যে আল্লাহর জন্য হইয়া যায়,আল্লাহও তাহার হইয়া যান,সবই তাহার হইয়া যায়।মানুষ দূরবল।আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা ছাড়া সে কিছুই করিতে পারেনা।তাহার জন্য সবই অসম্ভব কিন্তু আল্লাহর জন্য সবই সম্ভব।সাহাবায়ে কেরাম ঈমানের মেহনত করিয়া আল্লাহর যাত এবং ছিফাতের উপর পাকাপাকি ইয়াক্বিন হাছিল করিয়াছিলেন।তাই মানুষের নজরে যাহা অসম্ভব ছিল,আল্লাহর দ্বারা তাহা সম্ভব করাইয়া নিয়াছিলেন।নীল নদের নামে চিঠি লিখিয়া পানি প্রবাহিত করা,ঘোড়া দৌড়াইয়া পানির উপর দিয়া দরিয়া পার হওয়া,হুকুম দিয়া অগ্নোৎপাত বন্ধ করা-এই সমস্ত ঘটনা তাহাদের ইয়াক্বীনেরই বহিঃপ্রকাশ ছিল।বান্দা যখন নিজের মনচাহি খাহেশাতকে কোরবান করে এবং আল্লাহর ইচ্ছায় নিজেকে ছাড়িয়া দেয়,তখন সে জাহেরা ভাবে সবকিছু করে বটে,কিন্তু আসলে তাহার হরকতগুলি আল্লাহ্ তা'আলা নিজেই করাইয়া থাকেন।যেমন জ্বীনে ধরা রোগী খাওয়া-দাওয়া,কথা-বার্তা সবই করে।কিন্তু সে করেনা,জ্বীণে করায়।বান্দা ইবাদত করিতে করিতে এমন দরজা হাছিল করিতে পারে যখন আল্লাহ বলেন,আমি তাহার জবান হইয়া যাই,যেই জবানে সে কথা বলে।আমি তাহার কান হইয়া যাই,যেই কানে সে শুনে।আমি তাহার চক্ষু হইয়া যাই,যেই চোখে সে দেখে।আমি তাহার হাত হইয়া যাই,যেই হাতে সে ধরে।আমি তাহার পা হইয়া যাই যেই পায়ে সে চলে।বান্দা যখন আল্লাহকে স্মরন করে,আল্লাহও তাহাকে স্মরন করেন এমনকি নিকটবর্তী ফেরেশ্তাদের নিকট তাহার আলোচনা করেন এবং ফখর করেন।আল্লাহর সাথে বান্দার এক খাছ সম্পর্ক পয়দা হয়,মহব্বত সৃস্টি হয়।বান্দা আশেক,আল্লাহ মাশুক হইয়া যান।এশকে এলাহীতে কি এক অপার্থিব আনন্দ,তাহা একমাত্র আশেক ছাড়া আর কেহ বুঝিতে সক্ষম নহে।তাহারা যে দৌলত আর শান্তির অধিকারী হইয়া যান,তাহার খবর যদি দুনিয়ার রাজা বাদশাহদের জানা থাকিত তবে লড়াই করিয়া হইলেও কাড়িয়া লইত।বিজ্ঞ সাধকগন বলিয়া থাকেনঃ قلوب المؤمنين عرش الله
অর্থাৎ মুমিনের অন্তঃকরন আল্লাহর আরশ তুল্য।ফারসী কবি ইহাকে এইরুপে বর্ননা করিয়াছেন,যাহার অর্থ হলঃ
জমিন ও আসমানে কোথাও আমার সংকুলান হয়না।কিন্তু মুমিনের অন্তঃকরনে আমার সংকুলান হয়।পানির পাত্র ছোট সত্তেও বিরাট চাদের প্রতিবিম্ব যেরূপ উহাতে প্রতিফলিত হয় তদ্রুপ আল্লাহ্ তা'আলার তাজাল্লির প্রকাশ এবং বিকাশের স্থল হইল ঈমানদারদের হৃদয় দর্পন।