somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুইলাইট (twilight) সাগা - পাবলিক ক্যামনে খায় এইগুলা?

১৬ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুরুতেই ভানুর একটা পুরান কৌতুকের কথা বলি। ভানুকে সিদলকে হিদল না বলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিছু ঘটনার পরে সে হারমোনিয়ামকে সারমোনিয়াম বলা শুরু করেছিল।
অমি রহমান পিয়াল কোন এক ব্লগে কোন এক ব্লগারের এক কমেন্টের জবাবে বলেছিলেন, আপনার কমেন্টটা চমৎকার ছিল। কিন্তু শেষ লাইনে এসে কমেন্টের সোগা মেরে দিলেন।

আমার ব্লগ শুরু হলো । শিরোনাম আবার পড়েন।

টুইলাইট (twilight) সাগা- পাবলিক ক্যামনে খায় এইগুলা?


বেদের মেয়ে জোসনা দেখে নাই বা তার গান শুনে নাই এমন বাঙ্গালী জগতে দুর্লভ। সেই মুভির মূল বিষয় রাজপুত্র আর বেদের মেয়ের প্রেম । ব্যবধানের তীব্রতা আনার জন্যই রাজপুত্র আর বেদের মেয়ে। যত বড় সামাজিক ব্যবধান –দর্শকের তত সহজে বুঝানো যায় নায়ক নায়িকার প্রেমের গভীরতা। ঠিক একই কায়দা অনুসরন করা হয়েছে টুইলাইটে। ভ্যাম্পু আর অসাধারন ফুলের গন্ধওয়ালা এক মেয়ের প্রেমের কাহিনী এইখান। (মেয়ের শরীরের গন্ধটা অতি গুরুত্বপূর্ন বিষয় পুরা বইতেই...)

সব পুরুষের স্বপ্ন থাকে এক দুর্দশা গ্রস্থ মেয়েকে উদ্ধার করার। রবীন্দ্রনাথের ক্যামিলিয়া কবিতাও নায়কের আক্ষেপ কোন একটা দুর্ঘটনা কেন ঘটে না? সে তাহলে নিজের জীবন বাজি রেখে নায়িকাকে উদ্ধার করত আর প্রেমের শুরু হত তাদের। বাংলা সিনেমাতেও একই জিনিস। দুর্বল নায়িকাকে শক্তিশালী নায়কের জীবন পন লড়াই করে উদ্ধার। নায়িকার শরীরের ওজন দেখে অবশ্য বিশ্বাস করা কঠিন রোগা পটকা কিন্তু বিশাল গুম্ফধারী লাল জামা নীল জিন্স পড়া ভিলেন তার চেয়ে কয়েক মন বেশি ওজনের নায়িকার আদতে কোন ক্ষতি করতে পারত কিনা? যাক সেই প্রসঙ্গে না যাই। টয়লেটেই থাকি থুক্কু টুইলাইটে থাকি। স্টেফানি মেয়ার বাংলা সিনেমা থেকেই বইটার মূল আইডিয়া গুলো নিয়েছেন বলে মনে হয়। উপন্যাসের শুরুতেই নায়ক কর্তৃক অসাধারন এক উদ্ধার অভিযান করা হয়।

খুবই অপ্রাসঙ্গিক অথবা খুবই প্রাসঙ্গিক একটি কৌতুক বলার লোভ সামলাতে পারলাম না। একটু অরুচিকর কৌতুক।

রোগী এসেছে ডাক্তারের কাছে।
-ডাক্তার! আমার ভয়ানক সমস্যা। যা খাই পায়খানাতে তাই বের হয়।
-বুঝলাম না। খেলে ত পায়খানা হবেই, পেটে ত আর জমা থাকবে না।
-আরে সেটা না। ধরেন কলা খেলাম এখন, তাহলে পায়খানা হবে কলা। যদি ডিম খাই তাহলে ডিম। ডাক্তার যেমন করে হোক আমার পায়খানা নর্মাল করে দেন।
ডাক্তার একটু হেসে, যা খান তাই বের হয় ত? তা পায়খানা খাওয়াই শুরু করে দিন না।

টুইলাইটে ফিরে আসি।

বইটা ভালো। সুন্দর করে লেখা। বর্ননাগুলো ভালো, বিস্তারিত। রোমান্টিক কিছু দৃশ্য আছে। নায়কের অসাধারন রূপের বর্ননা বার বার এসেছে। পারলে লেখিকা প্রতিটা চুলের বর্ননা দেন। এডওয়ার্ড (আমাদের “লায়ক” ) এর মুখের গড়ন , জামা, হাসি ...কতকিছুর যে বর্ননা আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু আমার মত অশ্লিষ পাঠকের জন্য বেলা (আমাদের লায়িকা) এর কোন রূপের বর্ননা দেয়া হয় নাই। যেমন আমরা জানি এডওয়ার্ডের উপরের চুল ছোট কিন্তু নিশ্চিত করা বলা যায় না বেলার কোন চুল ছোট- সামনে –পিছে নাকি......
এডওয়ার্ডের শরীরের প্রতিটা পেশীর বর্ননা আছে কিন্তু বেলার বর্ননা নাই। আর কত বড় বলদ এডওয়ার্ড[ রক্তের প্রতি তার মূল টান ]– অথচ প্রচুর রক্তঅলা মোটাসোটা কোন একটা নারীর প্রতি তার আকর্ষন জন্মায় নাই। ব্যাটায় পাগল হলো বেলার জন্যে। এছাড়া দাদার বাপের বয়সী (লায়েক বাবাজী ১০০+ বয়সী) পোলার সাথে ১৭ এর মেয়ের প্রেম কেমুন কেমুন জানি লাগে।

শেষের দৃশ্যে প্রমে বেলার ল্যাংড়া পা নিয়ে উপস্থিতি শুধু cliché নয়, cliché এর বাপ। কয়েকলাখ মুভির নাম করা যেতে পারে যেখানে প্রমে গিয়েই মুভি শেষ হয়।

সব শেষের ক্লাইম্যাক্সের কথা আলাদা করা বলা দরকার। বেদের মেয়ে জোসনাতেই এই দৃশ্য আছে। নায়ক সাপের কামড় খেয়ে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ে আছে। সাপুড়ে আর তার মেয়ে এসেছে নায়ককে উদ্ধার করতে। ৪০ বছর ধরে সাপুড়ের কাজ করে বৃদ্ধ বাপ । কোনদিন তার যা হয় নাই তাই হয়েছে এখন। সে ভ্যাবদা মেরে বসে আছে, কিভাবে বাচাবে লায়ককে? তখন তার কুড়ি বছরের মেয়ে তুলে নেয় বিশেষ নাগের জন্য প্রস্তুত দুই বিরক্তিকর ডান্ডা বের হয়ে আসা বিশেষ বাশী যা গত একশত বছরে কেউ বাজায় নি। বাপ পারে না বাজাতে কিন্তু প্রেমের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে নায়িকা (বিশালবক্ষা তবে বয়স বড় কম...হিসাব মিলে না) বাজিয়ে ফেলে।

বেলা ভ্যাম্পু মামার কামড় খেয়ে লম্বা হয়ে শুয়ে আছে। ৩৫০ বছরের বুড়া ভ্যাম্পু বাপ পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু বিষ নামানোর জন্য এডু ভাইকেই ডাকা হলো। এডু ভাইয়ের ভয় একবার রক্তের স্বাদ পেলে সে থামতে পারবে না। কিন্তু প্রেমের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে এডু ভাই সে কাজ সমাপ্ত করে ফেলে। এই চাপ্টারট পড়ার সময় বেদের মেয়ের কথা বার বার মনে পড়েছে। সে দুই ডান্ডাঅলা বিশেষ বাশীটার পো পো আওয়াজ বড় মিস করেছি।

টয়লেট থুক্কু এগেইন টুইলাইট মেয়েরা পছন্দ না করার কোন কারন নাই। যদি আপনি মেয়ে হয়ে থাকেন আর আপনার বয়ফ্রেন্ড এই নভেল "লাইক" করে তাহলে সতর্ক হোন, আপনি বোধহয় লেসবিয়ান রিলেশনে আছেন। আর যদি আপনি ছেলে হন আর আপনার ছেলে দোস্ত এই বই পছন্দ করে সতর্ক হোন। অই বন্ধুর সাথে রাতের বেলা একলা কোথাও যাবেন না এবং তার সাথে যেকোন ধরনের ডাবলিং পরিহার করুন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:৪৮
৫৩টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×