পর্ব-১ ; Click This Link
পর্ব-২ ; Click This Link
পর্ব-৩ ; Click This Link
পর্ব-৪ ; Click This Link
পর্ব-৫ ; Click This Link
১৭.৭ স্বোপার্জিত স্বাধীনতা
[সূত্রঃ onushilon.org
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সড়কদ্বীপে অবস্থিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা'র স্মারক ভাস্কর্য।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চের রাত প্রায় ১২টার পর থেকে নিরস্ত্র বাঙালির উপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময় সাধারণ মানুষ এবং বাঙালি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রক্তক্ষয়ী এই স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে এই ভাস্কর্যটি স্থাপিত হয়েছে। ভাস্কর্যটি মাটি থেকে ১৩ ফুট উচ্চ, ৮ ফুট ৪ ইঞ্চি প্রস্থ এবং ১২ ফুট ৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য একটি বেদীর উপরে স্থাপিত হয়েছে।
এই ভাস্কর্যের গা-জুড়ে রয়েছে একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদারদের অত্যাচাররে কয়েকটি খণ্ডচিত্র। বেদির ওপর মূল ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। ওপরে বামে আছে মুক্তিযোদ্ধা কৃষক আর ডানে অস্ত্র হাতে দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা। মাঝখানে অস্ত্র হাতে নারী ও পুরুষ যোদ্ধারা উড়িয়েছে বিজয় নিশান। এ ভাস্কর্য বেদির বাম পাশে আছে ছাত্র-জনতার ওপর অত্যাচারের নির্মম চেহারা।
এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন শামীম শিকদার। ভাস্কর্য কর্মে সহায়তা করেন হিমাংশু রায় ও আনোয়ার চৌধুরী। ভাস্কর্যটি নির্মাণে সিমেন্ট, বালু, রড, পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। এর নির্মাণ ব্যয়ে সহায়তা করেন তকদীর হোসেন জসীম। ভাস্কর শামীম শিকদারও ব্যক্তিগতভাবে স্বোপার্জিত স্বাধীনতার নির্মাণে প্রয়োজনীয় অর্থ যোগান দেন। তবে নির্মাণ সামগ্রীর কিছু উপকরণ সরবরাহ করেছিলেন ঠিকাদার ফিরোজ।
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ তারিখে, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক এ ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষিকা অধ্যাপিকা শামীম সিকদার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ জাতির সকল আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব গৌরবোজ্জ্বল অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যটি শিল্পী এ বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎসর্গ করেছেন।
১৭.৮ চেতনা '৭১
'মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য যা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত। ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০০৯ সালের ২৬ মার্চ মিনি অডিটোরিয়ামের পশ্চিম পাশে চেতনা ’৭১ নামে একটি অস্থায়ী ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। অস্থায়ী ভাস্কর্যটি স্থায়ী ভাস্কর্যে পুনঃস্থাপনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠন করা হয় “ভাস্কর্য পুনঃস্থাপন কমিটি”। পরবর্তীতে স্থায়ী ভাস্কর্য নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়, আর তারই প্রতিফলিত রূপ চেতনা '৭১' ।
শিল্পীঃ মোবারক হোসেন নৃপাল।
১৭.৯ অদম্য বাংলা
আধুনিক দৃষ্টিনন্দন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ ফুট উচ্চতার মুক্তিযুদ্ধের এ ভাস্কর্যটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। ভাস্কর্যটির মূল অংশে স্থাপিত হয়েছে একজন নারীসহ বলিষ্ঠ ও তেজোদীপ্ত চার মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি, যা বাঙালি জাতির শৌর্য-বীর্যের মূর্ত প্রতীক। ভাস্কর্যটি মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাকামী মানুষের তথা নারী-পুরুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের সম্মিলিত ভূমিকার প্রতিচ্ছবি হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। বেদির চারদিকের ম্যুরালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতি, বধ্যভূমির বর্বরতা ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের চিত্র পোড়া মাটির ফলকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
স্থপতি গোপাল চন্দ্র পাল শৈল্পিক দক্ষতায় মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্যপূর্ণ দিক সমূহ ফুটিয়ে তুলেছেন এ ভাস্কর্যে।
১৭.১০ মোদের গরব
মোদের গরব বা আমাদের গর্ব হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাংলা একাডেমী ভবনের সামনে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানানো হয়। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদদের সম্মানে এই ভাস্কর্যটি তৈরী করা হয়। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সফলতার কারণ হিসেবে ভাষা আন্দোলনকে স্মরণ করা হয় সে হিসেবে এটিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশীদার।
ভাস্কর ছিলেনঃ অখিল পাল।
তথ্যসূত্রঃ গুগল, ফেসবুক, জাতীয় পত্রিকা, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া।
(চলবে....)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৬