বর্তমানে এই ইন্টারনেট এর যুগে কেউ আর চিঠি লেখে না। মানুষ আর আগের মত পোস্ট অফিসে যায় না। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পযর্ন্ত আমি প্রচুর আমদের পোস্ট অফিসে গেছি। আমি আগে সরকারি চাকরির জন্য এপ্লাই করতাম। আবেদন পত্র পোস্ট অফিস/ডাক যোগে পাঠানো লাগতো। এক দিন দুই তিন এভাবে নিয়মিত যেতে যেতে আমাদের পোস্ট মাষ্টারের সাথে সুসম্পর্ক হয়।
উনি আমাদের পোস্ট মাষ্টার, ভবেরচর পোস্ট অফিস, গজারিয়া, মুন্সিগজ্ঞ। তিনি ডাক বিভাগের অভিবাগীয় স্টাফ। তিনি বেতন পান না। তাকে উৎসাহ ভাতা হিসেবে মনে হয় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা দেয়া হয়। যতই ঝড় হোক, যতই তুফান হওক, রৌদ্র বৃষ্টি যা হউক তাকে অফিস কামাই করতে দেখি নাই। কলেজ না থাকলে আমি পোস্ট মাষ্টারের সাথে সময় কাটাতাম। বেশীর ভাগ সময়ে অফিসিয়াল চিঠি, কোর্ট এর চিঠি, তালাক এর চিঠি লেনদেন হতো।
এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা আসলে তার ডিউটি বেড়ে যেতো। কারন ২০১৯ সাল পযর্ন্ত সরকার পাবলিক পরীক্ষার উত্তর পত্র পোস্ট অফিস মারফত পরিবহন করতো। আপনার আমার এসএসসি, এইচ এস সি, পরীক্ষার উত্তর পত্র কোন না কোন পোস্ট মাষ্টর/ ডাক পিয়ন বহন করেছেন।
তার শরীল খুব টাইট। তাকে অসুস্থ হতে দেখি নাই। আপনার আমার হাই প্রেসার, ডায়েবেটিস আছে। কিন্তু আমাদের এই পোস্ট মাষ্টারের কোন প্রকার অসুখ নাই। তিনি ধান লাগান, তিনি ক্ষেতে কাজ করতে পারেন। ৪০ কেজি বস্তা নিয়ে অনায়েসে হাটতে পারে।
পোস্ট অফিসে দুই ধরনের স্টাফ আছে। এক হচ্ছে বিভাগীয়। যারা সম্পন্ন সরকারি। তারা সরকারি বেতন, বোনাস, পেনসান পাবেন। আর অবিভাগীয়রা শুধু মাত্র ১২০০ টাকা পান। আর কোন টাকা পান না। এমনকি পেনশানও পান না। এই ডিভাইডেট ইংরেজ আমল করে গেছলো। তখন সাদা চামড়া (মানে ইংরেজরা) থাকতো বিভাগীয় পদে। আর ইন্ডিয়ানরা থাকতো অবিভাগীয় পদে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও এই নিয়ম পাল্টায় নাই।
বিসিএস থেকে ডাক বিভাগে যে পদ থেকে শুরু সেটা হচ্ছে ডিপিএমজি।
এখনো পোস্ট অফিসে রেজি: জিইপি, সাধারন ডাকে চিঠি পাঠানো হয়। আর কোন পন্য পাঠাতে হলে রেজিষ্টার্ড পার্সেল সার্ভিস আছে। আর টাকা পাঠানোর জনা মানি অর্ডার আছে। ডাক বিভাগে আপনি সঞ্চয় করতে পারবেন। তারা অধিক মুনাফা দেয়।
এখন কেউ চিঠি লেখে না। কিন্তু অনলাইনে কেউ না কেউ কোন না কোন পন্য অর্ডার করে। এখন পোস্ট অফিস কে উচিৎ ই কমার্স মার্কেট দখল করা। রকমারি কিন্তু ডাকযোগে বই পাঠায়।
চিত্র: কর্মব্যাস্ত পোস্ট মাষ্টার।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:২০