পরম ব্রহ্ম গুরুদেব শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজকে আমরা শিষ্য, প্রশিষ্য,ভক্ত, অনুরক্তরা কেবল গুরু হিসাবে পাইনি- পেয়েছিলাম মা-বাবার যুগল মূর্ত্তিরূপে। সর্বান্তকরণে পুতঃপবিত্র মনে তাঁকে স্মরণ ও মনন করতঃ মনের কথা নিবেদন করলেই তাঁকে পাওয়া যায়, তাঁর করুণাঘন কৃপান সকলের বিপদভঞ্জনে, মঙ্গলার্থে, রক্ষার্থে নেমে আসে। যেমন- ১৯৬৪ ইং সন, আমাদের গ্রাম চট্টগ্রামস্থ সাতকানিয়া থানাধীন উত্তর ব্রাহ্মনডেঙ্গা গ্রামে অনুষ্ঠিত তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞ মহোৎসব গুরুদেব শিবকল্পতরু শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজকে পেয়ে গ্রামবাসী আনন্দপ্লুত হন। উৎসবের পরের দিন গ্রামবাসীর অনেকেই দীক্ষিত হন। সেই দিবাগত রাত্রে স্বামীজি গ্রামস্থ শিকদার বাড়িতে অবস্থান নেন। এ অধমের হতাশাগ্রস্ত মা কাঁদতে কাঁদতে স্বামীজির কাছে যান। জন্বকুষ্ঠিতে উল্লেখিত আছে যে ১৯৬৫ইং সনে বিধমা মা এর একমাত্র অনাথ সন্তান আমি রাখাল দাশ এর মৃত্যু অবধারিত। অসহায় বিধমা মা গুরুর কাছে একমাত্র ছেলের জীবন ভিক্ষে চাইলেন। গুরুদেব নীরবে আমার পাণে চেয়ে কি যেন ভাবলেন। অতঃপর মা-কে স্তাহখানেক পরে তাঁর সাথে দেখা করার নির্দেশ দিলেন। মা ও ঠিক স্তাহ খানেক পরে গুরুদেবের সাক্ষাতে গেলেন। গুরুদেব ছেলেকে বিয়ে দেয়ার জন্য মা-কে পরামর্শ দিলেন এবং বললেন যে, রাখালের একটি কন্যা সন্তান হবে এবং সেই কন্যা সন্তানটির আয়ুস্কাল হবে মাত্র ৩ দিন।এর বিনিময়ে ছেলে রাখালের মৃত্যু ফাঁড়া থেকে রেহাই পাবে। পরমকরুণঅময় গুরুদেবের পবিত্রমুখ নিসৃত বচন অমোঘ। আমার বিয়ের পর যথাযথ সময়ে আমার স্ত্রীর গর্ভে সর্বপ্রথম কন্যা সন্তান জন্মলাভের ঠিক ৩ দিন পর মেয়েটি মারা গেল। গুরুদেব যাই বলেন তাই হলো। আমি রাখাল দাশ গুরুর কৃপায় এখন অবধি বেঁচে আছি। আমার মাও বেঁচে আছেন। এ গুরু কৃপাহি কেবলম।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, কন্যা সন্তানটি মারা যাওয়ার কয়েকদিন পর বাঁশখালী থানাধীন সাধনপুর গ্রামের প্রধান রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। অকস্মাঃ বাবু সুধাংশু নন্দীর বাগ-বাগিচা থেকে প্রায় ৩/৪ হাত লম্বা একটি বিরাটায় বিষধর সর্প আমার দাড়ন্ত শরীরের উপর লাফ দিয়ে উঠে মিনিট কাল অবস্থান নিয়ে আমায় কোনরূপ ক্ষতিসাধন না করে লাফ দিয়ে চলে যায়। সেই অবস্থায় আমি সম্বিত হারিয়ে পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। দু'একদিন পর ভয় কাটিয়ে উঠে গুরুদেবের নিকট যাই। গুরুদেব আমাকে দেখতে না দেখতেই হাসতে হাসতে বলে উঠে- ভয় পেয়েছিলি? কৃপা লাভ করেছিস। তাঁর কৃপা এখনো আমার তথা আমার পরিবারের উপর বয়ে যাচ্ছে। আমি অনেক বছর অবধি বাণীগ্রাম হাই স্কুলে শিক্ষকতা করলেও তাঁর অসীম কৃপায় শহরে এসে নতুনভঅবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীন হাইস্কুলে শিক্ষক পদে যোগদান করি। বর্তমানে আমার তিন ছেলে ও একটি মেয়ে। বড়ছেলে আমেরিকার ভেন্ডারবিল্ট ইউনিভার্সটিতে (যে বিশ্ববিদ্যালয় হতে শান্তি পুরুস্কার বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস পি এইচ ডি ডিগ্রী লাভ করেন।) পদার্থ বিদ্যার উপর রিচার্সরত এবং মেজ ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হতে ডাক্তারী পাশ করে কর্মরত ও ছোট ছেলে ভারত হতে এম বি এ ডিগ্রী নিয়ে চাকুরী রত ও এই ওয়েব সাইটটির উদ্যোক্তা।এখনো গুরুদেব আমাকে তাঁর কৃপা দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত করেননি। গুরু কৃপাই একমাত্র কৌশল। গুরুকৃপা লাভ না হলে এ সংসার পার হওয়া অসম্ভব। গুরু পরমকরুণাময় জগৎ উদ্ধারক। যোগ কর্মকৌশলম- তবে ইহাই গুরুর কাছে শিখতে হয়।গুরুই সত্যম্ৎ শিবম সুন্দরম। এ উপাসনায় উপাসকের পথ সুগম করে দেন।
ওঁ নমোহস্ত্ত গুরুবে যস্মিন পব্মপলাশলোচনে
পরমগুরু অদ্বৈতানন্দরূপায় সচ্চিদানন্দ দায়িনে।
পরমব্রহ্ম গুরুদেব শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজের দিব্যবাণী।
কর্মী কর্ম করিবে অভিমান শূন্য হইয়া গুরুদেবতার পদাশ্রয়ে। অভিমানশূন্য কর্মীই জ্ঞানী। জ্ঞানী দিব্যালোকে সমুদ্ভাসিত। আবার জ্ঞানীর কর্ম হইবে বিশ্ব মঙ্গলে, সর্বজীবহিতে, অন্ধকারে নহে-আলোকে আলোকে।
জগতে একমাত্র গুরুই সৎ। গুরুতে জগৎগুরু। যাঁহাতে জগৎগুরুর চিৎশক্তির বিলামস, যাঁহাতে জ্ঞানশক্তির প্রকাশ তিনিই গুরু। অন্য কেহ গুরু হইতে পারেন না। কর্মফল জনিত জন্বমৃত্যুর কবলে পড়িয়া যাঁহাকে আর রূপায়িত হইতে হয় না। সেই মহাপুরুষই গুরু।
স্মরণ কর একটি বার। শরীর দিয়া কি করা হইয়াছে। যেই শরীরের জন্য অতকিছু করা হয়, পরিণামে তাহার কিছুই নাই-আছে ভস্ম।
হে মানব! ভোগ্যবস্ত্ত ক্ষুদ্র বিষয় সংগ্রহে কেনই বা তোমাদের দুরাগ্রহ; ভোগে সুখৈষনা বৃথা। সীমাহীন সুখ অনন্তে-ঐ ভূমা ব্রহ্মে। এই সীমাহীন সুখ লাভ করেন ভক্ত যোগযুক্ত।
যাঁহাকে না পাইলে মানব জীবন বাস্তবিকই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তাহার জন্য সর্বজীবন উৎসর্গ করিতে পারিলেই ঘটে সর্ব দুঃখ নিবৃত্তি। দুঃখের ঐকান্তিক ও আত্যন্তিক নিবৃত্তিই মোক্ষ।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অল্প পুঁজিতে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার সন্ধান, যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৫



কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×