somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্ষপূর্তি পোস্ট (ছবির ব্লগ)

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেখতে দেখতে কখন যে সামুতে এক বছর হয়ে গেল, টের পাই নি। ইদানিং ব্যস্ততার কারনে আর আগের মত প্রতিদিন আসতে পারি না বলে খেয়াল ছিল না। আজকে অনেক দিন পর লগ ইন করে দেখলাম এক বছর পেরিয়ে গেছে। তাই ভাবলাম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে একটা পোস্ট দিয়ে দেই, কিন্তু মাথায় কিছুই আসছিল না। পরে ঠিক করলাম কিছু ফুল নিয়ে একটা ছবি ব্লগ দিয়ে দেই। যেই ভাবা সেই কাজ। আমার আবার কাজ কাম না থাকলে কিংবা কোথাও ঘুরতে গেলে ফুলের ছবি আর আকাশের, সূর্যের ছবি তোলার বাতিক আছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলবামে কিছু ফুলের ছবি তুলেছিলাম। সেইখান থেকে কয়েকটা বাছাই করে এই পোস্ট এ দিয়ে দিলাম। সবগুলা ফুলের অবশ্য নাম জানি না...


নামঃ শাপলা, ইংরেজীতেঃ Water lily,
জ্ঞানী-গুণীরা বলেনঃ Nymphaea nouchali
এই ছবিটা তোলা হয়েছিল বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ সংলগ্ন দিঘী থেকে




(এই ফুলটা শাপলা না পদ্ম, এটা নিয়ে কিছুটা সংশয় আছে। কেউ জেনে থাকলে কষ্ট করে জানিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি)
(একটু আগে একজন সংশয় দূর করে দিয়েছেন... এটা পদ্ম)
এই দুইটা ছবি তুলছিলাম, শ্রীমঙ্গলের মাধবপুর লেক থেকে


বাংলাদেশের জাতীয় ফুল, সাদা শাপলার দেখা খুব কমই পেয়েছিলাম। যখন দেখেছি তখন ক্যামেরাও ছিল না। এই কারনে এই ফুলটার কোন ছবি তুলতে পারি নাই।/:)/:)
কোন জায়গায় পাওয়া যায় না, তবু কেন যে এটারে জাতীয় ফুল কয় কে জানে...
এই ছবিটা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা (শিল্পীর তুলিতে আঁকা)

এই ফুলটা নিয়ে একটা উপকথা প্রচলিত আছে। সংক্ষেপে কিছুটা বলার চেষ্টা করি...

অনেক দিন আগে ব্রাজিলিয়ান আদিবাসীদের এক ভারতীয় বালিকা তার বাবার কাছে শুনেছিল আকাশের চাঁদের মধ্যে একজন সুদর্শন ও মহা ক্ষমতাবান যোদ্ধা সম্রাট বাস করে। সেটা ছিল একটা গল্প মাত্র। কিন্তু মেয়েটা সেটা সত্যি বলে বিশ্বাস করে ফেলে।

আস্তে আস্তে মেয়েটা বড় হতে থাকে কিন্তু তার বিশ্বাসটা দূর হয় না। তার বিয়ের বয়স হলে বাবা-মা প্রতিবেশীরা তাকে অনেক ছেলে দেখায়। কিন্তু মেয়েটার কোন ছেলেকেই পছন্দ হয় না। তার মনে হতে থাকে একদিন চাঁদের সেই সুদর্শন যোদ্ধা সম্রাট তার কাছে আসবে, তখন সে তাকেই বিয়ে করবে। সবাই তাকে বোঝায় যে এটা একটা গল্প, চাঁদে সত্যি সত্যি কোন যুবক নেই। কিন্তু সবার কথা তার বিশ্বাস হয় না। সে প্রতি রাতে চাঁদটাকে পুরোপুরি দেখার জন্য দৌড়ে জঙ্গলের ভিতরে চলে যায়। যখন চাঁদের কিরণ তার শরীরের উপর পড়ে, সে পুলকিত হয়ে উঠে। তার কাছে মনে হয় সেই যোদ্ধা বুঝি তার সাথে আলিঙ্গন করছে।

এভাবে দিন অতিবাহিত হতে থাকে। একদিন সে পণ করে আজকে যে করেই হোক ওই যোদ্ধার কাছে সে চলে যাবে। একসময় রাত হলে পরিষ্কার আকাশে সুন্দর, পূর্ণ রূপে চাঁদের আবির্ভাব ঘটে। মেয়েটা তখন এক ছুটে জঙ্গলের ভিতরে একটা কাচের মত স্বচ্ছ জলের পুকুরের কাছে চলে যায়। চাঁদের একটা সুন্দর প্রতিবিম্ব পানিতে তৈরী হয়ে যায়। সেটা থেকে সুন্দর আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মেয়েটার মনে হতে থাকে তার স্বপ্নের যোদ্ধা তাকে নেওয়ার জন্য আকাশ ছেড়ে পানিতে নেমে এসেছে। এই কথা ভেবে সে আস্তে করে পানিতে নেমে যায়। একসময় সে পুরোপুরি পানিতে ডুবে যায়। কিন্তু কোন যোদ্ধা তাকে নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসে না। এই গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারত কিন্তু চাঁদের সেই কাল্পনিক যোদ্ধা সেটি শেষ হতে দেয় না। সে বুঝতে পারে মেয়েটা তাকে সত্যি সত্যি অনেক ভালবেসে ফেলেছে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়, তার কাছে মানুষকে জীবিত করার কোন ক্ষমতা নেই। তখন সে অনেক ভেবেচিন্তে মেয়েটার মৃত দেহকে তারাতে রুপান্তরিত করে ফেলে এবং সেই তারাকে পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে রাখে। এই তারাটাই পরে শাপলা/পদ্ম ফুলে পরিনত হয়ে পুকুরে ভাসতে থাকে। মানুষের ধারনা মেয়েটা এখনো ওই কাল্পনিক যোদ্ধা সম্রাটকে ভালবাসে বলে তাকে কাছে পাওয়ার জন্য মাঝরাতে যখন চাঁদটা পূর্ণ রূপে আবির্ভূত হয় তখন তার পাপড়ি গুলোকে সর্বোচ্চ পরিমানে মেলে ধরার চেষ্টা করে। যার ফলে মাঝরাতের দিকে শাপলা ফুলকে অনেক বড় দেখায়...

(গল্পটা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। আসল গল্পে পুকুরের জায়গায় আমাজান নদী ব্যবহৃত হয়েছিল)






নামঃ কাঠগোলাপ
কষ্ট করে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন।

এই ফুলটা আমার খুব প্রিয় ফুল। এখানে তিন ধরনের কাঠগোলাপ আছে। প্রথম দুইটা আমার হলের বাগান থেকে তোলা, আর পরেরটা বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে তোলা হয়েছিল।

এবারে কিছু জঙ্গলী ফুল...

নাম জানি না, সব ধরনের ঝোপেই দেখা যায়। শ্রীমঙ্গলের কোন এক জঙ্গলা ঝোপ থেকে তোলা।


এটারও নাম জানি না। তেতুলিয়ার একটা প্রাচীন মন্দিরের গায়ে জড়ানো ছিল, ওইখান থেকে তোলা।


যথারীতি নাম জানি না। ময়মনসিংহ শহরের জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালার বাগান থেকে তোলা।


এটা একটা ক্যাকটাস গাছের ফুল। এক বন্ধুর বাসার টব থেকে তোলা।


এটারও নাম জানি না। টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তুলেছিলাম। এটাও সব ধরনের ঝোপে দেখা যায়।


পিঁয়াজ ফুল। ময়মনসিংহ শহরের জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালার বাগান থেকে তোলা।




এই দুইটা খুব কমন টাইপের ফুলের ছবি। এই মুহুর্তে নামটা মনে পড়তেছে না। (অবশেষে নামটা পেয়ে গেলাম, বাগান বিলাস। ব্লগার ত্রিনিত্রি কে অনেক ধন্যবাদ দুইটা নাম সঠিক করে দেওয়ার জন্য।) কেউ জেনে থাকলে জানিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। দুইটা ছবিই বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে তোলা।






নামঃ কৃষ্ণচূড়া, ইংরেজীতেঃ Peacock flower
জ্ঞানী-গুণীরা বলেনঃ Caesalpinia pulcherrima

প্রথম দুইটা বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে, বাকিটা আমার হলের ছাদ থেকে তোলা। এই ফুলটাও আমার খুব প্রিয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের তলে প্রেম নিয়ে সবার পরিচিত কিশোর কুমারের একটা গান আছে।:)

সবার শেষে একটা মৌচাকের ছবি। গতদিন হলের বাগানে ঢুকার সময় খেয়াল করলাম।


আরও অনেক ছবি দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু পোস্টটা এমনিতেই অনেক বড় হয়ে গেছে। অন্য কোনদিন এটারই সিক্যুয়েল হিসেবে আরেকটা পোস্ট দিয়ে দিব :)

সবাই ভাল থাকবেন...
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২০
৩৩টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×