somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুর মেধা বিকাশের কথা

১৪ ই মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার কাছে যে মায়েরা তাদের সন্তানদের দেখাতে আনেন, তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই একটা সাধারণ জিজ্ঞাসা থাকে-তার শিশু ঠিক মত বেড়ে উঠছে তো ? অর্থাৎ শিশুটির ওজন সম্বন্ধে তারা বেশী জানতে চায়। শিশুটি একদমই খাওয়া-দাওয়া করছে না, ফলে বেড়ে উঠছে না, এ জন্যেই মায়েরা উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেন। কিন্তু কখনো কোন মা তার শিশুর বুদ্ধিমত্তা ও মেধার বিকাশ হচ্ছে কি না এ নিয়ে জানতে চেয়েছেন- তা মনে করা সত্যই কঠিন। শিশু পরিচর্যার ক্ষেত্রে আমাদের দেশের এ এক প্রধান সমস্যা যে, অভিভাবকরা তাদের সন্তানের বৃদ্ধির জন্যে, তার গায়ে গতরে বেড়ে উঠার জন্য, যতটা-না সচেতন, এবং এ সচেতনতা অনেক সময়ই অতি বাড়াবাড়ি ও শিশুর সঙ্গে বিরুদ্ধাচরণে গিয়ে ঠেকে, ততোধিক কম সচেতন শিশুর মানসিক বিকাশের প্রতি, অথচ শিশুর বুদ্ধিসুদ্ধি ও মেধাশক্তি বিকাশের বিষয়গুলি বেশী প্রাধান্যপাবার প্রয়োজন ছিল।

মস্তিস্কের বিকাশ ও শিশুর মস্তিস্কের ক্ষমতা
মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী, কারণ তার রয়েছে উন্নত একটা মস্তিষ্ক। একটা সময় ছিল, যখন প্রাণী জগতের পুরো বুদ্ধিমত্তাটাই ছিল জিন্ বা ডিএনএ-র মধ্যে। ঐ বুদ্ধিমত্তাটা আসলে একটা নীল নক্শা ছাড়া আর কিছুই ছিল না, কারণ ওখানে যা-কিছুই ধারণ করা থাকত, তার কোনো পরিবর্তন-পরিবর্ধন, নতুন কিছু সংযোজন কিংবা চিন্তা-ভাবনাÑবিশ্লেষণও করা যেত না। প্রায় দশ কোটি বছর আগে, প্রথম বারের মত প্রাণীর মস্তিষ্কের বুদ্ধিমত্তা ডিএনএ-র বুদ্ধিমত্তাকে অতিক্রম করে।
বাঘ-হরিণেরও রয়েছে বুদ্ধিমত্তা, যা-দিয়ে বাঘ হরিণটিকে আক্রমন করে আর হরিণটি পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। তেমনি বাবুইয়ের বাসা বোনার মধ্যে, মাকড়সার জাল বোনার মধ্যে, বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। একটি ক্ষুদ্র জীবানুও বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে, মানুষের দেহে তার বংশ বিস্তারের ফন্দি করে। কিন্তু মানুষ এ-পৃথিবীতে তার উন্নত মস্তিষ্কের জন্যে বুদ্ধিমত্তা-চিন্তাশক্তি-বিশ্লেষণমতা-মেধাপ্রয়োগ ও অন্তরজ্ঞান, এসব ক্ষেত্র সবার সেরা। প্রাণী জগতে বুদ্ধিমত্তার পরিমাপ নির্ধারণ করতে গিয়ে দেখা গেছে মস্তিষ্কের ওজন সমস্ত শরীরের ওজনের অনুপাতে কি রকম বড় বা ছোট তা-ই প্রধান বিষয়। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের ওজন দেড় কেজি থেকে একটু কম। শরীরের তুলনায় মানুষের মস্তিষ্কের এই ওজন প্রাণী জগতে সবচেয়ে বেশী। এর পর রয়েছে অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর অবস্থান যেমনÑডলফিন ও তিমি মাছ (মাছ হিসেবে গন্য হলেও আসলে তারা স্তন্যপায়ী প্রাণী)। মানুষের সবচেয়ে কাছাকাছি বুদ্ধিমান প্রাণী হচ্ছে ডলফিন ও পাখি। সমস্ত শরীরের তুলনায় মস্তিষ্কের ওজন সবচেয়ে কম সরীসৃপ ও মাছের। সার্কাসে আমরা বাঘ-ভাল্লুক-ডলফিন-তিমির খেলা দেখি। কারণ তাদের মস্তিষ্ক উন্নত। সহজেই তারা প্রশিণ গ্রহন করতে পারে। এবং বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে পারে। মাছ ও সরীসৃপকে এমন প্রশিণ দেয়া অসম্ভব। সাপের যে খেলা আমরা দেখি তা মোটেও বুদ্ধির নয়, ঝাঁপি খুললে সাপ ফণা তোলে, সাপুড়ের বাঁশি সাপ শুনতেই পায়না, হাত ও হাঁটুর নড়াচড়াকেই ল্য ভেবে সাপ এদিক-সেদিক মাথা নাড়ায়, আমরা ভাবি সাপ নাচছে।
মানুষের মস্তিষ্কের কোষের নাম হলো নিউরন। একটি মস্তিষ্কে এ নিউরনের সংখ্যা হচ্ছে এক হাজার কোটির মত। জন্মের পর এ সংখ্যা শরীরের অন্য কোষের মত আর বৃদ্ধি পায় না। কেবল একটি নিউরন আরেকটি নিউরনের সঙ্গে তারের মত একসন ও ডেনড্রাইড- এর মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করে। এই সংযোগকে বলা হয় সিনেপস্। প্রতিটি নিউরন গড়ে প্রায় পনেরশো নিউরনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মতা রাখে। । এই সংযোগ বা সিনাপস কম হবে না বেশী হবে তা নির্ভর করে শিশুকে উদ্বিপ্ত করার উপর অর্থাৎ শিশুকে বুদ্ধি বৃত্তির সহায়ক পদ্বতিতে পরিচর্য্যার উপর। জন্মের পর থেকেই এ সিনাপস হওয়া শুরু হয়। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত তা চলে। এর পর আর কোন সংযোগ হয় না। কাজেই পাঁচ বছর পর্যন্ত সময়টি শিশুর বুদ্ধি বিকাশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। এ সময়ে শিশুর সংগে আচরনই নির্ধারন করে শিশুটির মানসিক ও বুদ্ধিমত্বার ভবিষ্যত।

কোনো একটা তথ্যকে যদি আমরা কম্পিউটারের মত সরল ভাবে কেবল ‘হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’ দিয়ে প্রকাশ করি তাহলেও ১ হাজার কোটি নিউরনকে ১ হাজার দিয়ে গুন করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায়-১০ লক্ষ কোটি । অর্থাৎ ১০ লক্ষ কোটি তথ্য মস্তিষ্ক ধারণ করতে পারে। কিন্তু মস্তিষ্কের এই ১টি সিনেপস্-এ অসংখ্য তথ্য ধারণ করার মতা আছে। যা কম্পিউটারের ক্ষেত্রে কল্পনাও করা যায় না। যদি আমরা সাধারণ ‘হ্যাঁ-না’ দিয়ে সিনেপস্-এর মতা নির্ধারণ করি আর প্রতিটি নিউরনে ৩টি সিনেপস্ রয়েছে ধরে নেই তাহলেও সংখ্যার বিচারে এ ধারণ মতা যত বিট্ হবে তা এই সৃষ্টি জগতের মধ্যে যত অনু-পরমানু আছে তার সংখ্যার চাইতেও বেশী হবে। অথচ কেবল ৩ নয় এ সংখ্যা হতে পারে ১৫০০ এর মত। যা পূর্বেই বলা হয়েছে। মানব মস্তিষ্কের এই অচিন্তনীয় ধারণ ক্ষমতা নিয়ে প্রতিটি শিশু জন্ম গ্রহণ করে। সম্ভাবনার বিচারে প্রতিটি শিশুই এভাবে একই ক্ষমতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে। অর্থাৎ প্রতিটি শিশুরই রয়েছে এক অকল্পনীয় মেধা শক্তি ও বুদ্ধিমত্তা, যা-দিয়ে সে পৃথিবীতে এক অনন্য সাধারণ আবিষ্কারের ক্ষমতা রাখে।

মায়ের অসচেতনতা শিশুর মেধা বিকাশের অন্তরায় হতে পারে
শিশুর এই অসাধারন মতার কথা মায়েরা প্রায় ভুলেই বসে থাকেন? বুদ্ধিমান এ শিশুটিকে আমরা একটি আদরের পুতুল ভেবে বসে আছি। রুটিন মাফিক খাওয়ানো-গোসল-পোষাক-পরিচ্ছদ পরিবর্তন ইত্যাদির মাধ্যমেই মূলত আমরা তার পরিচর্যা করি। হ্যাঁ- একথা সত্যি যে আমরা শিশুটিকে অসম্ভব পছন্দ করি ও তার প্রকাশ ঘটাই আদরের মাধ্যমে। এ আদর প্রকাশের জন্য চুম্বন, শিশুর চোখের দিকে তাকিয়ে হাসা কিংবা তার সঙ্গে কথা বলার এক বিরাট গুরুত্ব রয়েছে তার মানসিক বিকাশের জন্য। যা এ লেখার শেষ অংশ পড়লে আরো বুঝা যাবে। কিন্তু যদি কেবল এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেই শিশুটিকে লালন পালন করি আর তার ওজন বাড়ছে কিনা তাতেই মনোনিবেশ করি এবং আরো ওজন বাড়ানোর জন্যে জোড় করে অত্যাচার করে কেবল খাইয়ে চলার এক প্রতিজ্ঞা করি, বোধ হয় সকল মা-ই এ প্রতিজ্ঞার বশ হয়ে আছেন, তাতে শিশু দুই কুলই হারাবে। কেবল মোটা তাজা শিশু, যে কিনা বুদ্ধিতে দুর্বল তাকে দিয়ে কাংখিত ব্যাক্তি ও সমাজ জীবন ঘটন সম্ভব নয়।





প্রাণীদের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রথমে যে বিষয়টি অনুধাবন করা হয়েছিল যা থেকে মানব মস্তিষ্কের সামর্থ ও অসামর্থ বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান প্রথম অর্জন করেছিল তা অত্যন্ত উত্তেজনাকর। একটা প্রাণীকে খুব সাদামাটা ভাবে রাখলে তার মধ্যে সমস্যা সমাধান ও বুদ্ধির বিকাশ তেমন ঘটে না। অথচ উত্তেজনা পূর্ণ আনন্দজনক ও নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা করতে হয় এমন পরিবেশে রাখলে দেখা গেছে যে সে ক্ষেত্রে প্রাণীর মস্তিষ্কের গুণগত মতা বৃদ্ধি পায়। ক্রমাগত ভাবে মস্তিষ্ক ব্যবহার করলে মস্তিষ্কের সিনাপস বৃদ্ধি হবার ফলে এ পরিবর্তন ঘটে। মানুষের ক্ষেত্রে ও ঠিক তেমনঠি। দেখা গেছে সাদামাটা ভাবে একটি শিশুর পরিচর্যা করলে তার নিউরনগুলোর সংযোগ সংখ্যা ঐ শিশুর চেয়ে অনেক কম হয়- যে শিশুকে আনন্দদায়ক, উত্তেজনাকর ও বুদ্ধিমতা বিকাশের বিভিন্ন উপায় উপকরণ ব্যবহার করে লালন পালন করা হয়েছে। পূর্বেই বলা হয়েছে শিশুর মস্তিষ্কের নিউরন সংখ্যা বয়স্কদের সমপরিমাণ। একটি শিশু তার মস্তিষ্কে যথগুলো নিউরন নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে তার সংখ্যা আর কখনো বৃদ্ধি পায় না, কেবল বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে সিনাপস’এর । আর এই সিনাপস যত বৃদ্ধি পাবে শিশুর চিন্তা, ভাবনা, বিশ্লেষণ, সমস্যা সমাধান, অন্তর দৃষ্টি, অন্তর জ্ঞান এক কথায় শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তা, মতা ততোই বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ সিনাপস’এর বৃদ্ধির সংখ্যাই শিশুটির মেধা, বুদ্ধিমত্তা, দতা ও কর্মমতার সঙ্গে সংযুক্ত। মানুষের যে পাঁচটি ইন্দ্রিয় রয়েছে- চু, কর্ণ, নাসিকা, জ্বিহবা ও ত্বক এই পাঁচটি ইন্দ্রিয় শক্তিই মস্তিষ্কের নিউরনের সাহায্যে প্রকাশিত ও বিকশিত হয়। এই ভিন্ন ভিন্ন ইন্দ্রিয়ের জন্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ের কাজ রয়েছে। আরো ব্যাপক ভাবে বললে মস্তিষ্কের এক একটা অংশ মানুষের এক একটি কাজ ও দতার যোগান দেয়। যেমন মস্তিষ্কের বাম গোলার্ধের এক একটি অংশ যুক্তি, চিন্তা, প্রয়োগ ও বিশ্লেষণ, ভাষা, নিয়ম, পদ্ধতি, গণিত, পরিমিতিবোধ এ বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করে। তেমনি মস্তিষ্কের ডান গোলার্ধে- কোন বস্তুকে জ্যামিতিক ও ত্রিমাত্রিক ভাবে বোঝার শক্তি, দার্শনিক চিন্তা, উপমা বা মতা সৃষ্টিতে কাজ করে। এই ভিন্ন ভিন্ন বিষয়গুলোর কথা বিশেষ করে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের কথা খেয়াল করে মা, বাবা, দাদা, দাদী, নানা, নানী যারাই শিশুর চারপাশে রয়েছে তারা তাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে শিশুকে উদ্দিপ্ত করলে, এই উদ্দীপনার ফলে নিত্য নতুন অভিজ্ঞতা ও আলোড়নের কারণে শিশুর মস্তিষ্কের বিশেষ বিশেষ স্থানে, বিশেষ বিশেষ কারণে, বিশেষ বিশেষ নিউরনগুলোর মধ্যে, বিশেষ বিশেষ ভাবে মতা বৃদ্ধিকারী, স্মৃতি ধারণকারী সিনাপসগুলো সংঘটিত হতে থাকে। শিশুকে এই উদ্দীপনা দেবার কাল মায়ের গর্ভ থেকে শুরু করে শিশু পাঁচ বছর পর্যন্ত, বিশেষ করে দুই বছর বয়স পর্যন্ত সময়টি বেশী গুরুত্বপূর্ন। এই দুই বছর বয়সের এক একটি সময়ে শিশুর ধারণ মতার এক একটি পর্যায়ে যদি তাকে ক্রমাগতভাবে ক্রমান্বয়ে নিত্য নতুন কৌশলে উদ্দীপ্ত করা হয় তাহলে শিশুর মস্তিষ্ক এই উদ্দীপনার ফলে সৃষ্ট মতাগুলোর সামর্থ মস্তিষ্কে ধারণ করে ভবিষ্যতের জন্যে প্রস্তুতি নিয়ে মেধা ও বুদ্ধিমত্তায় বিকশিত হয়ে বড় হতে পারে।
শিশুর পঞ্চ ইন্দ্রিয় উদ্দীপনার বিষয়টিকে হেলা ফেলা করা হলে কি হতে পারে এটা এখানে উল্লেখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফল জেনেই বুঝা যাবে। আমরা জানি পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে সবচেয়ে প্রণিধান যোগ্য ইন্দ্রিয় হল চোখ। শিশু এক জোড়া চোখ নিয়ে জন্মায়। এটা তার দেখার ইন্দ্রিয়। কিন্তু জন্ম গ্রহণের পরপরই চোখ থাকা সত্বেও “দেখা”টা শিখা হয়ে উঠেনা তার। তাই এই সময় তার চোখের দৃষ্টিতে এক ধরণের শূন্যতা থাকে, অর্থাৎ চোখ থাকলেও সে চোখকে দেখার কাজে ব্যবহার করতে শিখেনি তখনও। ধীরে ধীরে সে বিষয়টি রপ্ত করে। প্রকৃত পে মানুষ চোখ দিয়ে দেখে না, দেখে কিন্তু মস্তিষ্ক দিয়ে। মস্তিষ্কের যে অংশ দেখার কাজ করে তা থাকে পেছনের দিকে। জন্মের পর শিশুকে যদি একটা সময় পর্যন্ত যদি অন্ধকারে রাখা হয় , তারপর আলোতে আনলেও শিশূটি আর দেখতে পাবেনা, কারণ দেখার কাজে ব্যবহৃত না হতে পেরে মস্তিষ্কের উক্ত অংশ অন্য কাজে নিজেকে ব্যবহার করা শুরু করে দেবে। ফলে পরবর্তীতে আর যতই ইন্দন দেয়া হোক না কেন সেই ইন্দনে সে আর সাড়া দিবে না। এ পরীক্ষা থেকে সহজে বুঝা যায় যে শিশুর “দেখা”র শক্তি জাগাতে, রং এর অনুভতি জাগাতে, তার চোখ দুটোকে উদ্দীপ্ত করার কোন বিকল্প নেই। এ উদাহরন থেকে এটিও বুঝা গেল যে প্রতিটি দক্ষতা অর্জনের জন্য একটি নিদৃষ্ট সময় সীমা রয়েছে, যার অব্যবহারে সেই দতা অর্জন চীরদিনের জন্যই বিঘ্নিত হতে পারে, এবং ঠিক তেমনি তার অপব্যবহারে সেই দক্ষতা ত্রুটিময় হতে পারে।


শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে করনীয়


১. গর্ভকালীন সময়ে মাকে পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম প্রদান, নিরাপদ ও আনন্দময় পরিবেশের যোগান দেয়া।
২. আপনি যে শিশুকে ভালবাসেন তা তাকে আদর ও প্রকাশ্যে বার বার বলার মাধ্যমে বুঝাতে হবে, তার বিপরিতটি হলে শিশুর মস্তিস্কে তা বিরূপ হয়ে জমা হবে।
৩. শিশুটিকে নিয়ে আপনাদের গর্ব এবং সে পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ন সদস্য এ কথা তাকে সুযোগ এলেই বলতে হবে।
৪. শিশু কোন কিছুতে উৎসাহিত হলে তাকে সেই সুযোগ করে দিতে হবে, তার প্রসংসা করতে হবে।
৫. শিশুর কথা মনযোগ দিয়ে শুনতে হবে, যত বেশী সম্ভব তার সাথে কথা বলুন। যত বেশী এবং যত বারে বারে তা করা যাবে ততই ভাল।
৬. আপনার দৈনন্দিন কাজ গুলি করার সময়ও শিশুর সংগে কথা বলুন, পারলে খেলুন।
৭. দেখা, শোনা, ছোঁয়া,গন্ধ,স্বাদ ইত্যাদীর জন্য শিশুকে বিভিন্ন জিনিষ দিন, অর্থাৎ শিশুর পন্চ ইন্দ্রিয়ের মতা বারাবার ব্যাবস্থা করুন।
৮. অন্য শিশুদের সংগে মিশতে দিন, নিরাপদে একক ও দলীয় ভাবে খেলার ব্যাবস্থা করুন।
৯. দৈনন্দিন বিভিন কাজে শিশুকে অংশ গ্রহনের সুযোগ দিন ও তাকে উৎসাহিত করুন।
১০. প্রকৃতির বিভিন্ন জিনিষ ও মানুষের সাথে শিশুর পরিচয় করিয়ে দিন।


যে সমস্ত আচরন শিশুর ইতিবাচক মানসিক বিকাশের অন্তরায়

১. শিশুর চাহিদাকে উপেক্ষা করা।
২. শিশুকে মূল্যায়ন না করা, কিংবা অবহেলা করা।
৩. শিশুর সামনে ঝগড়া করা, অশোভন আচরন করা, অশোভন বাক্য প্রয়োগ করা।
৪. শারিরীক বা মানসিক শাস্তি দেয়া।
৫. খেলার উপযুক্ত পরিবেশ না দেওয়া।
৬. বিশ্বাস ভংগ করা, মিথ্যা বলা, ফঁকি দেয়া, ছলনাকরা, প্রতারনা করা।
৭. মানসিক চাপ সৃস্টি করা।
৮. বয়সের অনুপযোগী কাজ দেয়া, ভার দেয়া।
৯. ভাল কাজের জন্য প্রশংসা না করা, সব সময় তিরস্কার করা, নিন্দা করা।


৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×