বই মেলায়, বইয়ের ছড়াছড়ি
লিখেছেনঃ আবু মুহাম্মাদ
.
প্রতি বছর বই মেলায় নতুন বই বের হওয়ার সংখ্যা বাড়লেও মান কতটা উন্নত হয় হচ্ছে সে প্রশ্ন থেকেই যায়। দেখা যায় অনেক আশা নিয়ে প্রচ্ছদ আর রিভিউ দেখে বই ক্রয় করেছে কিন্তু বইটা পরিতৃপ্তি দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। ছাপাখানার ব্যাপকতা আর ফেসবুকে সেলেব্রেটি ট্যাগ থাকার কল্যাণে অনেকেই লেখক হওয়ার নিমিত্তে নিজের টাকায় বই বের করতেও পিছপা হয় না। আর সে সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। যার কারণে ভাল বই খারাপ বই একইভাবে সজ্জিত হয়ে স্বগৌরাবে স্থান পায় অনেক নামকরা স্টলে। লাইক সেলেব্রেটি আর হলুদ মিডিয়ার প্রচারে অনেক সময় প্রথম শ্রেনীর বইয়ের থেকেও উপরে স্থান পায়। যদিও তা সাময়ীক, অখাদ্য মানুষ ভুল করে কিনলেও কিছু দিন পর তা হোটলে ভাজা খাওয়ার পর হাত মোছার কাজেই ব্যবহৃত হয়। বই কিনে মানুষ দেউলিয়া হয় না ঠিক আছে, তাই বলে পরার অযোগ্য বই টাকা দিয়ে কিনলে পাঠকের মন যে কতটা কষ্ট তা হয়ত ফেসবুকে দুকলম লিখে সেলেব্রেটি লেখক বুঝবে না। ৫০০০ ফ্রেন্ড আর হাজার ১০ ফলোয়ারের কল্যানে হয়ত লাইক ব্যাকের কল্যানে পোষ্টে ২/৩ কে লাইক পায়, কিন্তু সে লেখা যে কোন মেসেজই বহন করে না তা বোঝে না। তারপর প্রকাশকের কাছে ধর্না দিয়ে কিছু টাকা খাইয়ে বই বের করে প্রচারনা চালানো শুরু হয়। সমমনা আরো কিছু সেলেব্রেটি দিয়ে রিভিউ লিখিয়ে কাককে ময়ূর হিসাবে দেখিয়ে শুরু হয় যাত্র। প্রশংসা করলে ধন্যবাদের ফুলঝুড়ি বইলেও একটু সমালোচনা করলেই সহ্য করতে পারে না। নিজে যা লিখছে তাই সঠিক মনে করে চলে নিজেকে ডিফেন্স করা। ভুল যে হতে পারে সে স্বীকার করার মানসিকতা কম লেখকেরই আছে।
.
নতুন বছরের জানুয়ারী মাস শুরু হয়ে গিয়েছে। চলছে বই মেলার প্রস্তুতি। অনেক নতুন লেখকের বই বের হবে। চলছে প্রচারনা... কিন্তু খোজ নিলে দেখা যাবে অনেক লেখকই নিজের টাকায় বই বের করছে। আর প্রচারনায়ও চলেছে স্বজনপ্রীতি। ইসলামিক বইয়ের ক্ষেত্রে যদিও এটা নেই বললেই চলে কিন্তু এর বাহিরের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবে এ সংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হয়ে আশা উচিত। একজন ভাল লেখক হতে হলে সবার আগে হওয়া চাই পাঠক। কিন্তু আজকাল কেউ পড়তে চায় না, সবাই চায় তার লেখা সবাই পড়ুক। যার কারনে প্রকাশ অযোগ্য লেখা গুলো পুস্তক আকারে আসছে আর যোগ্য লেখকরা হারাচ্ছে তাদের যোগ্য সম্মান।
.
একজন পাঠক হিসাবে প্রত্যাশা নতুন লেখক আর নতুন বইয়ের ছড়াছড়ির বদলে চাই মৌলিক তথ্য মূলক, শিক্ষনীয় লেখা। টাকা দিয়ে আপনার ছাই পাস লেখা একজন পাঠকরে গছিয়ে দেয়ার কোন মানেই হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



