কথায় আছে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। বাঙ্গালীরা নিজেদের বড়ই চতুর ও বুদ্ধিমান ভাবে। অবশ্যই বাঙ্গালীরা বুদ্ধিমান। তবে তাদের বুদ্ধি খোলে সব কিছু হারাবার পরে। চোর তাদের সর্বস্ব চুরি করে পালাবার পর তার চেতনা আসে আর অনুভব করে তার বুদ্ধি বেড়েছে। যদিও তখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া তার আর কিছুই করার থাকেনা।
আর আমাদের এই দূর্বলাতার সুযোগে আমাদেরই নাকের ডগায় অনেক নামী দামী, দেশী বিদেশী চোর আমাদের সব কিছু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে । অথচ বারে বারে এমন ঘটনার পূণরাবৃত্তি ঘটলেও আমাদের ঘুম ভাঙ্গেনা, আর এই সুযোগে যুবক, ইউনিপে২ইউ, ডেস্টিনি, ডোল্যান্স এর মতো শতাধিক চোর আমাদের দেশের হাজারো জনতাকে পথে বসিয়ে যখন হায়নার হাসি হাসে তখনই কেবল আমাদের ঘুম ভাঙ্গে; সরকারেরও টনক নড়ে। তাদের শত কোটি টকার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।অথচ তাদের প্রতারণার কার্যকলাপ প্রকাশ্য দিবালোকে হলেও তখন কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়না। তাদের অবৈধ কাজের কোন কৈফিয়ত চাওয়া হয়না। যার ফলশ্রুতিতে পথে বেসে হাজার লক্ষ সাধারণ মানুষ। চুরি যায় তাদের কষ্টে অর্জিত আমানত।
সম্প্রতি তেমনি আরও একটি প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে কিছু ডেভেলপার কোম্পানি। কক্সবাজার জেলায় বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট ডেভলাপমেন্ট কোম্পানি কর্তৃক হোটেল কক্ষ, স্টুডিও এ্যাপার্টমেন্ট স্বল্প মেয়াদে যৌথ মালিকানা প্রদানের নামে লোভনীয় প্রস্তাবের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছ থেকে বিভ্রান্তিমূলক উপায়ে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানি স্বল্পমূল্যে হোটেল কক্ষ, নির্মিতব্য রিসোর্টসের মালিকানা সাফকবলায় বিক্রয়ের নামে প্রতারণা করে চলছে। তেমনি একটি নির্মিতব্য পাঁচ তারকা হোটেলের নাম "ওয়েসিস হোটেল এ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড"। সম্প্রতি ওয়েসিস হোটেল এ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড এর একটি বিজ্ঞাপন বহুল প্রচারিত পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। পত্রিকায় চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার করে আগে আসলে আগে পাবেন-ভিত্তিতে অনেকে ঢাকা-চট্টগ্রামে বসে টাকা সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজারে জমির বা রিসোর্টস নির্মাণ করার কোন স্থান নির্ধারণ না করেও বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে নকশা অনুসারে টাকা হাতাতে মাঠে নেমেছে ঐ চক্র।মাত্র এক লাখ টাকা অগ্রিম হওয়ায় অনেকে ঝুঁকে পড়ছে ওইসব এ্যাপার্টমেন্ট কর্তৃপক্ষের দিকে।
ওয়েসিস হোটেল এ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড ৩৮ হাজার ৯৮০ জন শেয়ার হোল্ডার থেকে ৫৫৭ কোটি টাকা হাতানোর টার্গেট নিয়ে তারা সাবকবলায় ফ্লাট বিক্রি করতে শুরু করেছে। ঐ পরিমাণ শেয়ার বর্তমানে এক লাখ টাকা দিয়ে মালিকানা গ্রহণ করা যাচ্ছে, তবে যে কোন সময় শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিও পেতে পারে বলে জানানো হচ্ছে ক্রেতাদের। আগামী ২০১৫সালের মধ্যে মালিকানা বুঝিয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের টার্গেট সম্পন্ন করতে গ্রাহকদের নিকট থেকে টাকা সংগ্রহের কাজ চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। এখন টাকা দিলে ৩ বছর পর প্রত্যেক শেয়ার হোল্ডার ওই হোটেলে প্রতিবছর অন্তত তিন দিন ফ্রি অবস্থান করতে পারবে, নতুবা ঐ তিন দিনের ভাড়া পাবে নির্ধারিত গ্রাহক।
পাঁচ তারকা মানের এই রিসোর্টস নির্মাণ হতে আরও ৩ বছর সময়ের দরকার বলে জানা গেছে। অথচ রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট ও ম্যানেজমেন্ট আইন-২০১০-এর আলোকে গঠিত কর্তৃপক্ষ হতে ওয়েসিস হোটেল এ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড কোনরূপ নিবন্ধন গ্রহণ করেনি। কক্সবাজার জেলায় এ প্রতিষ্ঠানের কোন অফিস নেই। হোটেলের জন্য নির্ধারিত স্থানের ভূমির মালিকানা বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন নেয়া হয়নি। তাই টাকা সংগ্রহ করা হলেও জমি নির্ধারিত না হওয়ায় কাউকে সাবকবলায় রেজিষ্ট্রি দেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে এখনই কার্যকারী ব্যবস্থা না নিলে চোর সাধারণ জনগণের সর্বস্ব চুরি করে পালিয়ে যাবে তখন হা পিত্যেস করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকবেনা। অবশ্য জনসাধারণের কাছ থেকে বিভ্রান্তিমূলক উপায়ে অর্থ সংগ্রহকারী ‘ওয়েসিস হোটেল এ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড’ নামের প্রতিষ্ঠানে লেনদেন না করার জন্য সতর্কীকরণ জারি করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক।
collected

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


