

আমি তখন খুব ছোট। আমার জন্ম ১৯৯৪ তে। আর আমি বলছি ১৯৯৯ সালের কথা। আমার আব্বুর সরকারি চাকরি করেন। তখন পোস্টিং ছিলো ঢাকার চকবাজারে। আমি বিকালে খেলাধুলা করছিলাম। বাসায় ফিরার সময় নাকে ভেসে আসলো একটি সুঘ্রাণ। এটা ছিলো ইলিশ মাছ ভাজার ঘ্রাণ। আমি তো মহা খুসি। আজ ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খাবো। পরে বাসায় গিয়ে দেখি আমাদের বাসায় ইলিশ মাছ ভাঝি হয় নি। ইলিশ মাছ ভাজি হয়েছে দুই থেকে তিন বাড়ি পর। সে সময় ফুলকপি দিয়ে শৈল মাছ, গুড়ি কচু দিয়ে বাইলা মাছ, চিংড়ি মাছের ভূলা, কৈ মাছের ভূনা, সব কিছু ছিলো সুস্বাধু।
আমার দাদা ছিলেন একজন কৃষক। আমার আব্বু আমাদের সাথে গল্প করতেন। তিনি আমাদের ভাটেরচর নদী তে গোছল করতেন।** মাছ ও ধরতেন। পানি খুব পরিষ্কার ছিলো। আব্বু তার বন্ধুদের সাথে সাতারে প্রতিযোগিতা করতেন।
যাদের বাড়ি কুমিল্লা, লক্ষীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম তারা হয়তো বা চিনবেন। আমি মেঘনা ও দাউদকান্দি ব্রীজ এর মাঝখানের উপজেলা: গজারিয়া উপজেলা নিয়ে কথা বলছি। ২০০৫ পযর্ন্ত আমাদের উপজেলা তে কোন প্রকার দূষন ছিলো না। আমাদের উপজেলাতে কল কারখানা হাবার পর থেকে নদী, পরিবেশ, বাতাস সব দূষিত হচ্ছে। কল কারখানার পচা পানি নদীতে মিশতাছে। কল কারখানার কালো ধোয়া বাতাশ কে দূষিত করছে। এখন আমাদের ভাটেরচর নদীতে মাছ পাওয়া যায় না। নদীর মাছ আর চাষের মাছ এ স্বাদের পার্থক্য শুধু মুরব্বিরা ধরতে পারবেন। আর আগের ইলিশ মাছের স্বাদ আর এখনকার ইলিশ মাছের স্বাদ এর পাথক্য মুরব্বিরা ধরতে পারবেন।
কল কারখানা হবার পর আমাদের এলাকায় উন্নতি হয়েছে। বেকারত্ব দূর হয়েছে। কল কারখানা এর স্টাফ ও অফিসার এর জন্য ঢাকা শহরের মত আমাদের উপজেলাতেও বাসা ভাড়া চলে। এদের কে কেন্দ্র করে আমাদের এখানে বাজার, মার্কেট ইত্যাদি হয়েছে। টাকার স্রোত কম হচ্ছে না। কিন্তু টাকার জন্য তো পরিবেশ কে ধ্বংস করতে পারি না।
নাসার এক প্রান্তন বিজ্ঞানী বলেছেন “আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছি, অন্য গ্রহে প্রাণ আছে কিনা সেটা জানার জন্য। আর আমরা কোটি কোটি টাকা খরচ করছি পৃথিবীকে ধ্বংস করার জন্য।”
আর আমাদের গজারিয়া উপজেলায় ভবেরচর ইউনিয়ন অপরিকল্পিত নগরায়ন হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট ও পয়ঃনিষ্কাষন এর কথা ভাবিয়া যদি সবাই বিল্ডিং বানাতো তাহলে খুব ভালো হতো। আর নগরায়ন এর ফলে গৃহস্থলি ময়লা কই ফালাবো নিয়ে দুঃচিন্তায় থাকতে হয়।
ঢাকা চট্টগ্রামের রাস্তার পাশে কিছু কিছু স্থান ময়লার ভাগার হয়ে গেছে। বজ্য ব্যাবস্থপনা নিয়ে যদি সরকার যদি কিছু ভাবতো তাহল ভালো হতো। আর পরিবেশ অধিদপ্তর কি করে? আমি বুঝি না। ওরা নিয়মিত অডিট করলে গজারিয়াতে এত পরিবেশ দূষণ হতো না।


সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



